অধ্যায় ৪ : রাজা হেরোদের রাজত্বে
পার্থিয়ানরা বিজয় পেয়ে যাওয়ার পর হেরোদ রোমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন, তার ইচ্ছে মার্ক অ্যান্টনির সাথে দেখা করবেন।
মার্ক অ্যান্টনির আসল নাম মার্কাস অ্যান্টনিয়াস, তবে আমরা তাকে মার্ক অ্যান্টনি বা অ্যান্থনি নামেই চিনি বেশি। তিনি ছিলেন জুলিয়াস সিজারের কড়া সমর্থক, সেটি পাঠক ইতোমধ্যেই জেনে গিয়েছেন। গৃহযুদ্ধের সময় সিজার এই মার্ক অ্যান্টনিকে ইতালির প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন, যেন তিনি নিজে এ সুযোগে ঠাণ্ডা মাথায় গ্রিস, উত্তর আফ্রিকা আর স্পেন জুড়ে নিজের রাজনৈতিক শত্রুদের নির্মূল করতে পারেন। কিন্তু খ্রিস্টপূর্ব ৪৪ সালে জুলিয়াস সিজার নিহত হলেন। তখন অ্যান্টনি আরও দুজনের সাথে সম্মিলিতভাবে এ হত্যার প্রতিশোধ নিতে উঠে পড়ে লাগেন। এ দুজনের একজন ছিলেন সিজারের জেনারেল মার্কাস লেপিডাস, আর অন্যজন সিজারের পালিত পুত্র অক্টাভিয়ান। তারা দুই বছর পর ফিলিপির যুদ্ধে এ হত্যার বদলা নেন। এরপর তারা নিজেদের মাঝে সরকারব্যবস্থা ভাগাভাগি করে নিলেন। অ্যান্টনি দেখবেন রোমের পুব দিকের প্রদেশগুলো, যার মাঝে অধীনস্ত রাজ্য মিসরও আছে; মিসর তখন শাসন করছেন রানী সপ্তম ক্লিওপেট্রা। অ্যান্টনির কাঁধে এসে পড়ে পারস্যের পার্থিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ভারও।
কিন্তু ক্ষমতার বণ্টনের কিছুদিন পরেই এই তিন মহারথীর মাঝে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৪০ সালে অক্টাভিয়ানের সাথে অ্যান্টনির গৃহযুদ্ধ প্রায় লাগবে লাগবে অবস্থা; কিন্তু অ্যান্টনি অক্টাভিয়ানের বোন অক্টাভিয়াকে বিয়ে করে ফেললেন, তাই গৃহযুদ্ধ এড়ানো গেল। কিন্তু সমস্যা হলো তখনই, যখন অ্যান্টনি একই সাথে রানী ক্লিওপেট্রার সাথেও প্রেম চালিয়ে যেতে থাকলেন। ক্লিওপেট্রার গর্ভে অ্যান্টনির তিন সন্তান জন্ম নেয়। ফলে অ্যান্টনির সাথে অক্টাভিয়ানের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়ে যায়।
খ্রিস্টপূর্ব ৩৬ সালে লেপিডাসকে এই তিনজনের জোট থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার তিন বছর পর অ্যান্টনি ও অক্টাভিয়ানের দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ নেয়। টানা দুবছর ধরে চলে আসা এ দ্বন্দ্ব একটা পর্যায়ে গৃহযুদ্ধে রূপ নিল।
অক্টাভিয়ানের নির্দেশে রোমান সিনেট যুদ্ধ ঘোষণা করলো রানী ক্লিওপেট্রার বিরুদ্ধে, আর অ্যান্টনিকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যায়িত করা হলো। সে বছর অ্যাক্টিয়ামের যুদ্ধে অক্টাভিয়ানের বাহিনী অ্যান্টনিকে পরাজিত করে। ক্লিওপেট্রার সাথে তিনি মিসরে পালিয়ে যান।
সেখানেও অক্টাভিয়া আক্রমণ চালালেন। মিসরের আলেক্সান্দ্রিয়া অবরোধ করলেন তিনি। আপাতদৃষ্টিতে মনে হলো, জিততে চলেছেন অ্যান্টনিই। কিন্তু বিধিবাম, অ্যান্টনিকে পরাজয় বরণ করতে হলো। আত্মহত্যা করলেন অ্যান্টনি। যুদ্ধের নয় দিন পর রানী ক্লিওপেট্রাও নিজের প্রাণ কেড়ে নিলেন। সিজার ও ক্লিওপেট্রার ছেলে সিজারিয়ন, এবং অ্যান্টনির বড় ছেলে অ্যান্টাইলাস- দুজনকেই মৃত্যুদণ্ড দেন অক্টাভিয়ান।
