ভুলবে সে গান যদি (চেনা, অচেনা গানের গল্প) – প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত
প্রথম প্রকাশ জানুয়ারি, ২০২০
ছোট্ট রায়ানকে
একদিন যে বড়ো হয়ে
এই বইয়ের মর্ম বুঝবে ঠিক…
প্রাককথন
কথা ফোটবার আগে গান ফুটেছে প্রাণে। যেমন ভাবে ফুল ফোটে, যেমন ভাবে ঝরনা তার নিজস্ব ছন্দে কিংবা নদী সমুদ্রে গিয়ে মেশে, তেমনি ভাবে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি গান, গানের চোরাস্রোত বয়েই চলেছে মানুষের বুকের ভেতর। এই পৃথিবীর মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সে সব সুর ছন্দ হাওয়ায় হাওয়ায় ঘুরে বেড়ায়, সেই সব সুর একদিন মানুষ কন্ঠে তুলে নিল। জল-বৃষ্টি-আগুন-উত্তাপ এসবের মধ্যে দিয়ে গান হয়ে উঠেছে। গান তৈরি করেনি কেউ। বহু বহু বছর বহু বহু সুর বহু তান গানের শরীর মন তৈরি করেছে। এই যে আমরা যাকে বলছি সভ্যতা, সেই সভ্যতার নিজস্ব গানও তৈরি হল। সেই সব গানের পেছনে কত বিচিত্র সব গল্প। গল্প না জেনেও মানুষ গান ভালোবেসেছে, গল্পগুলো জেনে ফেললে তো সোনায় সোহাগা। নাটকের গান, মানুষের মুখে মুখে ঘুরতে থাকা গুনগুন করে গাওয়া লোকসংস্কৃতির গান, শহুরে সংস্কৃতির গান, সিনেমার গান—এইসব খুঁজতে গিয়ে প্রসেনজিৎ একটা ম্যাজিক ঘটিয়েছে। গানের গল্প নিয়ে সে এক অনবদ্য বই লিখে ফেলল। বই লেখার কোনও পূর্ব পরিকল্পনা ছিল কিনা সেটা আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয় শুধু বুঝতে পারি যে, গান ওকে টেনেছে, তার পেছনের গল্পটা ও খোঁজবার চেষ্টা করেছে। সেটা বেনারস হতে পারে কিংবা বার্মিংহাম। আমার পড়তে পড়তে বারবার মনে হচ্ছিল সারা পৃথিবীর এই গানগুলো জড়ো হয়েছে রং-বেরঙের গল্পে।
গানের রান্নাঘরে টুকিটাকি যা সরঞ্জাম থাকে তাকে নিয়েই দারুণ স্বাদের গান তৈরি হয়ে ওঠে। শুধুমাত্র মাস্টার শেফরাই জানেন সেই রেসিপি। প্রসেনজিৎ তার লেখায় গান বাজনার সেই রথী-মহারথী শেফদের সঙ্গে আমাদের আলাপ করিয়ে দিয়েছেন। আর সেইসব মুহূর্তরা জীবন্ত হয়ে উঠেছে আমাদের চোখের সামনে। যেমন—জেমস পিয়ারপন্ট এবং তার জিঙ্গলবেলের গল্প। মানুষটিকে ইতিহাস ভুলে গিয়েছে কিন্তু তার কীর্তি, সে রয়ে গেল সারা পৃথিবীর ক্রিসমাসের গল্পের সঙ্গে। একই রকমভাবে ‘টম এন্ড জেরি’র কম্পোজার ওয়াল্টার স্কট ব্ল্যাডলির এই তথাকথিত ফানি স্কোর কীভাবে টম এন্ড জেরির দুনিয়া থেকে আমাদের দুনিয়া হয়ে উঠেছে, তা এক কথায় অভাবনীয়। সত্যি বলতে ‘টম এন্ড জেরি’ অসম্পূর্ণ ওরকম একটা মিউজিক স্কোর