এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন
এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন
অনুবাদ – মাকসুদুজ্জামান খান
.
প্রিয় পাঠক,
দ্য দা ভিঞ্চি কোডকে এত বড় বেস্ট সেলার বানানোর জন্য আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন। আপনার হাতে যে বইটা এখন আছে এটা দ্য দা ভিঞ্চি কোডের আগের পর্ব। লুভর মিউজিয়ামে তোলপাড় করা রবার্ট ল্যাঙডনের অভিযানের এক বছর আগের কাহিনী এটা। এখানে সে অভিযান চালায় ভ্যাটিকান সিটিতে আর তামাম নোম মহানগরীতে।
এ্যাঞ্জেলস এ্যান্ড ডেমনসই হল আমার উপন্যাস যেখানে আমি জন্ম দিয়েছি শিল্পপ্রিয়, সিম্বলজি, কোড, গুপ্তসংঘ আর ভাল-মন্দের মাঝামাঝি বিচরণ করা চরিত্র রবার্ট ল্যাঙডনকে। দা ভিঞ্চির পেইন্টিংয়ের কাহিনী আপনারা যে উত্তেজনা আর আগ্রহ নিয়ে পড়েছেন সেটা এখানেও পাবেন বলেই আমার বিশ্বাস। আপনার শিল্পানুরাগ থাক আর নাই থাক, শিল্পের অনেক অজানা অধ্যায়ের খোঁজ পাবেন এখানে, পাবেন নানা ধাঁধা, পুরনোদিনের না জানা কথা, সর্বোপরি-অযাচিত মোড়।
আমি আন্তরিকভাবেই আশা করি আপনি আমার প্রথম রবার্ট ল্যাঙডন ততটা মজা নিয়ে পড়বেন যতটা নিয়ে আমি লিখেছি।
উষ্ণ আহ্বান এবং ধন্যবাদ সহ
ড্যান ব্রাউন
———–
তথ্য
বিশ্বের সবচে বড় সায়েন্টিফিক রিসার্চ ফ্যাসিলিটি সুইজারল্যান্ডের কনসিল ইউরোপিন পুর লা রিসার্চে নিউক্লিয়ারে (সার্ন) সম্প্রতি এন্টিম্যাটারের প্রথম কণা তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। সাধারণ বস্তুর সাথে প্রতিবস্তুর একটাই পার্থক্য, উভয়ে সব দিক দিয়ে এক রকম, শুধু এদের গডন বিপরীত। মানবজাতির জানা সবচে শক্তিমান এনার্জি সোর্স এই এন্টিম্যাটার। এটা একশোভাগ কাজে লাগে যেখানে পারমাণবিক ফিশনে কাজের হার মাত্র ১.৫% এবং জ্বালানী তেলের ক্ষেত্রে সেটা আরো অনেক অনেক কম।
প্রতিবস্তুর নেই কোন দূষণ, নেই তেজস্ক্রিয়তা আর এর মাত্র একটা ফোঁটা নিউ ইয়র্ক সিটির সারাদিনের বিদ্যুৎ চাহিদা মিটাতে পারে।
এখানে, যাই হোক, একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে…
এন্টিম্যাটার চরম অস্থিতিশীল। এটা বিস্ফোরিত হয় যে কোন বস্তুর এমনকি বাতাসের সংস্পর্শে এলেও। এক গ্রাম এন্টিম্যাটার পুরো বিশ কিলোটন পারমাণবিক বোমার সমান কাজ করে–হিরোশিমায় ফেলা বোমার মত।
এখন পর্যন্ত প্রতিবস্তু খুব কম পরিমাণে তৈরি করা গেছে। একত্রে কয়েকটা পরমাণুর বেশি নয়। কিন্তু সার্ন দেয়াল ভেঙে দিয়েছে। তাদের সুবিশাল এন্টিপ্রোটন ডিসিলারেটর আরো বেশি পরিমাণে এটা তৈরিতে সহায়তা করবে।
একটা প্রশ্ন সবাইকে জ্বালাতন করে অহর্নিশি–এই নতুন মতার উৎস কি সারা পৃথিবীতে মঙ্গলবার্তা বয়ে আনবে? নাকি ঘটাবে কুরুক্ষেত্র?
———–
অথরস নোট
এখানে দেখানো সব শিল্পকর্ম, কবরখানা, সুড়ঙ্গ আর রোমের স্থাপত্যকলার বিবরণ একেবারে বাস্তব। (যেমন বাস্তব তাদের অবস্থিতি।) আজও হয়ত তাদের দেখা পাওয়া যাবে। ইলুমিনেটির গোপন ব্রাদারহুডের কথাও সত্যি।
———-
বইটিতে অনুবাদক তার নিজস্ব ধারনার বানান ব্যবহার করায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে চোখে লাগতে পারে, কিন্তু মুল কাহিনীর সাথে মিশে গেলে আশা করা যায় সেটুকু সমস্যা হবে না। বিশেষ ক রে শীতল বানান কে শিতল লেখা অত্যন্ত দৃষ্টি কটু হয়েছে।
———-
পূর্বকথা
জ্বলন্ত মাংসের ঝলসানো গন্ধ ঠিক ঠিক টের পায় পদার্থবিদ লিওনার্দো ট্রো। সে জানে, এটা তারই দেহের মাংস। সে আতঙ্কে বিস্ফারিত নেত্রে তাকায় উপরে ঝুঁকে আসা কালো অবয়বের দিকে, কী চাও তুমি?
লা চিয়াভে, বলল খসখসে, অস্পষ্ট সুরে কালো লোকটা, দ্য পাসওয়ার্ড। কিন্তু… আমি—
লোকটা আরো চেপে ধরল সাদাটে ধাতব গডনটা। আরো পুড়ে গেল লিওনার্দোর শরীরের মাংস, বুকের মাংস। জান্তব ব্যথায় চিৎকার করে উঠল সে। ফুটন্ত মাংসের পুড়ে যাবার শব্দ শোনা যাচ্ছে স্পষ্ট।
আবার যাতনায় বীভত্স চিৎকার করে উঠল ভেট্রা। কোন পাসওয়ার্ড নেই! বলল সে, টের পেল, আস্তে ধীরে সচেতনতার একেবারে শেষপ্রান্তে চলে যাচ্ছে সে।
একনজর তাকাল তার দিকে লোকটা। নে এ্যাভেলো পিউরা। আমি সে ভয়ই পাচ্ছিলাম।
জ্ঞান ধরে রাখার জন্য যুঝছে ভেট্রা; কিন্তু এগিয়ে আসছে অন্ধকার। তার একমাত্র শান্তনা এই যে, হামলাকারী কখনোই তার ইচ্ছা পূরণ করতে পারবে না। কখনোই পাবে না জিনিসটা।
টের পেল সে, ঝুকে আসছে লোকটা। হাতের ভঙ্গি অনেক বেশি ভয়াবহ।
শিউরে উঠল প্রবীণ বিজ্ঞানী।
ফর দ্য লাভ অব গড! গলা ফাটানো চিৎকার জুড়ে দিল সে। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে।
Leave a Reply