নীরেন ভাদুড়ি সমগ্র ১ – সৌভিক চক্রবর্তী
নীরেন ভাদুড়ি সমগ্র – প্রথম খণ্ড – সৌভিক চক্রবর্তী
প্রথম প্রকাশ এপ্রিল ২০২১
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য্য
.
উৎসর্গ
কলেজ স্কোয়্যার থেকে ঠাণ্ডা হাওয়া আসত। তাতে মিশে থাকত ছাতিম ফুলের সুবাস। প্রেসিডেন্সি কলেজের সামনের রাস্তা ভেসে যেত সোডিয়াম ভেপার ল্যাম্পের হলদে আলোয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারভাঙা ভবনের কান ঘেঁষে চাঁদ উঠত। ছাদের ওপর আয়েসি বেড়ালের মতো গড়াগড়ি খেত জ্যোৎস্না। দু’রকমের আলো আর বাতাসের ককটেল গলা পর্যন্ত খেয়ে আমরা ছাদেই শুয়ে পড়তাম। প্রচণ্ড নেশা হতো। পৃথিবীর কোনও স্কচের সাধ্য নেই তার সাথে পাল্লা দেয়।
এ বইখানা তোমায় দিলাম হে হিন্দু হস্টেল।
.
ভূমিকা
নীরেন্দ্রনাথ ভাদুড়িকে নিয়ে যে একটা সমগ্র হয়ে যাবে এ আমি কখনওই ভাবিনি। আলাদা করে ভাদুড়ি মশায়কে নিয়ে গল্প লেখার ভাবনাও আমার ছিল না। আমার প্রথম উপন্যাস নিকষছায়ায় ভাদুড়ি মশায় চরিত্রটির অবতারণা হয়। পাঠক মহলে বড়ই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এই অশীতিপর বৃদ্ধ। ক্ষুরধার চাহনি, ঋজু শালবৃক্ষের মতো চেহারা, সারা শরীরে থাবা বসাতে না পেরে বার্ধক্য জখম করে দিয়ে গেছে পা দু’টিকে।
নিকষছায়া পড়ার পরে অনেকেই আমাকে অনুরোধ জানাতে থাকেন ভাদুড়ি মশায়কে নিয়ে সিরিজ লেখবার জন্য। তখন পুজোর সময়, আমি চটকপুরে বেড়াতে গেছি। সেখানে গিয়েই আমার মাথায় একটি কাহিনির প্লট আসে এবং আমি সিদ্ধান্ত নিই এ কাহিনি ভাদুড়ি মশায়কে নিয়েই লিখব। লিখে ফেলি ‘পর্ণশবরীর শাপ’। এ কাহিনিটিও পাঠকের কাছে সমাদৃত হয়। অনেকে ভাদুড়ি মশায়ের অতীত জানতে আগ্রহী হন। তখন আমি লিখি ‘অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ’। একটি লোকজ বিশ্বাস এ কাহিনির পটভূমি। আমার সৌভাগ্য, এ কাহিনিটিও পাঠক পছন্দ করেন। সেই সময়েই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন দীপ প্রকাশনীর কর্ণধার দীপ্তেন্দু মন্ডল। অত্যন্ত সজ্জন এই মানুষটি বলেন, ‘তোমার এই গল্পগুলো আমায় দাও।’
যখন প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়তাম তখন বই কিনতে গেলেই চোখে পড়ত দীপ প্রকাশনীর বিপণিটি। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম সে দিকে। তাই দীপদা’র এই প্রস্তাব আমার কাছে অভাবনীয়। আমি আপ্লুত হয়ে সম্মতি জানালাম এবং যথারীতি দৈনন্দিন কাজের চাপে বইয়ের ব্যাপারটায় ঢিলেমি করতে লাগলাম। কিন্তু দীপদা’র কোনও ঢিলেমি নেই, নেই কোনও আলস্য। কী জানি তিনি কী দেখেছিলেন এই লেখাগুলোর মধ্যে, নিয়ম করে আমায় তাগাদা করতে লাগলেন। কখনও অনুরোধ, কখনও অভিভাবকসুলভ শাসন করে আমার থেকে লেখাগুলি আদায় করে নিলেন। তাই আজ যে নীরেন ভাদুড়ি সমগ্র প্রথম খণ্ড বেরচ্ছে তার সিংহভাগ কৃতিত্ব দীপদা’র। তিনি উদ্যোগী না হলে আমার অন্য সব লেখার মতোই এ লেখাও বাক্সবন্দী হয়ে পড়ে থাকত। দীপদা’কে ধন্যবাদ দেব না, বরং নিরঞ্জন আগারের হাঁসের ডিমের ডেভিল খাওয়াব আর প্যারামাউন্টের ডাবের শরবৎ। আর হ্যাঁ, যে দিন এই খাওয়াদাওয়া হবে সে দিন আমার স্ত্রী প্রজ্ঞা রায়চৌধুরীকেও সঙ্গে নেব। কারণ তিনি না থাকলে আমি হয়তো লেখালিখিকে আমার জীবিকা হিসেবে বেছে নিতে পারতাম না।
যাই হোক, এ বইতে তিনটি কাহিনি রয়েছে। একটি উপন্যাস এবং দু’টি বড়গল্প। তিনটিই ভিন্ন স্বাদের। তবে সে স্বাদ আদৌ উতরেছে কি না সে তো পাঠক বলতে পারবেন। পাঠকের কাছে আমার অনুরোধ, সূচির শেষে থাকলেও নিকষছায়া উপন্যাসটিই আগে পড়া বাঞ্ছনীয়। তা হলে অন্য কাহিনি দু’টির রসাস্বাদনে সুবিধে হবে।
এ বার একটি কৈফিয়ত দেওয়ার আছে। এই মুহূর্তে তো বাংলায় তন্ত্রনির্ভর কাহিনির ছড়াছড়ি। তা হলে নীরেন ভাদুড়ি সমগ্র পাঠককে আলাদা কী উপহার দেবে? উত্তর, নতুনত্ব। এত দিন ধরে বাংলায় যা তন্ত্রনির্ভর লেখালিখি হয়েছে নীরেন ভাদুড়ি সমগ্র দাঁড়িয়ে আছে তার বিপরীতে। আমি বিশ্বাস করি, অলৌকিকেরও লজিক থাকে। তাই এই কাহিনিগুলি হয়ে উঠেছে আদ্যন্ত লজিক্যাল, অলৌকিকের অ্যান্টিথিসিস। এ কাহিনিগুলি ভাল না মন্দ সে তো আলোচনাসাপেক্ষ, তবে এগুলি যে একেবারে নতুন সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আশা করি, পাঠক এই নতুন রেসিপির সমাদর করবেন।
সৌভিক চক্রবর্তী
Rima Saha
Can you guys please bring “Neeren Bhaduri Samagra 2nd volume” by Souvik Chakraborty? It is a request. Thank You.
Ushosi
Please give us the 2nd part of Niren Bhaduri it’s an earnest request the 3 stories of 1st part is awesome
Ankan banerjee
Please guys bring total Neeren Bhaduri series