ছাড়া। বিখ্যাত সমস্ত ক্লাসিক্যাল কম্পোজারদের মিউজিকগুলোকে এই ওয়াল্টার স্কট কী করে ‘ফানিজ’ করে রূপান্তর করলেন সেইসব গল্প পড়তে পড়তে আমার মনে হয়েছে এগুলোর কোনও জুড়ি নেই। আবার সেখান থেকেই প্রসেনজিৎ চলে এসেছে গঙ্গার পাড়ে দক্ষিণেশ্বর, যেখানে আমরা দেখতে পাই ঠাকুরকে গান শোনাচ্ছেন বিবেকানন্দ। তানপুরায় সুর বাঁধতে বাঁধতে টাটকা নতুন গান তৈরি করে ফেললেন। শেষদিন পর্যন্ত নরেনের গলায় বারবার করে ঠাকুর সেই গান শুনতে চাইতেন। এইসব গানের ক্ষণ-মুহূর্তরা প্রসেনজিতের কলমে নদীর স্রোতের মতো ম্যাজিক তৈরি করে। আচ্ছা বলুন তো ‘আজ জানে কি জিদ না করো’—এরকম একটা গানের গল্প যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে জীবনে আর কি চাই! পড়তে পড়তে পাঠক তার নিজের ঘর-বারান্দা ছেড়ে সেই ইতিহাসের অলি-গলি-শহরতলি গল্পগুলোর সামনে এসে দাঁড়ায়। গল্পের ভাষা এত সাবলীল ও স্পষ্ট যেন গান ঘিরে এক অনর্গল জলতরঙ্গের বেজে চলা।
সেই গল্প পড়তে পড়তে একটা দেশ, তার ইতিহাস, সংস্কৃতি, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যেন ছায়াছবির মতো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একসময় বাংলা গানে ‘স্টোরিজ অফ সংগস’ নামে ভিক্টোরিয়া মেমরিয়ালের সৌজন্যে একটা মিউজিকাল থিয়েটার করেছিলাম। অনেকটা ব্রডওয়ে মিউজিকের মতো। প্রচুর শিল্পী টেকনিশিয়ানস একসঙ্গে কাজ করেছিলেন সেখানে। সেটাও ছিল গানের গল্প। দর্শকদের উৎসাহ পেয়েছিলাম। পরবর্তীতে আরও বড়ো করে আমেরিকার হিউসটনে এই প্রোডাকশনটি খুব জনপ্রিয়তা পায়। তাই আমি হলফ করে বলতে পারি গানের পেছনের গল্পের প্রতি মানুষের কী পরিমাণ আগ্রহ আছে। এরকম এটা কাজ করতে গেলে কত অলি-গলি তল্লাট ঢুঁ মারতে হয়। সবচেয়ে বড়ো কথা কোনও গানকেই বাদ দেয়নি প্রসেনজিৎ। ওর কাছে সমস্ত গানই ওর ঘর। ও যেন সেই ঘরের গল্প বলেছে, যে ঘর বিশ্বচরাচর। সারা পৃথিবীর গান জড়ো হয়েছে ওর কলমে। আমার আশা মানুষের হৃদয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে এই বই। আমার সমস্ত ভালোবাসা আর শুভকামনা যতদূর যেতে পারে রইল প্রসেনজিতের সঙ্গে।
দেবজ্যোতি মিশ্র
কলকাতা, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯
উপক্রমণিকা
”ভুলবে সে গান যদি না হয় যেয়ো ভুলে
উঠবে যখন তারা সন্ধ্যাসাগরকূলে
তোমার সভায় যবে করব অবসান
এই কদিনের শুধু, এই কটি মোর তান।”
গানের গল্প বিষয়ক বইয়ের ভূমিকা যখন, গল্প দিয়েই তবে শুরু করা যাক। শ্রী শ্রী রবি ঠাকুর সহায়!
