ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল – চিত্রা দেব
ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল – চিত্রা দেব
.
ঠাকুরবাড়ির মহিলাদের নিয়ে এখনও অনেক কৌতূহল আমাদের মনে জমে আছে। বাংলার নারীজাগরণের কথা ভালভাবে জানতে গিয়ে দেখলম, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির মহিলারা প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। একক বা সম্মিলিত উভয়ভাবেই তাঁরা এসেছেন অন্ধকার ঘরে হঠাৎ প্রদীপ জেলে দেবার মতো। পুরনো কাগজপত্র নেড়েচেড়ে দেখা যাচ্ছে, ঠাকুরবাড়ির মেয়েদের সম্বন্ধে এখনও অনেক কিছুই আমরা জানি না, অথচ ছাড়ানো-ছিটানো হলেও তথ্যের অভাব নেই। তাই এখানে বাংলার সংস্কৃতি জগতে তাদের যথার্থ ভূমিকা, নির্ণয় করার একটা প্রাথমিক চেষ্টা করা হল।
আলোচ্য বিষয়টি গুরুগম্ভীর ও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমরা কিছুটা সরস করে বলার চেষ্টা করেছি, যাতে সব ধরনের পাঠকই তা উপভোগ করতে পারেন। লেখাটি প্রথমে সংক্ষিপ্ত আকারে বার্ষিক সংখ্যা আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তখন অনেকের আগ্রহ ও অভিনন্দনে উৎসাহিত হয়ে বিষয়টিকে আরো পর্ণাঙ্গ করার ইচ্ছা জাগে। বর্তমান গ্রন্থ তারই ফসল।
এই গ্রন্থ পরিকল্পনার কথা সর্বপ্রথম স্ত্রীরমাপদ চৌধুরীকে জানালে তিনি আমাকে উৎসাহিত করে ব্যাপক অনুসন্ধানের নির্দেশ দান করেন। তাঁর আগ্রহ, সক্রিয় সাহায্য ও প্রয়োজনীয় উপদেশ না পেলে কোনদিনই এ গ্রন্থ লেখা সম্ভব হত না।
কাজে নেমে সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়েছি, যাঁদের নিয়ে লিখছি তাঁদের এবং তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে। গ্রন্থের শেষে তাঁদের নাম উল্লেখ করেছি বলে এখানে আর পুনরুক্তি করা হল না। তাঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তাঁরা এত অকৃপণভাবে সাহায্য না করলে বাংলার নারীজাগরণের এই ইতিহাস অলিখিত থেকে যেত। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রসদনে অবস্থিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যবহার করবার অনুমতি দান করেছেন উপাচার্য সুরজিৎ সিংহ মহাশয়।
গ্রন্থশেষে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির একটি বংশলতিকা দেওয়া হয়েছে। এই দীর্ঘ ও বিস্তৃত বংশলতিকা নির্মাণে সক্রিয় সাহায্য করেছেন ঠাকুরবাড়ির সকলেই। বিশেষভাবে সাহায্য পেয়েছি শ্রীকল্যাণি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। বংশলতিক বিন্যাসে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন শ্রীসঞ্জয় দে, এদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। যথাসম্ভব চেষ্টা সত্ত্বেও সমস্ত নাম সংগ্রহ করতে না পারায় বর্তমান সংস্করণে কিছু কিছু, অসম্পূর্ণতা রয়ে গেল। আশা রাখি, পরবর্তীকালে সেই এটি সংশোধন করে নেওয়া সম্ভব হবে।
চিত্রা দেব
Leave a Reply