[লেখক/প্রকাশকের আপত্তির কারণে পুরো বইটি দেয়া গেল না/বইটি সরিয়ে নেয়া হলো]
আর্সেন লুপাঁ ভার্সেস হার্লক শোমস
আর্সেন লুগাঁ সিরিজ-২
মূল: মরিস লেবলাঁ
অনুবাদ: কুদরতে জাহান, ডিউক জন
প্রকাশকাল – প্রথম প্রকাশ: বইমেলা, ২০২৩
প্রকাশক – বেনজিন প্রকাশন
উৎসর্গ
বুকস্ট্রিট এবং এর সকল কলাকুশলীকে।
ভূমিকা
ফরাসি লেখক মরিস লেবলাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত জনপ্রিয় চরিত্র আর্সেন লুপাঁর সাথে আমরা সিরিজের প্রথম বই ‘আর্সেন লুপাঁ জেন্টলম্যান বার্গলার’ বইয়েই পরিচিত হয়েছি। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে আসা ‘Lupin’ সিরিজের মাধ্যমেও অনেকেই পরিচিত অবশ্য।
যাইহোক, সিরিজের প্রথম বই ‘আর্সেন লুপাঁ জেন্টলম্যান বার্গলার-এর সর্বশেষ গল্প ‘শার্লক হোমস অ্যারাইভস টু লেট’। এ ছোটোগল্পের মাধ্যমেই শার্লকের সাথে লুপাঁর দ্বৈরথের দেখা পেয়েছেন আপনারা। কিন্তু, দুনিয়ার সেরা গোয়েন্দার সাথে দুনিয়ার সেরা তস্করের দ্বৈরথ এত অল্পতে কি তৃপ্তি মেটে?
মরিস লেবলার ভাবনাতেও হয়তো তা-ই ছিল। মূলত ১৯০৫ সালে লুপাঁর প্রথম গল্প ‘দ্য অ্যারেস্ট অভ আর্সেন লুপাঁ’ লেখার পর থেকেই লেবলাঁর মাথায় এ দুই চরিত্রকে একত্রে নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলতে থাকে, যার রূপদান হয় ‘শার্লক হোমস অ্যারাইভস টু লেট’ গল্পে। এরপর তিনি চিন্তা করলেন এ দুই মহান শিল্পীর দ্বৈরথকে আরো বৃহৎ পরিসরে পাঠকদের কাছে তুলে ধরতে। সে পরিকল্পনা থেকেই সৃষ্টি হলো ‘আর্সেন লুপাঁ ভার্সেস হার্লক শোমস’ বইটি। বইয়ে মোট দুটো উপন্যাসিকা রয়েছে- দ্য ব্লন্ড লেডি ও দ্য জুইশ ল্যাম্প। দুটোতেই শার্লক আর লুপাঁর মধ্যে চলেছে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর, যা আপনারা উপভোগ করবেন পুরোদমেই। এটুকু বিশ্বাস আছে।
আচ্ছা, বইয়ের নামে শার্লক হোমসের নাম পাল্টে হার্লক শোমস হয়ে গেল কেন?— এমন কৌতুহল কাজ করছে না আপনাদের মনে? তাহলে একটু খোলাসা করেই বলি।
১৯০৬ সালে শার্লক হোমস অ্যারাইভস টু লেট’ গল্পটি ফরাসি ম্যাগাজিন Je Sais Tout -এ প্রকাশিত হয়। বিশ্বখ্যাত দুই শিল্পীর টক্করের এ গল্পটা বেশ জনপ্রিয় হয় তখন। একই রহস্য একই ব্লু-এর মাধ্যমে দুজনই সমাধান করেন। কিন্তু লুপাঁ অবশ্য সর্বদা হোমসের থেকে এগিয়েই থাকে। আর গল্পের শেষে তো হোমসের ঘড়ি চুরি করে আবার হোমসকে ফেরত দেয়, সাথে দেয় তার বিজনেস কার্ড। যদিও এ ফেরত দেয়ার মধ্যে একটা সূক্ষ্ণ অপমানের ছোঁয়াও থাকে। হোমসকে সময়ের গুরুত্ব/মূল্য বুঝানোর একটা সূক্ষ্ণ মেসেজ থাকে এ ঘটনায়। যেহেতু গল্পটা লেবলাঁর লেখা, তাই হোমসের প্রতি কিছুটা অবহেলা আর লুপাঁর প্রতি কিছুটা পক্ষপাতিত্ব থাকাটা স্বাভাবিক। এ বইয়ের দুই উপন্যাসেও (বিশেষ করে শুরুর দিকে) সেটা উপলব্ধি করতে পারবেন আপনারা।
