ভৌগোলিক বিভাগ
কিন্তু গাঞী বিভাগ অপেক্ষা ও সামাজিক দিক হইতে গভীর অর্থবহ বিভাগ ব্রাহ্মণদের ভৌগোলিক বিভাগ। এক্ষেত্রেও কুলজী গ্রন্থের সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করিয়া লাভ নাই; কারণ রাঢ়ীয়, বারেন্দ্র, বৈদিক ও অন্যান্য শ্রেণীর ব্রাহ্মণদের উদ্ভব সম্বন্ধে এইসব গ্রন্থে যে বিবরণ পাওয়া যাইতেছে তাহা বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু হলায়ূধের “ব্রাহ্মণসর্বস্ব” প্রামাণ্যগ্রন্থ, এবং তাহার রচনাকালও সুনির্দিষ্ট। এই গ্রন্থে হলায়ূধ দুঃখ প্রকাশ করিয়াছেন যে রাঢ়ীয় ও বারেন্দ্র ব্রাহ্মণের যথার্থ বেদবিদ ছিলেন না; ব্রাহ্মণদের বেদচর্চার সমধিক প্রসিদ্ধি ছিল, তাঁহার মতে, উৎকল ও পাশ্চাত্যদেশ সমূহে।(১) যাহাই হউক, হলায়ুধের সাক্ষ্য হইতে দেখিতেছি, দ্বাদশ শতকেই জনপদ বিভাগানুযায়ী ব্রাহ্মণদের রাঢ়ীয় ও বারেন্দ্র বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হইয়া গিয়াছে; এবং লিপিসাক্ষ্য হইতে জানা যায়, এই সব ব্রাহ্মণের রাঢ় ও বরেন্দ্রীর বাহিরে পূর্ব বঙ্গেও বসতি স্থাপন করিতেছেন। বরেন্দ্রীর তটক গ্রামীয় একজন ব্রাহ্মণ বিক্রমপুরে গিয়া বসতি স্থাপন করিয়াছিলেন, অন্ততঃ একটি দৃষ্টান্ত আমরা জানি কুলজী গ্রন্থমালায় দেখা যায় কায়স্থ, বৈদ্য, বারুই প্রভৃতি অব্রাহ্মণ উপবর্ণদের ভিতরও রাঢ়ীয়, বারেন্দ্র এবং বঙ্গজ প্রভৃতি ভৌগোলিক বিভাগ প্রচলিত হইয়াছিল, কিন্তু এসম্বন্ধে বিশ্বাসযোগ্য ঐতিহাসিক প্রমাণ কিছু নাই।
——————-
(১) ব্রাহ্মণসরস্ব, বারাণসী সং, সংবৎ ১৯৩৫। তেজেশচন্দ্র বিদ্যানন সম্পাদিভ কলিকা • সং, বাং ১৩৩১ ৷