মানুষের ঘরবাড়ি – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব
শ্রীযুক্ত বাবু অশোক মিত্র
মান্যবরেষু
.
সোনা এই পর্বে বিল্ব হয়ে আছে
‘মানুষের ঘরবাড়ি’ কবে লিখতে শুরু করি, তার নির্দিষ্ট সন তারিখ মনে নেই। তবে যতদূর মনে পরে ১৯৭৭ সালে অমৃত শারদীয় সংখ্যায় উপন্যাসটির প্রথম কিস্তি লিখি। নাথ ব্রাদার্স সম্ভবত ১৯৭৮ সালে গ্রন্থাকরে প্রকাশ করে এই চটি উপন্যাসটি। ‘মানুষের ঘরবাড়ি’ নামেই প্রকাশিত হয়। সেই থেকে পরপর আরও কিছু কিস্তি পূজাসংখ্যা গুলোতে প্রকাশ হতে থাকে। সব কিস্তিগুলি এক সঙ্গে এই উপন্যাসের অন্তর্গত হয়। এবং ‘মানুষের ঘরবাড়ি’ নামেই পরিমার্জিত এবং পরিবর্ধিত সংস্করণটি প্রকাশিত হয় করুণা প্রকাশনী থেকে।
আসলে আমি ব্যক্তিগতভাবে কুঁড়ে এবং অলস মানুষ। খুব চাপ সৃষ্টি না হলে লেখা হয় না। আর যা হয়, যে বিষয় নিয়ে লিখতে শুরু করি, তার রেশ মাথা থেকে কিছুতেই সরে যায় না। ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ ‘অলৌকিক জলযান’ এবং ‘ঈশ্বরের বাগান ও প্রায় একই ধরনের রেশ থেকে লেখা। জীবনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে এই সব উপন্যাসের সৃষ্টি। এই সব উপন্যাস সৃষ্টির সঙ্গেই বোধ হয় মানুষের ঘরবাড়ির বিষয়টি মাথায় ক্রিয়া করে।
১৯৭৬ সালে আমার পিতার মৃত্যু হয়।
আর তখনই মনে হয় জীবনের আসল পর্ব ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ সিরিজ থেকে বাদ গেছে। দেশ ভাগের পর এদেশে এসে পিতার সেই একখণ্ড জমি অন্বেষণ নিয়ে শুরু হয় জীবনের আর এক সংগ্রাম। ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ যে সোনা, মানুষের ঘরবাড়িতে সে বিশ্ব বা বিলু। অলৌকিক জলযানে সে ছোটবাবু, ঈশ্বরের বাগানে সে অতীশ দীপংকর—এইভাবে জীবনের অজস্র বিচিত্র বাস্তব, রহস্যময়তা নিয়ে সে উদ্ভাসিত হতে থাকে। পাঠকেরও অভিজ্ঞতা ‘মানুষের ঘরবাড়ি’ আসলে সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব। সুতরাং এখন থেকে ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ দ্বিতীয় পর্ব বলেই চিহ্নিত করা গেল। এই উপন্যাসটিকে এই পর্বে সোনা বিল্ব হতে পিতার সেই ঘরবাড়ি বানানো মহাকাব্য সুলভ জীবন বোধের কথা লিখে রাখে।
অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
এ সি ১৮৫ প্রফুল্ল কানন
কলকাতা ৭০০ ১০১
৫-৯-২০০১
Leave a Reply