শাহজাদা দারাশুকো – কালিকারঞ্জন কানুনগো
প্রথম প্রকাশ, আশ্বিন ১৩৯৩, সেপ্টেম্বর ১৯৮৬
SHAHJADA DARASHUKO
A biography of Shahjada Darashuko by Kalikaranjan Kanungo.
Published by Mitra & Ghosh Publishers Pvt. Ltd.
মিত্র ও ঘোষ পাবলিসার্স প্রাঃ লিঃ
প্রাককথন
পুস্তকখানি ‘ইতিহাসাশ্রিত উপন্যাস’ নহে। সমসাময়িক নিখাদ ফার্সী পুঁথি ও বৈদেশিক ভ্রমণকারীদের বিবরণের ভিত্তিতে রচিত। মুঘল সম্রাট শাহজাঁহার জ্যেষ্ঠপুত্র শাহ্জাদা দারাশুকো-র এই জীবনী আচার্য যদুনাথ সরকার ও যোগেশচন্দ্র বাগল মহাশয়ের আগ্রহাতিশয্যে পিতৃদেব ‘প্রবাসী’ পত্রিকার জন্য লিখিতেছিলেন। পুত্র হইয়া পিতার নিন্দা করা যায় না। কিন্তু বুঝিতে বিলম্ব হয় নাই যে লিখিবার মেজাজ হইলে তবেই তিনি লিখিতেন। অবিচ্ছিন্নভাবে এই রচনা বাহির হইতেছে না দেখিয়া ১৯৫৩ সনে আচার্য তাঁহার কলকাতার ১০নং লেক টেরেস বাড়িতে আমাকে বলিয়াছিলেন : ‘কালিকা জানে না যে তার লেখার ধার কতটা। ওটা শেষ করছে না কেন?’ নিঃসন্দেহে ইহা আচার্যের শিষ্যের প্রতি অনুরাগের ভাষায় রঞ্জিত। তবে অন্যান্যদের মধ্যে পিতৃদেবের কবিবন্ধু মোহিতলাল মজুমদারও উহা শেষ করিবার জন্য তাগাদা দিতেন।
এই জীবনকাহিনীতে শাহজাঁহার মুঘল ভারতের চিত্র আছে। তৈমূরী ইতিহাসের বহু চরিত্রের সমাবেশও ইহাতে প্রত্যক্ষ করা যাইবে। অনেকটা ইস্কান্দারের ‘magic mirror’-এর মতো, যেখানে ‘Man’s folly and wisdom’ প্রতিভাসিত। রচনাটি অসম্পূর্ণ ছিল। উহা সম্পূর্ণ করিয়া আমি কেবল পিতৃকৃত্য সমাধা করিয়াছি। রাধারাণী দেবী শরৎচন্দ্রের এবং শ্রীতারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বিভূতিভূষণের অসম্পূর্ণ রচনার সার্থক রূপ দিয়াছেন। এই বেওকুফ তাঁহাদের ন্যায় কিছুমাত্র কৃতিত্বের দাবি করিবে না। তবে মুঘল ইতিহাস তাহার তিরিশ বছরেরও অধিককালের খানদানী পেশা। তাই এই দুঃসাহস! পাঠক যদি শেষ অধ্যায় পাঠান্তে এই ‘পাকামি’-র জন্য আমাকে ‘অস্রপদা’ স্থির করিয়া সম্মার্জনীও দেখান উহাতে দুঃখ নাই কারণ আমার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল অসম্পূর্ণ রচনাটির সম্পূর্ণীকরণ।
শ্রীগজেন্দ্রকুমার মিত্র ও শ্রীসবিতেন্দ্রনাথ রায় (শ্রীভানু রায়), পিতৃদেবের ‘কাশ্মীরি দোরোখা শালে’ পুত্রের ‘কাঁথা জোড়া’র এই প্রয়াসকে উৎসাহ দিয়াছেন। উহার জন্য তাঁহাদের প্রতি যথোচিত কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেছি।
নরেন্দ্রনাথ কানুনগো
ইতিহাস বিভাগ, বিদ্যাভবন,
বিশ্বভারতী
২৮ দীনবন্ধু পল্লী,
শান্তিনিকেতন।
১৫ই আগস্ট, ১৯৮৬
Leave a Reply