১৯৫৬ সাল। একবছর আগেই মুক্তি পেয়েছে সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী ‘পথের পাঁচালী’। রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে তার খ্যাতি ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। ওদিকে বাংলা থেকে হাজার মাইল দূরে বম্বেতে তখন ঘুম উড়েছে শচীন কর্তার। কিংবদন্তি সুরকার, গায়ক শচীন দেব বর্মন। সম্প্রতি হাতে পেয়েছেন নতুন ছবির সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব। গুরু দত্ত-এর ‘পিয়াসা’। শহর কলকাতার প্রেক্ষাপটে এক মরমি কবির উত্থান পতনের অবিস্মরণীয় আখ্যান। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি গানে সুরারোপনের কাজ শেষ। কথা লিখেছেন বিখ্যাত শায়ের শাহির লুধিয়ানভি। কিন্তু একটি বিশেষ দৃশ্যে এসে হোঁচট খাচ্ছেন শচীন কত্তা।
দৃশ্যটি এরকম যে, বাড়ি থেকে বিতাড়িত গল্পের নায়কও কবি বিজয় আশ্রয় খুঁজতে খুঁজতে এসে পৌঁছেছে কুখ্যাত গণিকাপল্লীতে। কিন্তু পতিতালয়ে যৌনতাড়নার চেয়ে বেশি তাঁকে স্পর্শ করেছে সমাজ থেকে একঘরে হয়ে যাওয়া, অসূর্যম্পশ্যা বারবণিতাদের জীবন। তাদের সেই দুঃখ কষ্ট, বিষাদ। সুরা হাতে পথে হেঁটে যেতে যেতে সমাজের এই অবক্ষয়ের দৃশ্যটি তাকে ভাবায়, ব্যথিত করে। উঠে আসছে গান। সেই গান গণিকাপল্লীর রাস্তায় তীব্র আশ্লেষে গাইতে গাইতে চলেছে নায়ক। সেই গান যেন তার একান্ত উপলব্ধির প্রতিবাদ।
বলার অপেক্ষা রাখে না, নিঃসন্দেহে ধাক্কা দেওয়ার মতো দৃশ্য। কিন্তু তবু একটা জুতসই সুর, খুঁজে পাচ্ছেন না শচীন দেব বর্মন। রেকর্ডিং স্টুডিওতে ক্রমশ বাড়ছে ব্যস্ত পায়চারি। তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাজারা সিং নামের এক পাঞ্জাবি গিটারবাদক। হাওয়াইয়ান গিটারে সিদ্ধহস্ত। ‘দাদা’ সুর খুঁজে পাচ্ছেন না, তাতে চিন্তিত তিনিও। অনেককক্ষণ ধরে টুংটাং করছিলেন তার গিটারে। এবারে তা নামিয়ে রাখলেন। ঠিক তখনই ঘটল সেই ঘটনা।
হাজারা সিং-এর হাত থেকে হঠাৎই অন্যমনস্কতায় পড়ে গেল ‘প্লেকট্রাম’, যা দিয়ে গিটার বাজানো হয়। পড়ল গিটারের তারের উপর। আকস্মিক পতনে অদ্ভুত শব্দ উঠে এল। চমকে উঠলেন শচীন কত্তা।
