অমৃত কুম্ভের সন্ধানে – কালকূট (সমরেশ বসু)
প্রথম প্রকাশ : অক্টোবর, ১৯৫৪
.
অনেক আশা নিয়ে যারা গিয়েছিল,
আর কোন আশা নিয়ে কোনদিন ফিরে আসবে না
তাদের উদ্দেশে—
– কালকূট
.
বিচিত্র
অনেক বিচিত্রের মধ্যে মানুষের চেয়ে বিচিত্র তো আর কোনোদিন দেখিনি। সে বিচিত্রের মাঝেই আমার অপরূপের দর্শন ঘটেছে। ভেবেছিলাম, একদিন মানুষ ছাড়িয়ে, অন্য কোনোখানে আমার সেই অপরূপের দেখা পাব।
সব মানুষই একজন নন। আর-একজন আছেন তাঁর মধ্যে। একজন, যিনি কাজ করেন বাঁচবার জন্যে, অর্থের জন্যে গলদঘর্ম দিবানিশি যিনি আহার মৈথুন-সন্তানপালনের মহৎ কর্তব্যে ব্যাপৃত প্রায় সর্বক্ষণ, এই জটিল সংসারে যাঁর অনেক সংশয়, ভয় প্রতি পদে পদে। অবিশ্বাস, সন্দেহ, বিবাদ, এই সব নিয়ে যে মানুষ, তাঁর মধ্যে আছেন আর-একজন—যিনি কবি, সাহিত্যিক, পাঠক, শিল্পী, গায়ক ভাবুক। এক কথায়, যিনি রসপিপাসু। হয়তো তিনি লেখেন না, লেখা পড়ে হাসেন, কাঁদেন, মুগ্ধ হন। গায়ক নন, গান শুনে সুরের মাঝে হারিয়ে যান। মানুষের এই অনুভূতির তীব্রক্ষণে, সে বড় একলা। এ একাকিত্বের বেদনা যত গভীর, আনন্দ তেমনি তীব্র।
বুঝতেও পারি নে, মানুষের এ একাকী মুহূর্তেই, তাঁর ঘরবাঁধা মন মানুষের হাটের মাঝে যায় হারিয়ে। তখন তো সে আর ঘরের নয়, পরের। তখন সে যত একলা, তত দোকলা। এতে মনের কোনো অলৌকিকত্বের ছলনা নেই। আমাদের জীবনধারণের ক্ষেত্রে এ একাকিত্ব অকাজের খেলা হয়ে আছে। এ অনুভূতি যখন এক ফাঁকে মনের দরজা খুলে ছড়িয়ে পড়ে রক্তকোষে, চারিয়ে যায় শরীরে, তখন আমরা সেই হাট-করে-খোলা মনটি নিয়ে সশরীরেই যাই মেলায়। পথে ঘাটে মাঠে যাই। দশজনের মিছিলের মধ্যে, সকলের ভয় নিয়ে কখনো আসি পিছিয়ে। কখনো ঝাঁপ দিই সাহসে বুক বেঁধে।
যখন কোনো নিঃশব্দ নিরালা মুহূর্তে, বিস্ময়ে বেদনায় আনন্দে লক্ষ করেছি, এক প্রসন্নময়ের আবির্ভাব ঘটেছে আমার চোখের সামনে, তখনই অবাক হয়ে দেখেছি, সে আর কেউ নয়, মানুষ! তাকে ছাড়িয়ে কোনো অপরূপের দর্শন আমার ঘটল না। তাই আমার সব নমস্কার মিলিয়ে, এক নমস্কার নিয়ে ফিরেছি বারংবার তারই দরজায়।
যে প্রসঙ্গে এত কথা উঠল, সেই কথা বলি। বইটি বেরুবার পর অনেক মানুষের অনেক চিঠি পেয়েছি। কেউ দিয়েছেন ‘দেশ’ পত্রিকার ঠিকানায়, কেউ প্রকাশকের ঠিকানায়। জনে জনে জবাব দেওয়া সম্ভবপর হয়নি। আজো ঠিক তেমনি করে জবাব দিতে বসিনি। সব মিলিয়ে কিছু কথা জমেছে মনে। সেটুকু না লিখে পারলাম না। যে পাঠক-পাঠিকারা পত্র দিয়ে কালকূটকে অভিনন্দিত করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ। এই নতুন সংস্করণ তাঁদের হাতে পৌঁছুবে কিনা জানিনে। যাঁদের হাতে পৌঁছবে, তাঁদের এবং তাঁদের হাত দিয়ে আগের পাঠক-পাঠিকার উদ্দেশে এই বিচিত্র কথা উৎস করছি।
