পদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস – খগেন্দ্রনাথ ভৌমিক
পদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস – খগেন্দ্রনাথ ভৌমিক।
.
[ সংগৃহীত পদবীসমূহ পশ্চিমবঙ্গ ও বাঙ্গালাদেশ ছাড়াও অন্ধ্র, আসাম, উড়িষ্যা, উত্তরপ্রদেশ, কনৌজ, কেরালা, গুজরাট, ছোটনাগপুর, তামিলনাড়ু,, দিল্লী, নেপাল, বিহার, মহারাষ্ট্র, মহীশূর, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, সাঁওতাল পরগণা, সিংভূম ও হরিয়ানায় বসবাসকারী কতিপয় জাতির লোকদের দ্বারা ব্যবহৃত। ]
সংকলন কাল ইং ১৯৭৫-১৯৮২
প্রকাশক – মিত্রলোকে’র পক্ষে
শ্রীনিশিকান্ত মজুমদার
প্রচ্ছদ-শিল্পী : শ্রীহরিপদ দাস
প্রথম প্রকাশ – অক্ষয়তৃতীয়া, ১৩৮৯
উৎসর্গ
যাঁরা সমাজ-চিন্তায় পূর্বগামী পথিক
*
হিন্দু জাতির ক্ষয়িষ্ণুতারোধে যুগ যুগ ধরে যাঁরা
সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন
*
সেই সব জীবিত ও মৃত, জানা ও অজানা মনীষিবৃন্দের
উদ্দেশে
শ্রদ্ধাঞ্জলি
***
গ্রন্থকার
ভূমিকা
বাঙালী হিন্দুর নামের দুটি অংশ থাকে : একটি ব্যক্তিগত নাম, অপরটি বংশগত নাম। দ্বিতীয়টি শেষে বসে এবং তাকে উপনাম বলা যায়। এই উপনামটি বংশকে চিহ্নিত করে। কিন্তু তার উৎপত্তি নানাভাবে ঘটেছে। কোথাও পূর্বপুরুষের অতীতের বৃত্তি অনুসারে, কোথাও সরকার প্রদত্ত খেতাব অনুসারে, কোথাও শিক্ষাগত যোগ্যতাসূচক উপাধি অনুসারে। বর্তমানকালে বৃত্তিসূচক উপনাম ব্যক্তি বিশেষের পেশা সূচিত করে না; কারণ অর্থনৈতিক বিন্যাসের পরিবর্তন হেতু পৈতৃক পেশা সাধারণত উত্তরপুরুষ ত্যাগ করে। আবার দেখা যায় একই উপনাম বিভিন্ন বৃত্তিসূচক জাতির মানুষ ব্যবহার করে। এইভাবে উপনামের জটিলতা অত্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে গেছে।
আলোচ্য গ্রন্থের লেখক শ্রীখগেন্দ্র নাথ ভৌমিক এই জটিল বিষয় সম্বন্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ আলোচনা করেছেন। কাজটি যে কত কঠিন তা সহজেই বোঝা যায়। তিনি কঠোর পরিশ্রম করে উপনামগুলি সংগ্রহ করে, তাদের বিজ্ঞান সম্মত শ্রেণীতে সাজিয়েছেন। তালিকাগুলিতে বিভিন্ন নীতি অনুসারে উপনামের বিন্যাস দেখিয়েছেন। সবগুলি তালিকা জড়িয়ে পূর্ণ চিত্রটি পাওয়া যাবে। ‘খ’ চিহ্নিত তালিকায় সকল উপনাম পাওয়া যাবে। এটি সর্বাপেক্ষা ব্যাপক তালিকা। ‘গ’ চিহ্নিত তালিকায় প্রতি বৃত্তিভিত্তিক জাতির তলায় তার অন্তর্ভুক্ত সকল উপনাম পাওয়া যাবে। অন্যগুলি পরিপূরক তথ্য স্থাপন করে। যেমন ‘ঘ’ তালিকায় একই উপনাম (লেখকের পরিভাষায় পদবীতে) কতগুলি বৃত্তিভিত্তিক জাতি ব্যবহার করে তা দেখান হয়েছে। যেমন, রায় উপাধি ব্রাহ্মণ, বৈদ্য, কায়স্থ, বর্ণ বণিক, নমঃশূদ্র প্রভৃতি ব্যবহার করে। তা দেখায় অনেক ক্ষেত্রে উপনামের সাহায্যে বর্তমানে আর বংশের আভিজাত্যের পরিচয় মেলে না।
লেখক ঠিকই বলেছেন যে উপনামের ব্যবহার তুলে দিলে হয়ত জাতিভেদ সম্বন্ধে সচেতনতা উঠে যায়। কিন্তু তার যে একটি ব্যবহার যে নাই, তা নয়। তা ব্যক্তিকে তার পরিবারের সঙ্গে সংযুক্ত করে। দ্বিতীয়ত, রক্ষণশীল মনোভাব এ বিষয় এত প্রবল যে বলপূর্বক ছাড়া এমন নিষেধাত্মক বিধি প্রয়োগ করা যাবে না।
সে যাই হক, গ্রন্থকার যে একটি দূরূহ কাজ সাফল্যের সহিত সম্পাদন করেছেন তা সন্দেহাতীত। এই তথ্য-সমৃদ্ধ গ্রন্থখানি সমাজতত্ত্ব বিষয়ক গবেষণায় একটি মূল্যবান সংযোজন হিসাবে স্বীকৃতি পাবার যোগ্য।
হিরন্ময় বন্দোপাধ্যায়
.
