অধ্যায়-১৯ : ইহুদী জাতি এবং সুদপ্রথা

অধ্যায় ১৯ : ইহুদী জাতি এবং সুদপ্রথা

ইহুদীদের মহাজনি সুদের কথা যখন চলেই এলো, চলুন জেনে নেয়া যাক তাদের ধর্ম এ ব্যাপারে কী বলে। ইহুদী ধর্মের পালিত আইন হলো, তারা নিজেদের মাঝে সুদ দিয়ে ঋণ দিতে নিতে পারবে না। তবে অ-ইহুদী বিদেশি, অর্থাৎ যাদেরকে তারা জেন্টাইল বলে, তাদেরকে দেয়া যাবে সুদে ঋণ। ইহুদী ভাইদেরকে দিতে হবে বিনা সুদে, আর সেটি হবে তাদের জন্য পুণ্যের কাজ, হিব্রুতে যাকে বলে ‘সেদাকা’, আরবিতে যা সাদাকা।

তাওরাতের বরাতে, “তুমি সুদের জন্য, রূপার সুদ, খাদ্য সামগ্রীর সুদ, কোনো দ্রব্যের সুদ পাবার জন্য তোমার ভাইকে ঋণ দেবে না। সুদের জন্য বিদেশীকে ঋণ দিতে পার, কিন্তু সুদের জন্য তোমার ভাইকে ঋণ দেবে না।” (তাওরাত, দ্বিতীয় বিবরণ, ২৩:১৯-২০)

ইহুদী পণ্ডিত মাইমনিদিজের মতে, অ-ইহুদী ব্যক্তিকে ঋণ দিলে তার সাথে সুদ ধার্য করা কেবল উচিৎই নয়, বরং অবশ্য কর্তব্য একজন ইহুদীর জন্য।

শেক্সপিয়ারের ‘দ্য মার্চেন্ট অফ ভেনিস’ (১৬০০) নাটকের কথায় যদি আসি, এখানে নাট্যকার কিছু রূপকের আশ্রয় নিয়েছিলেন। কারণ তিনি যে সময়ের ইংল্যান্ডকে দেখিয়েছেন, তখন সেই দেশে কোনো ইহুদীর উপস্থিতিই ছিল না। কারণ, ইংল্যান্ড থেকে ১২৯০ সালে রাজা প্রথম এডওয়ার্ড সব ইহুদীকে বের করে দেন। অন্তত ১৬৫৩ সালের দিকে ক্রমওয়েল যুগ শুরু হবার আগে আইনত কোনো ইহুদী ইংল্যান্ডে আসতে পারেনি।

নাটকে শেক্সপিয়ার ইংল্যান্ডের ইতিহাসে মধ্যযুগীয় ইহুদীদের চড়া সুদে ঋণ দানকে নিয়ে এসেছেন খলনায়কের চরিত্রে ইহুদী শাইলককে দিয়ে, আর শেষে আমরা দেখতে পাই শাইলক হেরে গিয়ে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করছে। এর মধ্য দিয়ে খুব সহজেই ইহুদীদের প্রতি তৎকালীন খ্রিস্টানদের মনোভাব কেমন ছিল, সেটা ধরতে পারা যায়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *