হারানো সূর্যের খোঁজে – অনির্বাণ ঘোষ
হারানো সূর্যের খোঁজে – অনির্বাণ ঘোষ
প্রথম প্রকাশ – আগস্ট ২০২২
প্রচ্ছদ – রূপায়ণ সুবিনয় দাস
অলংকরণ – ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
.
এই বইটা তোমার জন্য বাপি।
তোমার দেখানো স্বপ্ন
আমার দুই চোখে লেগে রয়েছে।
.
কেমন করে এল?
এই উপন্যাসটি জন্ম নেওয়ার কৃতিত্ব বেশ কিছু পিঠ চাপড়ানির এবং একটি লম্বা চওড়া হাইওয়ের, যার নাম ‘এম-থ্রি’।
আমার প্রথম বই বেরিয়েছিল সাড়ে তিন বছর আগে। তার অভাবনীয় জনপ্রিয়তা যেমন আমাকে আনন্দের সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, তেমনই একই সঙ্গে একটি খুব বড় সত্যির সামনে এনে ফেলেছিল আমাকে। তা হল বইটি সফল ঠিকই, কিন্তু আমি নিজে এখনও ভালোভাবে লিখতে জানি না।
আমার বেশ কিছু পাঠক জানেন যে আমি পেশায় ডাক্তার। যদিও আমার মন পড়ে থাকে ইতিহাস, মিথোলজি, সাহিত্য, শিল্পে, তবুও আমার দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় হয় ডাক্তারিতে। বাড়ি ফেরার পরে ব্যস্ত হয়ে পড়ি মেয়েকে নিয়ে। সুতরাং ক্রমশই লেখালিখি থেকে যেন দূরে সরে যাচ্ছিলাম। তবু নিজের মনকে প্রবোধ দিতাম, কাজের চাপ কমুক, একদিন ঠিক ফিরবই।
কিন্তু ‘ফিরবই’ এমন ভেবে চলা আর সত্যিকারের ফিরে আসার মধ্যে যে কয়েক পৃথিবীর দূরত্ব। এই পথ পাড়ি দিলাম ওই এম-থ্রি’র হাত ধরে। গতবছরে আমার কর্মস্থল বেশ কিছুটা দূরে চলে গেল। দুটি ঘণ্টা আমার কাটত গাড়িতে বসে, ইংল্যান্ডের মোটরওয়ে এম-থ্রির বুকে। সেই সময়টা আমি অডিও বুক শুনতে লাগলাম। কয়েক মাসের মধ্যে খেয়াল করলাম আমি শুনে ফেলেছি সুনীল, শীর্ষেন্দু, বুদ্ধদেব, শরদিন্দুর বেশ কিছু উপন্যাস, যা আমার আগে পড়া থাকলেও এবারে যেন অন্যভাবে আবিষ্কার করছি। একদিন খেয়াল করলাম, নিজের অজান্তেই, একটি গল্পের শিশুগাছ, যেন আমার মধ্যে বেড়ে উঠছে।
সেইদিন বাড়ি ফিরে ল্যাপটপের সামনে বসলাম। সেই শুরু। রাত জেগে কয়েক ঘণ্টা লিখে শুতে যেতাম। পরদিন সকালে ড্রাইভ করার সময় আমার মন জুড়ে থাকত ‘থীবস’, ‘অগস্ত্য’, ‘উপল’, ‘ইরতেনসেনু’। লিখতে লিখতে বুঝতে পারলাম কাহিনিটি আয়তনে বড় হয়ে চলেছে।
সেই দীর্ঘ রাত্রি জাগরণের ফল এই উপন্যাস ‘হারানো সূর্যের খোঁজে’। তবে উপন্যাসটি বই হয়ে প্রকাশিত হওয়ার দীর্ঘ পথে আমি একা ছিলাম না। সপ্তর্ষি বোস অনেক যত্ন নিয়ে এই উপন্যাসটিকে পাঠযোগ্য করে তুলেছে। সাহিত্যিক রাজা ভট্টাচার্য এবং ঋজু গাঙ্গুলি তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন, তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ধন্যবাদ জানাই সম্পাদক দেবাশিষ গোস্বামী, আমার ভাই অরিজিৎ গাঙ্গুলি এবং ‘আনাড়ি মাইন্ডস’- এর সবাইকে। আমার স্ত্রী জয়িতার সহ্যশক্তি তুলনাহীন, তার স্বামীর মাঝে-মাঝেই অন্যমনস্ক হয়ে যাওয়ার সঙ্গে দিব্যি মানিয়ে নিয়েছে সে। ‘পত্রভারতী’র ত্রিদিববাবু, চুমকিদি এবং বিভাগের সকলের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ।
পাঠক, আপনার কাছে অনুরোধ, আমার তৈরি করা জগতে ঘুরে এসে আপনার কেমন লাগল জানাবেন প্লিস। তাহলে আপনার জন্যই আমার লেখকসত্তা বেঁচে থাকবে।
অনির্বাণ ঘোষ
১লা জুলাই, ২০২২
কলকাতা
Leave a Reply