গ্রন্থকারের নিবেদন
আমার অনুসন্ধিৎসাই এই “পদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস” গবেষণার মূল উৎস। পদবীর দ্বারা জাতি নির্দিষ্ট করার ফলাফল, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঠিক না হওয়ার ব্যাপারে আমার কিঞ্চিৎ অভিজ্ঞতা ছিল। এ বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা বাড়ল যে কয়টি ঘটনায়। তার মধ্যে প্রথমটি হল : এক সময় তফসিলী সম্প্রদায়ের উন্নতিকল্পে গঠিত একটি সংস্থা ‘কর্মকার’ পদবীধারী জনৈক ব্যক্তিকে তফসিলী সম্প্রদায়ের যথোচিত পরিচয়পত্র দিতে অস্বীকার করেন। সংস্থার বক্তব্য, কর্মকার তফসিলভুক্ত সম্প্রদায় নয় এবং কর্মকার তফসিলভুক্ত কোন সম্প্রদায়ের পদবীও নয়। কিন্তু পরে সেই ব্যক্তি প্রমাণ করেন তাঁর সম্প্রদায় তফসিলভুক্ত। এবং ‘কর্মকার’ তাঁর গৃহীত পদবী। অতঃপর তিনি কর্মকার এই পদবীতেই সেই সংস্থা থেকে তাঁর প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্রও সংগ্রহ করেন। আর এই সূত্রেই তিনি জেলাশাসকের কাছ থেকেও ঐ কর্মকার পদবীতেই পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে তফসিল সম্প্রদায়ের সুযোগ-সুবিধাও পান। দ্বিতীয় ঘটনা : এক ব্যক্তির ‘মুখার্জী’ পদবী। এই মুখার্জী পদবী সাধারণত ব্রাহ্মণের পদবী। কিন্তু এই ‘মুখার্জী’ পদবীধারী ব্যক্তি তফসিলী সম্প্রদায়ভুক্ত। তিনি এই প্রমাণের ভিত্তিতে তফসিলী সম্প্রদায়ের সর্বপ্রকার সহযোগ-সুবিধা বৈধভাবেই লাভ করেন। তৃতীয় ঘটনা : সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের স্বাক্ষরিত যথাযথ তফসিলী পরিচয়পত্রের জন্য, প্রয়োজনীয় সুপারিশের ভারপ্রাপ্ত পশ্চিমবঙ্গের একটি সরকারী সংস্থার জনৈক অফিসার কর্তৃক ‘কর্মকার’, ‘পোদ্দার’, ‘মিত্র’ প্রভৃতি পদবীধারী তফসিলী সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তফসিলী পরিচয়পত্রের জন্য পারিশে আপত্তি উত্থাপন।
উল্লেখিত ঘটনাগুলির সঙ্গেই বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বন্ধু বান্ধবদের বিভিন্ন পদবীর মধ্যে তাঁদের নির্দিষ্ট সম্প্রদায় সঠিক বুঝতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়ায় এবং দৈনিক পত্রিকাগুলিতে পদবী পরিবর্তনের বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি দেখে, পদবী বিষয়ে বিস্তারিত জানার আগ্রহেই প্রাসঙ্গিক তথ্যাদিসহ পদবীগুলির সংকলনের সিদ্ধান্ত নিই।
এই সংকলনের জন্য গবেষণা করতে গিয়ে নিঃসন্দেহে আমার সীমিত জ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আজও পদবীর মধ্যে যাঁরা সম্প্রদায় খুঁজতে চেষ্টা করেন এ সংকলন তাঁদের সঠিক পথের সন্ধান দিতে পারলেই আমি আমার শ্রম সার্থক বলে মনে করব। এ কথা বলে রাখা বোধ হয় সঙ্গত হবে যে, আমি কোন মৌলিক গবেষণা করিনি, বিভিন্ন গ্রন্থ, পত্রপত্রিকা, সংস্থা ও অনেক সহৃদয় ব্যক্তির সহযোগিতায় এ সংকলনকে রূপে দিতে সমর্থ হয়েছি। সুধী পাঠকবৃন্দ এ সংকলনের ভুলত্রুটি সংশোধনে এবং অদ্যাবধি আমার অপরিজ্ঞাত সংশ্লিষ্ট তথ্যের সংযোজনে, সহযোগিতা করবেন বলে আমি আশা করি।