যাইহোক, এটা দেখে রেগে গেলেন শার্লক হোমসের স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েল। তিনি মামলা ঠুকে দিলেন মরিস লেবলাঁর বিরুদ্ধে। তারপর নানা ঘটনা ঘটলো। অবশেষে মরিস লেবলাঁ তার বইয়ে শার্লকের চরিত্রের নাম পাল্টে দিতে বাধ্য হলেন। ‘শার্লক হোমস’ হয়ে গেল ‘হার্লক শোমস’, ‘ওয়াটসন’ হয়ে গেল ‘উইলসন’ আর ‘২২১/বি বেকার স্ট্রিট’ হয়ে গেল ‘২১৯, পার্কার স্ট্রিট’।
এ বইয়ের পরও লুপাঁ সিরিজের আরো দুটো বইতে শার্লক হোমসের আগমন ঘটিয়েছেন মরিস লেবলাঁ— দ্য হলো নিডল এবং ৮১৩। সেগুলোর অনুবাদও প্রকাশিত হবে শীঘ্রই।
তো, এই হলো নাম পরিবর্তনের ঘটনা।
.
শার্লক হোমস আর লুপাঁর তুলনামূলক আলোচনা করলে বলা যায়, দুজনই সম্পূৰ্ণ ভিন্নধর্মী দুই চরিত্র। একজন গোয়েন্দা, আরেকজন চোর। তবে, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা আর সিদ্ধান্ত গ্রহণে দুজনই সমানে সমান। এ বইয়েই তা টের পাবেন আপনারা।
কুদরতে জাহান আপু এবং ডিউক জন দাদা দারুণ অনুবাদক। সাবলীল এবং সু- অনুবাদের ক্ষেত্রে দুজনই সেরা। এই বইয়েও তারা নিজেদের সেরাটাই দিয়েছেন। তাই আমার কাজও হয়ে গেছে অত্যন্ত সহজ।
সম্পাদনার ক্ষেত্রে মূল অনুবাদকের টোন এবং লেখার স্টাইল ঠিক রেখেছি আমি। অনুবাদকের নিজস্বতায় হাত দেয়া হয়নি। এসব ঠিকঠাক রেখে পাঠকদের কাছে বইটাকে সুপাঠ্য হিসেবে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি আমি। বইয়ে কোনো অসংগতি থাকলে তার দায়ভার একান্তই আমার। সম্পাদক হিসেবে অতি নবীন আমি, অনুবাদ বইয়ে সম্পাদনা এই প্রথম। তাই কোনো ত্রুটি থাকলে সেটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখার অনুরোধ রইলো পাঠকদের প্রতি।
.
বাংলা ভাষায় পাঠকদের কাছে আর্সেন লুপাঁ আবারও ফিরে আসছে। বইটি উপভোগ করেন। দুনিয়া সেরা গোয়েন্দার সাথে দুনিয়া সেরা তস্করের দ্বৈরথ অবলোকন করুন। এতেই বইটি সফল হবে।
নিঝুম
লেখক, প্রকাশক, সম্পাদক
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
আকুয়া, ময়মনসিংহ।
দারাশিকো (darashiko.com)
গ্রেট। আর্সেন লুঁপার সাথে পরিচিত হবার জন্য মুখিয়ে আছি। শার্লক হোমস যে অন্য লেখকের লেখাতেও উপস্থিত হয়েছিল সেটা জানা ছিল না। শার্লকের কারণেই লুঁপা পড়ার আগ্রহ বোধ করছি। লুপিন সিরিজটাও দেখার ইচ্ছা আছে। ধন্যবাদ ব্রাদার!