অ্যান্টনি মারা গেলে পরে অক্টাভিয়ান রোমান সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি বনে যান। খ্রিস্টপূর্ব ২৭ সালে তিনি অগাস্টাস উপাধি নিয়ে নিজেকে প্রথম রোমান সম্রাট হিসেবে ঘোষণা দেন।
এবার ফিরে আসি হেরোদের কথায়। মার্ক অ্যান্টনি বেঁচে থাকতে তিনি প্রভাব খাটিয়ে হেরোদকে জুদাহ রাজ্যের রাজা বানিয়ে দেন। এটা করার কারণ ছিল, এতে পার্থিয়ানদের সমর্থিত শাসক অ্যান্টিগোনাসকে সরানো যেতে পারে। রোমান বাহিনী নিয়ে এসে হেরোদ জুদাহ আক্রমণ করেন, পাঁচ মাস টানা অবরোধ করে রাখেন তিনি জেরুজালেমকে।
অবশেষে খ্রিস্টপূর্ব ৩৭ সালে জেরুজালেমের পতন হয়। হেরোদ রাজা হলেন। রাজা হবার পর তিনি সামারিয়ার সাথে জুদাহ রাজ্য যোগ করে রাজ্যের আকার বড় করলেন। তিনি বয়স্ক ইহুদীদের কাউন্সিল বাতিল করে আগেকার হেলেনিজম মানা শাসকদের মতো পরামর্শক কাউন্সিল তৈরি করলেন। তার মনে ছিল, সানহেদিন তাকে সমর্থন না দিয়ে অ্যান্টিগোনাসকে দিয়েছিল, এ কারণে হেরোদ সানহেদ্রিনের একাত্তর সদস্যের মধ্যে পঁয়তাল্লিশ জনকেই হত্যা করেন। এর মাঝে হাসমোনীয় সাম্রাজ্যের সমর্থক অনেক সাদুকিই ছিলেন। তবে তিনি মহান সানহেদ্রিনের দুজন গুরুত্বপূর্ণ ফারিসি নেতাকে ছেড়ে দিলেন। তারা ছিলেন হিল্লেল এবং শাম্মাই। লেখালেখি ও শিক্ষাকর্ম চালিয়ে গেলেন তারা। এই দুজনের লেখা আজও ইহুদীদের মাঝে পবিত্র।
হেরোদের জন্ম ইদুমি পরিবারে। এ পরিবার থেকে ইমাম হওয়া যাবে না। ইদুমিরা হাসমোনীয়দের হাতে জোরপূর্বক ইহুদী ধর্ম গ্রহণ করেছিল বহু আগে। যেহেতু ইমাম হবার যোগ্যতা তার নেই, তাই হেরোদ এ দায়িত্ব অর্পণ করলেন হানানেল নামের এক ব্যবিলনীয় ইহুদীর হাতে। তিনি নাকি সাদুক বংশের মানুষ।
হাসমোনীয় রাজা দ্বিতীয় হিরক্যানাসের কন্যা আলেক্সান্দ্রার কথা মনে আছে? হেরোদ বিয়ে করেন তারই মেয়ে পরমা সুন্দরী রাজকন্যা মারিয়াম্মিকে, হিব্রুতে তার নাম মিরিয়াম (২75), বা আরবিতে মারিয়াম (ইনি যীশুর মা নন)। তাদের পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়। বেঁচে ছিল দুই ছেলে আর দুই মেয়ে। পঞ্চম জন ছিল ছেলে সন্তান। হেরোদ যখন তার ছেলেদেরকে রোমে পাঠান পড়াশোনা করতে, তখন এই পঞ্চম সন্তান পানিতে ডুবে কম বয়সে মারা যায়।
ইতিহাসবিদ জোসেফাস জানান, মিরিয়াম এত করে চাইতেন যে তার চাপে পড়ে মিরিয়ামের ভাই অ্যারিস্টোবুলাসকে হেরোদ প্রধান ইমাম বানিয়ে দেন হানানেলকে সরিয়ে। কিন্তু অ্যারিস্টোবুলাসের বয়স তখন আঠারোও হয়নি। এক বছরের মাথাতেই সে পানিতে ডুবে মারা যায়, এবং হানানেল আবার এ পদে ফিরে আসেন। মিরিয়ামের মা আলেক্সান্দ্রা এ মৃত্যুর জন্য হেরোদকে দায়ী করতে থাকেন। এমনকি রানী ক্লিওপেট্রার কাছে চিঠি লিখেন, তিনি যেন হেরোদকে শাস্তি দেন এজন্য।