কৃতজ্ঞতাপাশে অনেকেই আমাকে বেঁধেছেন—তাঁদের মধ্যে সর্বাগ্রে উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক-সাংবাদিক অগ্রজপ্রতিম শ্রী অতীন্দ্র হোম রায়, কৈলাশহর মহকুমা নিবাসী ত্রিপুরার রাজপণ্ডিত রামনিধি বিশারদ মহাশয়ের সংযোগ্য পৌত্র অগ্রজপ্রতিম সহকর্মী শ্রী জনার্দন ভট্টাচার্য, মরমী বন্ধ, আদিত্যকুমার রায়, কবি নিশিকান্ত মজুমদার ও সহানুধ্যায়ী নিরঞ্জন বাগছী, যাঁদের সক্রিয় সাহায্য ও সহযোগিতা আমার এই বহু বছরের শ্রমকে কিছুটা পূর্ণতা দিয়েছে, এবং আমাকে ধন্য করেছে।
নমস্কারান্তে
বিনীত শ্রী খগেন্দ্র নাথ ভৌমিক
অক্ষয়তৃতীয়া
১৩৮৯ সাল
কলিকাতা
.
অৰ্পণ
আমার সহধর্মিনী, স্নেহের ভ্রাতা, ভ্রাতৃবধূ, পত্র ও ভ্রাতুষ্পুত্রীগণ
যাদের হাতে দিলাম —
শ্রীমতী জ্যোৎস্না; নরেন, উপেন; গৌরী, দীপ্তি;
বাপী, বাপু, বাপ্পা, বাপন;
রত্না, সীমা, স্বপ্না, শিপ্রা।
গ্রন্থকার
.
“মিত্রলোক”-এর নিবেদন
শ্রীখগেন্দ্রনাথ ভৌমিকের “পদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস” “মিত্রলোক” সংস্থার প্রথম প্রকাশিত বই। ব্যবসায়িক সাফল্যের দৃষ্টিকোণ থেকে এমন একটি বইয়ের সম্ভাবনা, সাধারণ উপন্যাসের তুলনায় হয়ত উজ্জল নয়। তথাপি “মিত্রলোক” এই বইটি নির্বাচন করেছেন, তার গুণগত বৈশিষ্ট্য এবং লেখকের গভীর নিষ্ঠা ও দীর্ঘ বছরের নিরলস সাধনার কথা চিন্তা করে। বস্তুতঃ “মিত্রলোক” মনে করেন, এই বই প্রকাশ করার সুযোগ পেয়ে, তাঁরা নিজেরাই ধন্য হয়েছেন। প্রতিভা, পরিশ্রম এবং পরম নিষ্ঠা—এই তিনটি চরিত্রের সমাবেশ যেখানে ঘটে, সেখানে সৃষ্টির চরিত্রের মধ্যেও উত্তরণ ঘটতে বাধ্য। এই বইটিতে যে তা ঘটেছে, তা পাঠক সমাজ একটু লক্ষ্য করলেই বঝতে পারবেন।
শ্রীভৌমিক, আমাদের সমাজ জীবনে, ব্যক্তি পরিচয়ের মৌল সমস্যায় একটা মূল শেকড় ধরে টান দিয়েছেন। পদবী দিয়েই সাধারণতঃ চলে আসছে জাতির উঁচু নীচু বিচার। এবং আমরা জানি, জাতের উঁচু-নীচুর মানদণ্ডে সামাজিক মর্যাদা নির্ণীত হয়ে থাকে। লেখকের লেখার বিচারের ক্ষেত্রেও সঙ্কীর্ণ-চিত্ত সম্পাদক সমাজ, এই বিচারবোধ থেকে বহু ক্ষেত্রে মক্ত নন। অথচ বর্তমান গ্রন্থকার নির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করেছেন, এই পদবী নির্ণয় পদ্ধতিটি বহু সময় সম্পূর্ণ ভুল অর্থ ও নির্দেশ করে। যেমন, “মুখার্জী” পদবী ব্রাহ্মণের। কিন্তু “মুখার্জী” পদবী কোন কোন তফসিলী সম্প্রদায়েরও।
মানুষের পরিচয়, পদবীর পদচিহ্ন ধরে নির্ণীত হওয়া, এ যুগের কাছে এক ধরণের পাপ। এটা অবাঞ্ছিত এবং অনভিপ্রেত। কিন্তু আমাদের সমাজে, এই আধুনিকতার অত্যুচ্চ কলরবের মধ্যেও, আজও তা অব্যাহত। কোন শ্রেণী, কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা কোন প্রতিষ্ঠিত সমাজসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ কখনো শোনা যায় না। এই অচলায়তনের মধ্যে, শ্রীভৌমিকের “পদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস” এক বলিষ্ঠ এবং বিজ্ঞানসম্মত প্রতিবাদ। “মিত্রলোক” এই দৃষ্টিকোণ থেকেই বইটি প্রকাশে আগ্রহী হয়েছেন।
