শ্রীকৃষ্ণকীর্তন – চণ্ডীদাস
মধ্যযুগীয় বাংলা-কাব্য। ১৩০৬ বঙ্গাব্দে (১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ) বসন্তরঞ্জন রায় বাঁকুড়া জেলা থেকে বড়ুচণ্ডীদাসের ভণিতায় একটি পুথি আবিষ্কার করেন। বাংলা সাহিত্যে এই গ্রন্থটিই শ্রীকৃষ্ণকীর্তন নামে খ্যাত। উল্লেখ্য, এই গ্রন্থটি বন-বিষ্ণুপুরের নিকটবর্তী কাঁকিল্যা নিবাসী দেবেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের কাছে ছিল। এই গ্রন্থটি ১৩২৩ বঙ্গাব্দে কলকাতা বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয়।
বসন্তরায়ের বিবরণ থেকে জানা যায়, মূলগ্রন্থটি তুলোট কাগজের উভয় পৃষ্ঠায় লিখিত ছিল। পাতার আকার ছিল ১৩.২৫X ৩.৭৫ ইঞ্চি। এই গ্রন্থের প্রথম দুটি পাতা পাওয়া যায় নাই। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন নামটি বসন্তরায়ের দেওয়া। এ প্রসঙ্গে এই গ্রন্থের ভূমিকায় বসন্তরায় লিখেছিলেন- ‘দীর্ঘকাল যাবৎ চণ্ডীদাস বিরচিত কৃষ্ণকীর্তন-এর অস্তিত্ব মাত্র শুনিয়া আসিতেছিলাম। এতোদিনে তাহার সমাধান হইয়া গেল। আমাদের ধারণা আলোচ্য পুথিই কৃষ্ণকীর্তন এবং সেইহেতু উহার অনুকরণ নাম নির্দেশ করা হইল।’
বসন্তরায়ের এই গ্রন্থ আবিষ্কারের পূর্বে- এই গ্রন্থ সম্পর্কে জানা গিয়েছিল, ১২৮০ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত জগবন্ধু ভদ্রের সম্পাদিত ‘মহাজন-পদাবলী’ (প্রথমখণ্ড), পৃষ্ঠা ৪৬, থেকে জানা যায় ১৩১১ বঙ্গাব্দে ব্রজসুন্দর সান্ন্যাল রচিত চণ্ডীদাস-চরিত গ্রন্থে এবং ত্রৈলোক্যনাথ ভট্টাচার্যের চণ্ডীদাস প্রবন্ধে (নব্যভারত, ফাল্গুন ১৩০০) এই গ্রন্থের নাম পাওয়া যায়। যদিও এঁদের বর্ণিত কৃষ্ণকীর্তন নামক গ্রন্থটিই যে বসন্তরায়ের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, এ কথা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায় না। ডঃ বিজন বিহারী ভট্টাচার্য এবং ডঃ অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এই গ্রন্থের নাম শ্রীকৃষ্ণকীর্তন-এর পরিবর্তে শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ হওয়া উচিৎ বলে দাবি করেছেন।
এই গ্রন্থের বৈদ্যুতিন সংস্করণ করা হলো- মুহম্মদ আবদুল হাই ও আনোয়ার পাশা সম্পাদিত বড়ুচণ্ডীদাসের কাব্য (আশ্বিন, ১৩৮৮ সন) অনুসারে।
Leave a Reply