ক্লিওপেট্রা মার্ক অ্যান্টনিকে অনুরোধ করলেন হেরোদকে শাস্তি দিতে। অ্যান্টনি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়ার জন্য ডাকলেন হেরোদকে। হেরোদ চাচা ইউসুফ বা জোসেফের কাছে রেখে গেলেন তার সুন্দরী স্ত্রী মিরিয়ামকে। যাওয়ার আগে বলে গেলেন, যদি অ্যান্টনি হেরোদকে মেরে ফেলেন, তাহলে চাচা যেন মিরিয়ামকে মেরে ফেলেন। কারণ এত সুন্দরী এ বউকে তিনি মৃত্যুর পর আরেকজনের স্ত্রী হতে দেবেন না। চাচা জোসেফ রানীর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন, আর এক পর্যায়ে হেরোদের এ কথাটা তাকে বলে দেন, কথাটা জানাজানিও হয়ে যায়।
খুব শীঘ্রই গুজব রটে যায়, হেরোদকে নাকি মার্ক অ্যান্টনি মেরে ফেলেছেন। আলেক্সান্দ্রা তখন জোসেফকে অনুরোধ করলেন, তিনি যেন তাকে আর মিরিয়ামকে রোমান নিরাপত্তায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ওদিকে হেরোদ মার্ক অ্যান্টনির কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে ফিরে এলেন। এসে জানতে পারলেন আলেক্সান্দ্রার পরিকল্পনার কথা। হেরোদের মা আর বোন সালোমি সব বলে দিলেন তাকে।
সালোমি হেরোদের কাছে অভিযোগ করলেন, মিরিয়াম নাকি জোসেফের সাথে ব্যভিচার করেছেন, কিন্তু হেরোদ স্ত্রীর সাথে আলাপের পর এ অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন।
হেরোদের স্ত্রী মিরিয়াম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আসলেই কি হেরোদ এমন আদেশ দিয়ে গিয়েছিলেন যে, তিনি মারা গেলে মিরিয়ামকেও যেন মেরে ফেলা হয়? এটা শুনে হেরোদের মাথায় রক্ত উঠে গেল। তিনি ভাবলেন, এ গোপন কথা জোসেফ কেবল তখনই মিরিয়ামকে বলতে পারেন, যদি তারা ঘনিষ্ঠ হন। মানে, তারা নিশ্চয়ই যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। হেরোদ চাচা জোসেফকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন, আলেক্সান্দ্রাকে বন্দী করলেন। তবে স্ত্রী মিরিয়ামকে কিছুই করলেন না।
এরপরেও হেরোদ একই আদেশ দিয়ে যেতেন, তিনি মারা গেলে যেন মিরিয়াম আর তার মাকে হত্যা করা হয়। এ থেকে মিরিয়ামের ধারণা হয়, হেরোদ আসলে তাকে ভালোবাসেন না। একবার হেরোদ বাড়ি ফেরার পর মিরিয়াম তার সাথে কঠিন আচরণ করতে লাগলেন, নিজের ঘৃণা প্রকাশ করলেন। হেরোদের মা আর বোনও মিরিয়ামের নামে মিথ্যা সব তথ্য দিতে লাগলেন। তারপরও হেরোদ তার স্ত্রীকে কিছুই করলেন না। কিন্তু মিরিয়াম তার সাথে সঙ্গম করতে অস্বীকার করলেন।
বোন সালোমি এসে হেরোদকে বললেন, মিরিয়াম হেরোদকে বিষ পান করিয়ে হত্যা করতে চান। হেরোদ সত্য বের করার জন্য মিরিয়ামের সেবক খোজার ওপর প্রচণ্ড নির্যাতন চালালেন (সে আমলে রানী বা রাজকন্যাদের সেবার দায়িত্ব নারী ও খোজাদের ওপর থাকত)। খোজার কাছ থেকে কিছুই জানা গেল না। তবে একের পর এক অভিযোগের তোড়ে খ্রিস্টপূর্ব ২৯ সালে হেরোদের আদেশে মিরিয়ামকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। মূল অভিযোগ— হেরোদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। মিরিয়ামের মৃত্যুর পর অনেকদিন শোকগ্রস্থ ছিলেন হেরোদ। কথিত আছে, মিরিয়ামের মৃতদেহকে মধুতে মাখিয়ে সাত বছর পর্যন্ত তিনি সঙ্গম চালিয়ে যান।