এই তো সেই সুর, যা তিনি খুঁজছিলেন গত তিন দিন ধরে। কি আশ্চর্য! সঙ্গে সঙ্গেই হুকুম হল ”ফিরসে বাজাও হাজারা সিং, ফিরসে”। হাজারা সিং অপ্রস্তুত। তিনি তো কিছু বাজাননি, যা হয়েছে তা নিতান্তই দুর্ঘটনা! তবু দাদার কথা রাখতে তাই করলেন অভিজ্ঞ গিটারবাদক। আবারও হাত থেকে প্লেকট্রাম আছড়ে পড়ল গিটারের তারে। একবার, দু’বার, বহুবার। সেই যান্ত্রিক মূর্ছনায় মুগ্ধ শচীন দেব বর্মন। নিমেষে তৈরি হল সুর। আবহধ্বনির সূত্র ধরে। সৃষ্টি হল ‘জিনহে নাজ হ্যায় হিন্দ পার উহ কহা হ্যায়’ গানটি। এর পরবর্তী ঘটনা ইতিহাস। এই ঘটনার কথা উল্লেখ করে রাহুল দেব বর্মন বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর বহু মহৎ সৃষ্টির পিছনে আছে আকস্মিক দুর্ঘটনা। সঙ্গীতের দুনিয়ায় সবই সম্ভব।’
আমার জীবনেও গান নিয়ে গবেষণা অনেকটা এই ‘এক্সিডেন্টাল ক্রিয়েশনে’র মতো। ছোটোবেলা থেকে গান-বাজনার পরিবেশে বড়ো হলেও আমি যে কোনোদিন গানবাজনা নিয়েই গবেষণা করব, এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। যখন ছোটো ছিলাম, নাতি পিয়ানো শিখবে নাকি তবলা, এ নিয়ে রীতিমতো ‘টাগ অফ ওয়ার’ চলত আমার আর ঠাকুরদার মধ্যে। ঠাকুরদা ছিলেন ওস্তাদ শ্রীখোলবাদক। সাহেবি কায়দায় মানুষ হওয়া ঠাকুমা বরাবর পাশ্চাত্য সংগীতের গুণগ্রাহী। অর্গান ও পিয়ানো দুটোই ভালো বাজাতেন। যদিও আমি বেছে নিয়েছিলাম—সেতার। আমারই এক পাড়াতুতো মাসিমার কাছে হয়েছিল হাতেখড়ি। তারও অনেক পরে সরোদের তালিম। পার্ক সার্কাসে থাকার সময়, আমার গুরু উস্তাদ মতিউর ইসলামকে খুঁজে পাই। নতুন করে তিনিই চেনান সুরের সাম্রাজ্য। আজ বুঝতে পারি সেই তালিম, সেই পর্যবেক্ষণ, সেই অনুসন্ধিৎসার বীজ আমার মধ্যে সযত্নে বপন করেছিলেন তাঁরাই। আজ নিজের লেখা গানের বইয়ের ভূমিকা লিখতে গিয়ে বারবার পুরোনো কথাই উঠে আসছে স্মৃতির সরণি বেয়ে।
২০০৬-১১ পর্যন্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পুস্তক বিপনন সংস্থায় কর্মরত থাকাকালীন, গান ও তা নিয়ে গবেষণার বিষয়টি নতুন করে মাথায় চাপে। প্রাপ্তি ছিল, কিছু অসামান্য পণ্ডিত, বিদগ্ধ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংস্পর্শ। প্রাপ্তি ছিল কিছু ‘নক্ষত্রজ্জ্বল’ ছাত্রছাত্রীদের বন্ধু হিসেবে পাওয়া। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই পরিবেশ আমার মধ্যে নতুন করে গান, সুর, লোক-সংস্কৃতি নিয়ে জানার উৎসাহ, চেনার তাগিদ, হারানো পথে নতুন সুরের সন্ধানের ইচ্ছেটাকে উসকে দেয়। তারপর সে এক অদ্ভুত সময়ের মুখোমুখি। চাকরির মধ্যে সময় বের করে এই জেলা, সেই জেলা, এই গ্রাম সেই গ্রাম ঘুরে বেরিয়েছি সুরের টানে। সঙ্গী শুধু ডায়েরি, পেন, জলের বোতল আর রেকর্ডার। পেয়েছি কিছু কাছের মানুষদের সাহচর্য। আমার সঙ্গে তারাও বেরিয়ে পড়েছে সুরের আহ্বানে। সেই হারানো সুরের খোঁজে ছুটে গেছি নতুন শহর, নতুন দেশেও। সেই যৌথ খামার, সেই ছুটে চলা আজও অটুট।
