জংলিমহল – বুদ্ধদেব গুহ (অখণ্ড)
প্রথম প্রকাশ : কলকাতা পুস্তকমেলা, ফেব্রুয়ারি ২০০৭
পরিবর্ধিত নতুন অখণ্ড সংস্করণ জানুয়ারি ২০২০
.
অশোক দাশগুপ্ত
প্রিয়বরেষু
লালাদা
.
কৈফিয়ত
‘জঙ্গল মহল’—এর ‘উত্তরপর্ব’ লেখার প্রস্তাবটি পেয়ে অবধি উত্তেজিত এবং কিঞ্চিৎ বিপদগ্রস্তও বোধ করেছি। ‘জঙ্গল মহল’—এর মতো বইয়ের উত্তরপর্ব লেখা তো সহজ কথা নয়। আমি বদলে গেছি, আমার ভাষা বদলে গেছে, দেখার চোখও বদলে গেছে। যাওয়াই স্বাভাবিক। রসিক পাঠকমাত্রই এ কথা বুঝবেন আশা করি।
‘জঙ্গল মহল’ আনন্দবাজার রবিবাসরীয়তে প্রকাশিত কয়েকটি মজার গল্পের সঙ্কলন। শিকারের পটভূমিতে লেখা হলেও গল্পগুলি যতখানি ‘শিকার’ সম্বন্ধীয়, তার চেয়ে বেশি ‘স্বীকার’ সম্বন্ধীয়। এই গল্পগুলিতে শিকারিকে নায়ক করা হয়নি, বরং তাকে নিয়ে রঙ্গ—রসিকতাই করা হয়েছে। বাংলা ভাষাতে ঠিক এ ধরনের লেখা সম্ভবত খুব বেশি লেখা হয়নি। এই গল্পগুলি একের পর এক লেখা সম্ভব হয়েছিল রবিবাসরীয় সম্পাদক শ্রদ্ধেয় রমাপদ চৌধুরির আগ্রহ এবং বদান্যতায়। এই সব গল্প লিখেই বাঙালি পাঠকসমাজের কাছে আমার পরিচিতি এবং এ জন্যে আনন্দবাজার এবং রমাপদবাবুর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।
বইটি প্রথম প্রকাশ করেন শ্রদ্ধেয় মনোজ বসুর অংশীদার শ্রদ্ধেয় শ্রীশচীন মুখোপাধ্যায়, তাঁর প্রকাশনা সংস্থা ‘বাক সাহিত্য’ থেকে। সম্ভবত সত্তর দশকের গোড়াতে অথবা ষাটের দশকের শেষে। প্রথম সংস্করণের কোনও কপি আমার কাছে নেই। তাই সঠিক বলা সম্ভব নয়। ওটিই আমার প্রথম গদ্যগ্রন্থ। ‘জঙ্গল মহল’—এ গ্রন্থিত গল্পগুলি যখন রবিবাসরীয় আনন্দবাজারে প্রকাশিত হয়, তখনও প্রত্যেকটি গল্পের অলঙ্করণ করিয়েছিলেন শ্রদ্ধেয় সম্পাদক শ্রীরমাপদ চৌধুরি মশায় শ্রদ্ধেয় শ্রীসুধীর মৈত্র মশায়কে দিয়েই। ওই বইয়ের প্রচ্ছদটিও তাঁরই করা। আমার মনে হয়, ‘জঙ্গল মহল’—এ আমার লেখা গল্পগুলির চেয়ে সুধীরবাবুর প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ গুণমানে অনেকই উঁচু।
‘জঙ্গল মহল’ লিখেছিলাম জঙ্গলের কিছু কিছু মজাদার ঘটনা নিয়ে। এবং সেই বই অত্যন্তই সমাদৃতও হয়েছিল। আজও অনেকে বলেন যে, ‘জঙ্গল মহল’ আমার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বই। এই ‘জংলি মহল’ লিখছি কোনও কোনও মানুষকে নিয়ে, অবশ্যই বন—জঙ্গলের পটভূমিতে যাঁদের সঙ্গে পরিচয় এবং যাবতীয় লেনদেন। সেই সব মানুষের কেউ কেউ ‘জঙ্গল মহল’—এও উপস্থিত আছেন। এবং আছেন আমার আত্মজৈবনিক লেখা, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত ‘বনজ্যোৎস্নায়, সবুজ অন্ধকারে’র প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে। সে কারণেই এই লেখাতে কিছু কিছু পুনরোক্তি ঘটে যাওয়া স্বাভাবিক। আশা করি, পাঠককুল এই দোষ ক্ষমা করে নেবেন নিজেদের রসবোধের গুণে।
যাঁদের কথা এই রচনাতে আছে সেই সব মানুষের মধ্যে অধিকাংশই আজ আর ইহলোকে নেই। তাই এই লেখা, চলে—যাওয়া সেই সব মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও স্মৃতিতর্পণও বটে।
জঙ্গল মহলের উত্তরপর্ব লেখা হল না, কারণ, তা লেখা অসম্ভব। এই লেখার নাম দিলাম ‘জংলি মহল’
বুদ্ধদেব গুহ
৭/২/২০০৭
সূচিপত্র
- গোপাল
- সুব্রত অথবা ‘সুরবোতো’ অথবা ‘খোকাবাবু’
- ভুতো
- চাঁদুবাবু
- মিস্টার আরেকটু খান এবং এ বি কাকু
- লালজি
- কেনেথ এডওয়ার্ড জনসন
- জনসন, ডঃ বোস এবং দুর্গা রায়
- মহম্মদ নাজিম, হাজারিবাগী
- বিমলবাবু এবং আবার চাঁদুবাবু
- আবারও শিলিগুড়ির দুর্গা রায় এবং সারান্ডার বিষ্টু দত্ত
- গোপেন্দ্রকৃষ্ণ বাগচী
- আবারও কেনেথ এডওয়ার্ড জনসন, জিম ক্যালান এবং প্রসঙ্গত আইভ্যান স্যুরিটা
Leave a Reply