মগরাজ – রবিন জামান খান
প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা ২০২১
প্রচ্ছদ – আশরাফ ফুয়াদ
উৎসর্গ
কিছু মানুষ থাকে যাদের সঙ্গে পরিচয় এবং যাদের সঙ্গ এক মানবজন্মের জন্যে পরম পাওয়া। তেমনি একজন মানুষ…
শ্রদ্ধেয় বড়ো ভাই-বন্ধু এবং সহকর্মী সৈয়দ হাবিব আনোয়ার পাশা স্যারকে।
.
ভূমিকা
সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আমি থ্রিলারের মানুষ। ফিকশন, নন-ফিকশন থেকে শুরু করে সিনেমা-টিভি সিরিজে সবসময়ই আমার পছন্দ থ্রিলার। সাহিত্যের ছাত্র ও একজন পাঠক হিসেবে প্রায় সব ধরনের লেখা নিয়মিত পড়লেও একেবারে স্কুল লেভেল থেকে থ্রিলারই ছিল আমার প্রথম পছন্দ। তাই প্রথম যখন মৌলিক থ্রিলার উপন্যাস লেখার পরিকল্পনা করছিলাম সে-সময়ে ভেতরে-ভেতরে একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করছিল নিজের দেশের ইতিহাস, নিজের দেশের নানা মিথ-লেজেন্ড নিয়ে খাঁটি বঙ্গদেশীয় ইতিহাসআশ্রিত থ্রিলার উপন্যাস লেখার। রিসোর্স সংগ্রহ থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপেই চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক কিন্তু আমার প্রথম উপন্যাস ‘২৫শে মার্চ’ প্রকাশিত হবার পর পাঠকের ভালোসায় সিক্ত হয় বইটি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইতিহাসআশ্রিত থ্রিলারের নতুন এক দ্বার উন্মোচিত হয়। এরপর একে একে ‘সপ্তরিপু’ ও ‘ব্ল্যাক বুদ্ধা’ প্রকাশিত হবার পর সেই সাফ্যলের মুকুটে যুক্ত হয় পাঠকের ভালোবাসার নতুন পালক। ব্রিটিশশাসিত ভারতের প্রেক্ষাপটে ঠগি নামক ভয়ংকর খুনে গোত্রের গল্প নিয়ে যখন সপ্তরিপু বইটা লিখি তখন একটা ইচ্ছে ছিল আমি তিনটি চরিত্রের সৃষ্টি করব এবং এই চরিত্রগুলো নিয়ে একেবারে দেশীয় প্রেক্ষপটে তিনটি ইতিহাসআশ্রিত থ্রিলার উপন্যাস লিখব বেশ বড়ো পরিসরে। কিন্তু এই ট্রিলজির দ্বিতীয় বই ‘ব্ল্যাক বুদ্ধা’ লেখার সময়েই এই আইডিয়া আরো বিস্তৃত হয় এবং সে-থেকে সিদ্ধান্ত নেই, ট্রিলজি নয় বরং ইতিহাসের একেকটা অধ্যায় নিয়ে আমি একটা পরিপূর্ণ সিরিজই লিখব। এরই ধারাবাহিকতায় এই সিরিজের তৃতীয় বই ‘মগরাজ’ প্রকাশিত হলো।
মগরাজ উপন্যাসটি আমার দীর্ঘদিনের প্রজেক্ট। এই উপন্যাসের প্রস্তুতির জন্যে বলতে গেলে এক বছর লেখালেখি থেকে দূরে ছিলাম। একেক লেখক একেকভাবে লেখে, প্রত্যেকের ধরন আলাদা। আমার লেখার পদ্ধতি অত্যন্ত বিস্তৃত এবং দীর্ঘ, যেটা অনেক সময়ই পাঠক ও প্রকাশকের বিরক্তির কারণে হয়ে দাঁড়ায়। কারণ আমি প্রথমে আইডিয়া ডেভলপ করি, তারপর বিস্তারিত প্রস্তুতি নেই, এরপর দীর্ঘ সময় নিয়ে আউটলাইন করি, এরপর যেসব স্থানগুলোতে গল্পের বুনন তৈরি হবে, সম্ভব হলে সেসব স্থানগুলো ঘুরে দেখে এসে লিখতে বসি। তাই আমার একেকটা লেখা আসলে শুধু লেখা নয় একেকটা গল্প, গল্পের চরিত্র আমার নিজের অস্তিত্বের এক একটি অংশে পরিণত হয়। মগরাজ এমনই একটি প্রজেক্ট। কতটা সফল প্রজেক্ট সে-বিবেচনা পাঠকের।
.
