শঙ্খ ঘোষের শ্রেষ্ঠ কবিতা – শঙ্খ ঘোষ / দে’জ পাবলিশিং / প্রথম প্রকাশ : এপ্রিল ১৯৭০ / পরবর্ধিত দে’জ দ্বাদশ সংস্করণ : বৈশাখ ১৪১৫ । মে ২০০৮
ভূমিকা
অল্পবয়সে বুদ্ধদেবের একটি লাইন নিয়ে আমরা কৌতুক করেছি খুব। মাত্র চল্লিশেই কেন উনি বিলাপ করবেন ‘আমি বুড়ো, প্রায় বুড়ো, কী আছে আমার আর তীব্র তেতো মত্ত স্মৃতি ছাড়া’? এই ছিল হাসাহাসির বিষয়। কিন্তু এখন, ওই বয়সে পৌঁছবার আর সামান্যই যখন বাকি, এখন যেন টের পাওয়া যায় শব্দগুলির ভিতরকার লাঞ্ছনা। কৌতুকটা বুঝি ফিরিয়ে নিতে হলো আজ।
আরো তা ফিরিয়ে নিতে হলো গোপীমোহনবাবুর ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’র ডাক শুনে। সহৃদয় তার আহ্বান, সাহসিক। কিন্তু শ্রেষ্ঠ কবিতা? শুনে মনে হয় যেন পরীক্ষাঘরের শেষ ঘণ্টা বেজে উঠল। এই কি আমাদের অবসান তবে? আমরা তো ভাবছিলাম আরো অনেক বাকি আছে। এগিয়ে-পিছিয়ে খেলা, অনেক নতুন করে শুরু কিংবা নতুন করে ছাড়া। তাহলে তা নয়?
সত্যি বলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই কবিতার। কিন্তু জীবিকাবশে শ্ৰেণীবশে এতই আমরা মিথ্যায় জড়িয়ে আছি দিনরাত যে একটি কবিতার জন্যেও কখনো-কখনো অনেকদিন থেমে থাকতে হয়। উপরন্তু আমি যে আধুনিকতার কথা ভাবি সেখানে মন্থর পুনরাবৃত্তির কোনো মানে নেই, অবাধ প্রগৰ্ভতার কোনো প্রশ্রয় নেই। তাই কম লিখি বলে আমার ভয় হয় না। আমার ভয় কেবল এই যে সমস্তটা মিলিয়ে আদ্যন্ত একটিই-যে নাটক গড়ে উঠবার কথা ছিল, আজও তার অবয়ব দেখতে পাই না স্পষ্ট। বলা হয় না কিছু : এখনও রয়ে গেল পুরোনো সেই নিষ্ফলতার বোধ। এ সংকলনের সবচেয়ে প্রাচীন লেখা “কবর”, সবচেয়ে নতুন “ভূমধ্যসাগর”; মধ্যবর্তী ঠিক কুড়ি বছরের সময় থেকে সাজিয়ে নিতে গিয়ে দেখি, হতাশা ছাড়া হাতে থাকে না কিছুই।
তাই, শ্রেষ্ঠ কবিতা বলার কোনো মানে নেই একে।
— শঙ্খ ঘোষ
চৈত্র ১৩৭৬
.
দ্বিতীয় সংস্করণ
‘শিকড়ের ডানা’ শিরোনামে যে অনুবাদ-কবিতাগুলি ছিল পুরোনো সংস্করণে, এবার তা সরিয়ে নেওয়া হলো বই থেকে। পরিবর্তে দেওয়া হলো ‘আদিম লতাগুল্মময়’, মূর্খ বড়ো, সামাজিক নয়’ আর ‘বাবরের প্রার্থনা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা, আগে যা ছিল না এখানে।
পৃষ্ঠাসূচনার লাইন ডানদিকে একটু সরানো থাকলে বুঝতে হবে, সেখান থেকে শুরু হচ্ছে নূতন স্তবক। আষাঢ় ১৩৮৫
.
সপ্তম সংস্করণ
লাইনেই ছিলাম বাবা’ আর ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ থেকে কয়েকটি কবিতা জুড়ে, পুরোনো সংস্করণের কয়েকটি বর্জন করে, ছাপা হলো এই সংস্করণ।
আগের মতোই, শব্দের আদিতে অ্যা-ধ্বনি বোঝাবার জন্যে চিহ্ন ব্যবহার করা হলো। পৌষ ১৪০২
.
নবম সংস্করণ
প্রায় তিরিশ বছর আগে প্রথম বেরিয়েছিল এই বই। পরে, আরো আটবার ছাপা হলো দে’জ প্রকাশনী থেকে। এবারকার মুদ্রণে দুটো নতুন বই থেকেও কবিতা রাখতে হলো বলে বর্জিত হলো পুরোনো কয়েকটি লেখা। একটু একটু করে অনেকটাই পালটে গেল বই। ভাদ্র ১৪০৬
.
একাদশ সংস্করণ
আবারও কিছু বদল হলো। ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ থেকে একটি আর ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ বইটির কয়েকটি কবিতা যুক্ত হলো এই সংস্করণে। ভাদ্র ১৪১১
.
দ্বাদশ সংস্করণ
সমস্ত ক্ষতের মুখে পলি’ বইটি থেকে কয়েকটি কবিতা নিয়ে এই সংস্করণ তৈরি হলো। বর্জিত হলো “আদিপুরাণ” নামের কবিতাটি। বৈশাখ ১৪১৫
—-শঙ্খ ঘোষ
Leave a Reply