ভৌতিক অমনিবাস ২ – মানবেন্দ্র পাল
সম্পাদনা – সমুদ্র বসু
দেব সাহিত্য কুটীর প্রাইভেট লিমিটেড
প্রথম প্রকাশ : ১লা বৈশাখ, ১৪২৭, এপ্রিল ২০২০
প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী
উৎসর্গ
বাংলা কিশোর সাহিত্যে রহস্য, অ্যাডভেঞ্চার,
ভৌতিক ও কল্পবিজ্ঞানের অন্যতম কাণ্ডারী,
শ্রীস্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়—কে
ভূমিকা
শুকতারার ভৌতিক কাহিনি আর মানবেন্দ্র পাল—একসময়ে এটি ছিল একই মুদ্রার এ—পিঠ আর ও—পিঠ। শুকতারার ভৌতিক সংখ্যা যেমন মানবেন্দ্র পালের গল্প ছাড়া ভাবাই যেত না, তেমনই শুকতারা শারদীয়ার পাতায় মানবেন্দ্র পালের ভৌতিক উপন্যাসটা পড়ার জন্য আমরা মুখিয়ে থাকতাম। এ ছাড়া নবকল্লোল, নিউ বেঙ্গল প্রেসের বার্ষিকী, কিশোর ভারতীতেও তিনি লিখেছেন বেশ কিছু ভৌতিক কাহিনি। ওঁর গল্পে যেমন আছে অভিশপ্ত আত্মার গল্প, তেমনি আছে পিশাচের গল্প, ভ্যাম্পায়ারের গল্প। বাংলা সাহিত্যে হাড় হিম করে দেওয়ার পারদর্শিতায় ওঁর তুলনা উনি নিজেই। বুক ধড়ফড়, গা ছমছম, রোম খাড়া হয়ে যাওয়া, গলা শুকিয়ে যাওয়া—মানবেন্দ্র পালের গল্প পড়লে এসব কিছু হতে বাধ্য।
১৯৮৩ থেকে ২০০৯—এর মধ্যে শুকতারার পাতায় প্রকাশিত হয়েছে ওঁর বহু গল্প—উপন্যাস। তার মধ্যে ২২টি ভৌতিক কাহিনি নিয়ে ২০১৪ সালে দেব সাহিত্য কুটীর থেকে ”ভৌতিক অমনিবাস” নামে একটি বই প্রকাশিত হয় যার বাজারে কাটতি আজও একই রকম। বিগত দুই বছর ধরেই বিভিন্ন স্যোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে অনেকেই দাবি তুলতে থাকেন মানবেন্দ্র পালের বাকি হারিয়ে যাওয়া গল্পগুলির ভবিষ্যৎ কী। অথচ কেউই সম্পূর্ণ ভাবে কী কী গল্প সংকলিত হয়নি সে বিষয়ে সঠিক হদিশ দিতে পারেননি। আমি সবার আগে এ বিষয়ে যাঁর থেকে সক্রিয় সাহায্য পেলাম তিনি সৌরভ দাস। বেশ বড়সড় একটা লিস্ট করে তিনি আমাকে পাঠালেন। এরপর চলতে থাকল আরো খোঁজা। শুকতারার বাইরে নিউ বেঙ্গল প্রেসের বার্ষিকী, এমনকি শুকতারার আগে দেব সাহিত্য কুটীর থেকে যে সমস্ত বার্ষিকী বেরোত, খোঁজ শুরু করলাম সেখানেও। বেশ কয়েকটি দুপুরে দেব সাহিত্য কুটীরের অফিসে ধুলোমাখা শুকতারা ঘাঁটলাম। এইভাবে পেলাম আরো কিছু কাহিনি। এই কাজটি সম্পূর্ণ করার জন্য আমাকে নিরন্তর উৎসাহ দিতে থাকেন অগ্রজ শুভাকাঙ্ক্ষী সুগত চক্রবর্তী। তারপর সেগুলোকে ভৌতিক ও রহস্য—এই দুই ভাগে ভাগ করে আমি প্রস্তাব দিলাম আমার দিদি—দেব সাহিত্য কুটীরের বর্তমান কর্ণধার শ্রীমতী রূপা মজুমদারকে। এই প্রস্তাবে সম্মতি দিতে উনি এক মুহূর্তও ভাবেননি। সঙ্গে সঙ্গে কাজটি জমা দিয়ে দিতে বলেন। অবশেষে প্রকাশ পেতে চলেছে মানবেন্দ্র পালের ”ভৌতিক অমনিবাস—দ্বিতীয় খণ্ড”। এগুলির বেশির ভাগই অগ্রন্থিত কাহিনি।
মানবেন্দ্র পালের ”ভৌতিক অমনিবাস—দ্বিতীয় খণ্ড” প্রকাশ করার এই কঠিন প্রচেষ্টা দেব সাহিত্য কুটীর করে দেখাতে পারল বলে আমি আহ্লাদিত। আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ দেব সাহিত্য কুটীরের প্রকাশক শ্রী রাজর্ষি মজুমদার এবং শ্রীমতী রূপা মজুমদারের কাছে আমাকে সম্পাদনার এই গুরুদায়িত্ব দেওয়ার জন্য। এই অমনিবাসে আপ্রাণ চেষ্ট করেছি সমস্ত কাহিনিগুলিকে প্রথম প্রকাশকালের ক্রম অনুযায়ী সাজিয়ে দিতে। আমি আমার বাবা শ্রী সমর কুমার বসু ও মা শ্রীমতী সংযুক্তা বসুর কাছে ঋণী আমাকে নিরন্তর উৎসাহ দেওয়ার জন্য। সর্বোপরি এই প্রজেক্টে যাঁদেরকে পাশে না পেলে দ্রুত সম্পাদনা সম্ভব হত না সেই—সৌরভ দাস, সুগত চক্রবতী, অর্ণব দাস, রাজর্ষি সরকার, সায়ন তালুকদার, দেবাঞ্জন দেব এবং সোমনাথ মান্নাকে জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। আমি আমার পরমারাধ্য ঠাকুর শ্রীশ্রী জিতেন্দ্রনাথের চরণকমলে প্রণাম জানিয়ে আমার কথা শেষ করলাম।
সমুদ্র বসু
কলকাতা
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (মহাশিবরাত্রি)
Leave a Reply