জন-যাজক – সমরেশ মজুমদার
(সৌজন্যে – বইবিন্দু)
প্রথম প্রকাশ : আষাঢ় ১৩৭০
প্রকাশক : প্রবীর মিত্র, সাহিত্য প্রকাশ
প্রচ্ছদ : গৌতম রায়
.
কাহিনী সংক্ষেপ
বুজরুকি? নাকি এও এক ধরনের শোষণ? কোনও কাজ না করে কিছু লোক একজন ভগবান-ভগবান টাইপের মানুষকে খাড়া করে লক্ষ-লক্ষ ভক্তকে এক্সপ্লয়েট করে যাচ্ছে প্রতিদিন। আবার তাদের সঙ্গে রেষারেষি করে আরও কিছু মানুষ আরও একাধিক দেবতা মার্কা লোককে নিয়ে বৃদ্ধি করে যাচ্ছে শিষ্যসংখ্যা। একই হিন্দুধর্ম, অথচ কত-না চমৎকার ব্যবসা একে কেন্দ্র করে। যোগী, মহর্ষি, আচার্য, বাবা, ব্রহ্মচারী— এমনতর প্রথম সারির গুরুর সংখ্যাই ভারতবর্ষে কম পক্ষে দশ জন।
হবে-নাই বা কেন। ভারতের মানুষ আসলে ধর্মভীরু। অথচ ধর্মের চেহারাটা সকলের কাছে তেমন স্পষ্ট নয়। যা অলৌকিক, তাই যেন যুক্ত ধর্মের সঙ্গে। ফলে, সেইসব মানুষেরাই বেশি করে গুরুচরণ শরণ করেন, যাঁরা বাস্তবে আত্মবিশ্বাসহীন। যাঁরা ভাবেন, গুরু তাঁর সিদ্ধাই দিয়ে ভক্তকে এনে দেবেন অনর্জিত সাফল্য কি অপ্রাপ্য সুযোগ। অসম্ভবকে করে তুলবেন সম্ভবপর। গুরুরাও নেন এই দুর্বলতার সুযোগ। ব্যতিক্রম কি নেই? নিশ্চিত রয়েছে। কিন্তু ভণ্ডামির দিকটাই বেশি করে চোখে পড়ে।
সমরেশ মজুমদার তাঁর এই দুঃসাহসিক উপন্যাসে ধর্মের নামে ভণ্ডামির এই চেহারাটাকেই যেন খোলাখুলিভাবে দেখাতে চেয়েছেন। আর সেইসূত্রে শুনিয়েছেন একটি আশ্রমকে কেন্দ্র করে তীব্র কৌতূহলকর এক কাহিনী।
এ-উপন্যাস শুধু মুগ্ধই করে না, চমকে দেয়। সেইসঙ্গে নতুনভাবে ভাবতেও করে উদ্বুদ্ধ।
Bookworm Bangladesh
সমরেশ মজুমদারের ‘জন-যাজক’ একটি গভীর ভাবনা এবং সামাজিক সংকটের চিত্র। বইটির মধ্যে রয়েছে মানুষের আত্মপরিচয়ের খোঁজ এবং সমাজের অমানবিকতার বিরুদ্ধে এক ধরনের বিদ্রোহ। লেখক চরিত্রগুলোর মধ্যে এমন এক রহস্যময়তা সৃষ্টি করেছেন, যা পাঠককে টেনে নেয় বইয়ের ভেতরে। মজুমদারের বিশ্লেষণ ক্ষমতা এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ পাঠকদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটায়। ‘জন-যাজক’ শুধু একটি গল্প নয়, এটি এক ধরনের সমাজমনস্ক অভিজ্ঞান, যা সমাজের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দেয়। ATReads, বাংলাদেশের বইপোকা সমাজ হিসেবে, এমন বইয়ের মাধ্যমে পাঠকদের চিন্তাভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দেয়।