মীরার গ্রামের বাড়ী – হুমায়ূন আহমেদ
কাকলী প্রকাশনী
প্ৰথম প্ৰকাশ— ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮
উৎসর্গ
মঈনুল আহসান সাবের
ক্লাসিক ধারার লেখক হয়েও যিনি আগ্রহের
সঙ্গে আমার মতো জনপ্রিয় ধারার অভাজনের রচনা
আগ্রহ নিয়ে পাঠ করেন এবং লোকজনদের তা
বলতে তেমন লজ্জা পান না।
.
একদিন এই দেখা হয়ে যাবে শেষ,
পড়িবে নয়ন’পরে অন্তিম নিমেষ।
পরদিনে এইমতো পোহাইবে রাত,
জাগ্রত জগৎ—‘পরে জাগিবে প্রভাত।
কলরবে চলিবেক সংসারের খেলা,
সুখে দুঃখে ঘরে ঘরে বহি যাবে বেলা।
সে কথা স্মরণ করি নিখিলের পানে
আমি আজি চেয়ে আছি উৎসুক নয়ানে।
যাহা-কিছু হেরি চোখে কিছু তুচ্ছ নয়,
সকলই দুর্লভ ব’লে আজি মনে হয়।
দুর্লভ এ ধরণীর লেশতম স্থান,
দুর্লভ এ জগতের ব্যর্থতম প্ৰাণ।
যা পাই নি তাও থাক্, যা পেয়েছি তাও,
তুচ্ছ ব’লে যা চাই নি তাই মোরে দাও।
চৈতালী (দুর্লভ জন্ম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
.
লেখালেখি নিয়ে আমার কিছু মৌলিক সমস্যা আছে। আমি প্রায়ই একই নাম ব্যবহার করি। সম্পূর্ণ ভিন্ন উপন্যাস কিন্তু পাত্র-পাত্রীর একই নাম (নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার)। পাত্র-পাত্রীর নাম ভিন্ন কিন্তু ঘটনার স্থান এবং কাল এক (নীল অপরাজিতা, তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে)। পাঠকরা খানিকটা হলেও বিভ্রান্ত হন (আমি নিজেই হই, পাঠকরা তো হবেনই)। অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে এই ত্রুটি থেকে মুক্ত করতে পারিনি, সম্ভবত এটা আমার জন্মত্রুটি যা থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব না!
‘মীরার গ্রামের বাড়ি’ উপন্যাসের শুরুটা পাঠকদের আমার আরেকটি উপন্যাসের শুরু মনে করিয়ে দেবে (শ্রাবণ মেঘের দিন)। সেখানেও দুই বোনকে নিয়ে গল্প শুরু হল— শাহানা, নীতু। এখানেও দুই বোন— মীরা এবং শেফা। মিল এই পর্যন্তই। ভূমিকায় ব্যাপারটা উল্লেখ না করলেও হত। উল্লেখ করলাম কারণ মীরার গ্রামের বাড়ি যখন লিখতে শুরু করলাম তখন আমার মেজো মেয়ে খুব হৈচৈ শুরু করল। রাগী-রাগী গলায় বলল— এটা কী করছ? আবারো আগের মতো? আমি মেয়েকে বললাম, কাঠামো কোনো ব্যাপার না মা— কাঠামোর ভেতরের ব্যাপারটাই মূল। সব মানুষের শরীর মোটামুটি একই রকম, কিন্তু মন?
মীরার গ্রামের বাড়িতে আমি কিছু যুক্তি ব্যবহার করেছি, যা সম্পূর্ণই আমার যুক্তি। এই কথাটা বলা দরকার।
হুমায়ূন আহমেদ
ধানমণ্ডি, ঢাকা
মোঃ রাইসুল ইসলাম
আপনাদের প্রকাশিত প্রতিটি বই আমি দেখি। যেগুলো ভালো লাগে পড়ি। অনেক ভালো লাগে। এটা একটা মহৎ উদ্যোগ। এম পি সিরিজ, জর্জ সিরিজ চাকুরির বইগুলো ইউনিকোট করলে আরো ভালো হবে। দেখবেন সেই বইগুলো ইউনিকোট করা যায় কি না।