ভাদুড়ি-সমগ্র ১ – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
প্রথম প্রকাশ : কলকাতা পুস্তকমেলা জানুয়ারি ২০০৬, মাঘ ১৪১২
প্রচ্ছদ : রঞ্জন দত্ত
.
রহস্য-কাহিনি পড়তে যাঁদের ভাল লাগে, এবং যাঁদের নিরন্তর তাগাদায় ভাদুড়িমশাইয়ের এই কীর্তি-কাহিনিগুলি এক সময়ে ফি-বছর আমাকে লিখতে হয়েছিল, তাঁদের সকলের জন্য
.
লেখকের কথা
দেশি-বিদেশি রহস্য-কাহিনি পড়েছি প্রচুর, কিন্তু লিখতে কখনও ইচ্ছা করেনি। অনিচ্ছার আড় প্রথম ভাঙেন আমার আযৌবন বন্ধু শ্রীরমাপদ চৌধুরি। তিনি তখন রবিবাসরীয় ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’র সম্পাদক। আমাকে দিয়ে একরকম জোর করেই তিনি গুটিকয়েক রহস্য-গল্প লিখিয়ে নেন। তারপরে আর অনেক দিন ও-পথে পা বাড়াইনি। শেষে বঙ্গাব্দের গত শতকের নব্বইয়ের দশকে দৈনিক বর্তমান পত্রিকার রবিবাসরীয় বিভাগের সম্পাদিকা শ্রীমতী কাকলি চক্রবর্তীর নিরন্তর তাগাদায় ফের রহস্য-কাহিনি লিখতে বসি।
গল্প নয়, উপন্যাস। ভাদুড়িমশাই যার নায়ক। তাগাদা চলে বছরের পর বছর। যা অগ্রাহ্য করার উপায় ছিল না। ফলে বছরের পর বছর, একটার পর একটা ভাদুড়ি-কাহিনি বেরোতে থাকে। দেখতে-দেখতে অনেকগুলি উপন্যাস লেখা হয়ে যায়। গ্রন্থাকারে সেগুলি প্রকাশিতও হয়েছে। এখন দে’জ পাবলিশিং-এর শ্রীসুধাংশুশেখর দে উদ্যোগী হয়েছেন সেই উপন্যাসগুলিকে একত্র করে ‘ভাদুড়ি-সমগ্র’ নামে প্রকাশ করতে। তাঁকে ধন্যবাদ।
উপন্যাসগুলি গ্রন্থাকারে যে-ক্রমে প্রকাশিত হয়েছিল, এখানেও সেই ক্রম অনুসৃত হল। শুধু একটি ক্ষেত্র ছাড়া। আমার প্রথম রহস্য-উপন্যাস ‘মুকুন্দপুরের মনসা’। এটি যখন লিখি, ভাদুড়ি-সিরিজের পাঠকদের অনেকেরই প্রিয় চরিত্র সদানন্দ বসুর তখনও আবির্ভাব ঘটেনি। তাই, গ্রন্থাকারে প্রকাশের হিসেবে দ্বিতীয় হওয়া সত্ত্বেও এখানে ওটিকেই প্রথমে রাখা হল।
পরিশেষে একটি কথা না-বললেই নয়। উপন্যাসগুলি পুরোপুরি কল্পনাপ্রসূত হলেও ভাদুড়িমশাইকে কিন্তু কাল্পনিক চরিত্র বলা যাচ্ছে না। চরিত্রটিকে তৈরি করেছি আমারই এক শ্রদ্ধেয় বন্ধুর আদলে। কাহিনিগুলি পড়তে-পড়তে কি একবারও তাঁর মনে হবে যে, তিনি আত্মপ্রতিকৃতি দেখছেন? আমার জানা নেই।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
জানুয়ারি, ২০০৬
Leave a Reply