অ্যান্টনি ও ক্লিওপেট্রা যখন অক্টাভিয়ানের বাহিনীর হাতে পরাজিত হন, তখন হেরোদ অক্টাভিয়ানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেন। ফলে পম্পে জুদাহ প্রদেশ থেকে যা যা কেড়ে নিয়েছিলেন, সেগুলো তাকে ফিরিয়ে দেয়া হলো, সেই সাথে দুটো গ্রিক শহরও দেয়া হয়। পরের সাতাশ বছর হেরোদ অক্টাভিয়ান তথা রোমান সম্রাট অগাস্টাসের অনুগত হিসেবে কাটিয়ে দেন জুদাহতে।
হেরোদ অ্যাক্টিয়ামের যুদ্ধে অক্টাভিয়ানের বিজয় স্মরণে খেলাধুলা চালু করেন, জেরুজালেমে গ্রিক থিয়েটার আর অভিনয়মঞ্চ তৈরি করেন। মাসাদার মতো কিছু শক্তিশালী দুর্গও তিনি নির্মাণ করেন। তবে তার সবচেয়ে বড় কীর্তি হলো, তিনি বাইতুল মুকাদ্দাস ভবন পুনর্নির্মাণ করেন বিশালাকারে। এ ভবনের অল্প কিছু জিনিসই এখন অবশিষ্ট আছে।
তার নির্মিত বাইতুল মুকাদ্দাসে অ-ইহুদীদের কোর্টের পর কেবল ইহুদীদের জন্য ছিল আলাদা দ্বার। এরপর মহিলাদের কোর্ট। তারপর সাদুকিদের কুরবানি করার জায়গা, তের বছরের বেশি বয়সী ইহুদীরা সেখানে দাঁড়িয়ে কুরবানি দেখতে পারে। কেবল ইয়ম কিপুরের ঈদের দিনে প্রধান ইমাম ঢুকতে পারেন হোলি অফ দ্য হোলিজে।
পরের বছরগুলোতে হেরোদ আরও বড় কিছু জায়গা পান সিরিয়া থেকে। তবে জর্ডানের নাবাতীয়দের আক্রমণ করে তিনি অগাস্টাসকে রাগান্বিত করেন। সম্রাটকে শান্ত করতে তিনি আজ্ঞা জারি করেন, জুদাহ রাজ্যের সকল ইহুদীকে এই মর্মে সাক্ষ্য দিতে হবে যে, রোমান সম্রাট তাদের শাসক, তার প্রতি তারা অনুগত। একই সাথে হেরোদের প্রতিও তারা অনুগত।
কিন্তু ফারিসিদের বিশ্বাস ছিল, এমন আনুগত্য প্রকাশ করলে একটা পর্যায়ে মিসরের ফারাওয়ের মতো সম্রাটের পুজো করা লাগতে পারে। তাই তারা এমন আনুগত্য প্রকাশে অস্বীকার করলেন।
দেবদেবী উপাসক রোমানদের হাতে অধীনস্ত হওয়ার মতো দুর্দিন ইহুদীদের এসে গিয়েছে, তাই ফারিসিরা অপেক্ষায় রইলেন ভবিষ্যৎবাণীর সেই মাসিহ বা মেসায়ার, যিনি ইহুদীদের ত্রাণকর্তা রূপে আবির্ভূত হবেন। এরকম মেসায়া নিয়ে চিন্তাভাবনা ফারিসিরা আগে করতেন না বটে, কিন্তু এখন করতে লাগলেন। কেউ কেউ তো মানুষকে বুঝিয়েও ফেললেন যে, তার পুত্রই হতে চলেছে মেসায়া রাজা। তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন হেরোদ। অন্য কোনো রাজার কথা তিনি শুনতে চান না।
পরের বছর হেরোদ বাইতুল মুকাদ্দাসের মূল ফটকে ঈগল পাখির মূর্তি স্থাপন করেন। কিন্তু মূর্তি ইহুদী ধর্মে নিষিদ্ধ, তাই ধর্মপ্রাণ ইহুদীরা জড়ো হয়ে সেই মূর্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, মূর্তিটি নামিয়ে ধ্বংস করে ফেলে। এ আন্দোলনের জন্য হেরোদ তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
কিন্তু সে সময় নানা ঘটনার মাঝে হেরোদ নিজেই মারা যান খ্রিস্টপূর্ব ৪ সালে।