শ্রীভৌমিকের এই গবেষণার মধ্যে আগামীকালের জন্য সমাজ চিন্তার প্রভত উপাদান সঞ্চিত থাকল। পরবর্তী কোন গবেষক এই সম্পদ থেকেই তাঁর সাধনার উপাদান সংগ্রহ করতে পারবেন।
“মিত্রলোক”-এর এই প্রথম বইটি বুদ্ধিজীবী এবং সাধারণ পাঠক সমাজে সমাদৃত হলে, আমরা নিজেদের ধন্য মনে করব।
মৃত্যুঞ্জয় মাইতি
[ “মিত্রলোক” সংস্থার পক্ষে ]
***
‘উপাধিঃ ব্যাধিরেবচ’–এই রকম একটা কথা আছে। উপাধি আপনাকে গ্রাস করেছে—সুতরাং আপনি উপাধিগ্রস্ত অর্থাৎ ব্যাধিগ্রস্ত। কিন্তু বই পড়ে চমক লেগেছে— ভেবেছি, এই যুগেও কি এমন সরস গবেষণা সম্ভব? দূর থেকে আপনার গভীর পাণ্ডিত্যকে, আপনার অচল নিষ্ঠাকে অভিনন্দন জানাই।
ডঃ মুরারি মোহন সেন
***
শ্রীখগেন্দ্র নাথ ভৌমিক বিরচিত ‘পদবীর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস’ একখানি অতিশয় মূল্যবান গবেষণাধর্মী পুস্তক। … গ্রন্থকার একটি অত্যন্ত শ্রমসাধ্য অভিনব সমাজতাত্ত্বিক অনসন্ধান ও গবেষণার কাজের সূত্রপাত করলেন তাঁর এই গ্রন্থখানি প্রণয়নের দ্বারা। এজন্য তাঁকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানাই। যতদূরে আমার জানা, ঠিক এই বিষয়ে ইতঃ পূর্বে এত ব্যাপক ও অনুশীলনের ফলাফল গ্রথিত করে এমন পূর্ণাঙ্গ বই লেখা হয়নি। সেই হিসাবে শ্রীযুক্ত ভৌমিক মহাশয়কে এক্ষেত্রে পথিকৃত মনে করা যেতে পারে। কাজেই অন্যবিধ কৃতিত্ব-গৌরবের সঙ্গে সঙ্গে পথিকৃত্যের গৌরবও তাঁর প্রাপ্য।
নারায়ণ চৌধুরী
***
বর্ণ-জাতি ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক মর্যাদার উত্তরণের উপায় হিসাবে পদবী পরিবর্তনের বহু দৃষ্টান্ত ভারতবর্ষের, বিশেষতঃ বঙ্গদেশের, হিন্দু সমাজে পরিলক্ষিত হয়। ১৮৭২ খৃষ্টাব্দের আদমসুমারীর পর থেকে পদবী পরিবর্তনের সূত্রে বিভিন্ন পরিবার, জাতি, উপজাতি বা জাতি-খণ্ডের সামাজিক উত্তরণের দৃষ্টান্ত আরও বহুল পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়। নানা ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে বাঙ্গালী হিন্দু জাতি সমূহের অসংখ্য পদবী তাদের মৌলিক যোগসূত্র হারিয়েছে। শ্রীখগেন্দ্রনাথ ভৌমিক বহু পরিশ্রমের ভিত্তিতে প্রায় সাড়ে চার হাজার পদবী / খেতাব / উপাধির সংকলন করেছেন। এ ছাড়া ১০০টি জাতি কর্তৃক ব্যবহৃত পদবীর স্বতন্ত্র তালিকা সংগ্রহ করে তাদের উৎপত্তি বিষয়ে চিন্তিত সমাজ—তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেছেন। আশাকরি বাঙ্গালী হিন্দু সমাজের গঠন ও রূপান্তর বিষয়ে আগ্রহী সকল পাঠক ও গবেষক এই সবিন্যস্ত ও চিন্তিত ব্যাপক সংকলন সযত্নে পাঠ করবেন।
ডঃ সরজিৎ সিংহ
Leave a Reply