মগরাজ
মগরাজ নিয়ে যদি দু-একটা কথা বলতে চাই তবে প্রথমেই বলব মগরাজ গল্পটা চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপটে লেখা। তাই প্রথমে চরিত্রগুলোর সংলাপে চট্টগ্রামের স্থানীয় ভাষার প্রভাব রেখেই আমি লিখেছিলাম কিন্তু পরে দেখা গেল এতে করে কথোপকথনগুলো সার্বজনীন পাঠকের বুঝতে সমস্যা হবে। যে-কারণে পরবর্তীতে চরিত্রের কথোপকথনে চট্টগ্রামের ভাষার প্রভাব পরিবর্তন করে ডায়লগগুলো সাধারণ আঞ্চলিক বাংলায় লেখা হয়। মগরাজের আরেকটি ব্যাপার হলো, এটি ইতিহাসের এমন এক অধ্যায় নিয়ে লেখা যে-সময়ের অনেক কিছুই অস্পষ্ট। ঘটনাগুলো নথিভুক্ত তো নয়ই বরং একেকটা ঘটনার আবার লোকমুখে প্রচলিত একেক রকমফের রয়েছে। আর তাই উপন্যাসের কিছু কিছু বাস্তব চরিত্রের কর্মকাণ্ড কিংবা পরিণতি ইতিহাসের ধ্রুব সত্য বলে ধরে নেয়ার কোনো কারণ নেই, আবার পুরোপুরি ঐতিহাসিক মিথ্যা বলেও ভাবার কারণ নেই। আমি ইতিহাসের নথিভুক্ত সত্য এবং লোকমুখে প্রচলিত ভিন্ন ভিন্ন ঘটনা এবং চরিত্রের পরিণতির সার্বিক এবং কাল্পনিক একটা প্রেক্ষাপটকে ভিত্তি ধরে আমার নিজের মতো একটি গল্প বলার চেষ্টা করেছি। তবে মগ-ফিরিঙ্গি জলদস্যু থেকে শুরু করে দক্ষিণ অঞ্চলের স্থানীয় রাজনীতি এবং মোঘলদের অভ্যন্তরীণ কলহ এবং দক্ষিণ অঞ্চলের জনমানুষের জীবনের যে দুর্বিষহ চিত্র উপন্যাসে রচনা করা হয়েছে তা ধ্রুব এবং প্রতিষ্ঠিত সত্য।
তবে সত্য-মিথ্যা, বাস্তব-কল্পনা যাই হোক না কেন, এত ভেবে লাভ কী? আমি একটি গল্প বলতে চেয়েছি, পাঠকরা যদি সেই গল্পের গভীরে ডুব দিয়ে বাস্তব জীবনের দাবদাহ থেকে খানিক সময়ের জন্যে ইতিহাসের অতলে ডুব দিয়ে জলদস্যু, পালতোলা জাহাজ, পুরনো দুর্গ আর দক্ষিণ সাগরের নোনা পানিতে হারিয়ে যেতে পারে, তবেই আমি মনে করব আমার গল্প বলা সার্থক হয়েছে। একজন গল্পকথক হিসেবে পাঠকরাই আমার সবচেয়ে বড়ো শক্তির জায়গা পাঠকদের জন্যেই আমার সব ভালোবাসা, আর সেই পাঠকদের হাতেই আমার সব সাফল্য ও ব্যর্থতা নিহিত। সবাই ভালো থাকবেন।
রবিন জামান খান
স্টিলওয়াটার,
ওকলাহোমা,
যুক্তরাষ্ট্র
masum billah
রান এ্যাওয়ে + গন ফর গুড + আই উইল ফাইন্ড ইউ
ছারপোকা ঃ ব্যাটল অভ মাহেন্রপুর
ছায়া সময়
গোল্ড মাইন + দ্য নিউ কিংডম
থ্রি সিক্রেট সিটিজ + সিক্রেট রানার্স অভ নিউইয়র্ক
ডীপ ফ্যাদম + ক্রুসিবল
Niyana
Thanks very very much.