২০১০ সালে প্রকাশিত হয় ‘মহাসিন্ধুর ওপার থেকে’। ধর্মীয় সংগীতের আনাচ-কানাচের সন্ধান স্বরূপ। কিন্তু তা ছিল নিতান্তই একাডেমিক গবেষণার ফসল। আজ দশবছর বাদে আবারও নতুন করে গান নিয়ে লিখতে বসা। অধিকাংশ লেখাই তুলে ধরেছিলাম ফেসবুকের দেওয়ালে। অনুজপ্রতিম কবি, প্রকাশক ঐত্রেয়ীর আগ্রহে তা এবার ঠাঁই পেল দুই মলাটের মধ্যে। এখানে কোনও একাডেমিক গবেষণার তত্ত্বতালাশের কড়া বাঁধুনি নেই। যা আছে তা ভুলে যাওয়া কিছু গান, কিছু সুর নিয়ে মজলিশি গল্প, যা বারবার আমায় বিস্মিত করেছে, চিনতে শিখিয়েছে সুরের সেই অজ্ঞাত পরিচয়ের নানা বাঁক, ইউটোপিয়া জগতকে।
ঋত প্রকাশনের কাছে তাই কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। কৃতজ্ঞ ঐত্রেয়ী সরকারের কাছে, আমার এই সামান্য লেখা, এই ‘এক্সিডেন্টাল ক্রিয়েশন’-র উপর ভরসা রাখার জন্য। বইটির জন্য এক চমৎকার প্রচ্ছদ বানিয়ে দিয়েছেন বিতান চক্রবর্তী মহাশয়। তাঁর কাছেও কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আমার বোন রাজস্থান-বিশারদ, গবেষক ড. প্রত্যুষা দাশগুপ্ত এই বইয়ের নানার লেখার ঠিকুজি-কুলুজি নিয়ে দিয়েছেন যথাযথ পরামর্শ। এই কাজে সদা-সর্বদা উৎসাহ জুগিয়েছেন আমার স্ত্রী সুদেষ্ণা, মা-বাবা ও আমার একমাত্র পুত্র শ্রীমান রায়ান। বরাবর দক্ষ সমালোচক হিসেবে পাশে থেকেছেন আমার প্রিয়বন্ধু সুজন চট্টোপাধ্যায়, অঙ্গনা দত্ত, দীপিতা চ্যাটার্জী, সৌরীশ ঘোষ, অরুনিমা, স্নেহা, পিউ ও অন্যান্যরা। বইটি নিয়ে মনোগ্রাহী মুখবন্ধ লিখে দিয়ে চিরঋণী করেছেন প্রখ্যাত সুরকার ও সুরসাধক দেবজ্যোতি মিশ্র মহাশয়। আমাদের সকলের প্রিয় শিল্পী ‘মথুরা-নগরপতি’ দেবুদা, যার সুর ও সিনেমা-সংগীত এই প্রজন্মের কাছে চিরস্মরণীয় ও বিস্ময়। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা বা ধন্যবাদ শব্দগুলি বড়ো ছোটো মনে হয়। এঁনাদের সম্মিলিত ভরসাতেই হারানো সুর, কথা ও সংগীত নিয়ে এই যৎসামান্য প্রচেষ্টা তুলে ধরা হল পাঠকদের কাছে।
‘ভুলবে সে গান যদি’-র সূত্রে সত্যি সত্যিই ভুলে যাওয়া সেই সুরের সামান্য রেশটুকু কাউকে যদি সামান্য হলেও অনুরণিত, অনুপ্রাণিত করে তবেই এই প্রচেষ্টা সার্থক বলে মনে করব। এইটুকুই বলা। আর যা কিছু অনুচ্চারিত তা রাখা থাকল এই বইয়ের ছত্রে, ছত্রে। বাকিটা সময়ের হাতে।
প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত
দিল্লী, জানুয়ারি, ২০২০
Leave a Reply