যত বিচিত্র মানুষ, তত বিচিত্র তার পত্র। এ দেশে মহৎ মানুষের পত্রগুচ্ছ ছাপানো হয়। আমার পাওয়া পত্রগুচ্ছ তার চেয়ে কম মহৎ নয়। এ পত্রগুচ্ছ এক-একটি বিচিত্র দরজা খুলে দিয়েছে আমার সামনে। সব পত্রে নিরঙ্কুশ প্রশংসা, বিস্ময়, অভিনন্দন নেই। অনেক কৌতূহল জিজ্ঞাসা, সংশয়ও আছে। এমনকি ভয়ও আছে।
একজন অনেক কথার পর লিখেছেন, ‘আমি বৃদ্ধ এবং অন্ধ। চোখে দেখতে পাইনে। আমার ভাইপো বইটি পড়ে শুনিয়েছে। তাকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছি পত্রটি।’
পত্রটি না দিয়ে পারলুম না। ‘আমার সব অন্ধত্ব ঘুচে গেল ভাই।’
পত্রটি পড়ে বুঝেছি, আর যাই হোক, তিনি আমার চেয়ে চক্ষুষ্মান।
অনেকে জিজ্ঞাসা করেছেন, যাদের মেলায় দেখেছি, তাদের কারুর দেখা ফিরে এসে পেয়েছি কিনা। পেয়েছি বৈকি। সঙ্গমসৈকত তো আজ শূন্য। সবাই আমরা ফিরে এসেছি জনপদে। আমরা যে সবাই জনপদেরই অধিবাসী। এখান থেকেই তো সবাই গিয়েছিলাম সেখানে। ফিরে এসেছি, দেখতে পেয়েছি, শুধু চিনতে পারিনে। সেই মহামেলায় দেখা পাওয়া, আর এখানে দেখা পাওয়া, দুয়ে যে অনেক তফাত।
ঘুরে ফিরে একটি নৈতিক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে কোনো কোনো পত্রে। হবেই। সেইজন্যই মানুষ বড় বিচিত্র। পত্রের লেখক-লেখিকার অধিকার সম্পর্কে আমি প্রশ্ন তুলতে পারিনে। কিন্তু সব কথার জবাব দেওয়া যায় না, সব মানুষই জানেন।
যা লিখেছি, তার চেয়ে বেশি লেখার কিছু আমার এই মুহূর্তে নেই। বলেছি, শ্যামা স্বৈরিণী নয়। যদি কেউ তা ভাবেন, সে নৈতিক দায়িত্ব আমারই। তাকে বাইরে প্রকাশ করেছি আমি।
একবার ফিরছিলাম সুদূর উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ থেকে, এক মেল ট্রেনে। ছোটো কামরাটিতে কুল্যে তিনটি পরিবার। তার মধ্যে একটি অবাঙালি। আমি ফিরছিলাম একটি বাঙালি পরিবারের বন্ধু হিসাবে। অপর বাঙালি পরিবারের মধ্যে ছিলেন স্বামী-স্ত্রী।
স্ত্রীটি রূপসী নন। কিন্তু সব মিলিয়ে বাইশ-চব্বিশে ভদ্রমহিলার একটি অদ্ভুত চটক ছিল। তাঁর বড় বড় চোখের চাউনি কেমন অলস, কিন্তু একটি বিচিত্র হাসি ঝিকিমিকি করছিল চোখের কোণে। তাঁর ঈশৎ স্থূল ঠোঁটে বিষণ্নতার মধ্যে কেমন একটা অদ্ভুত হাসির বিদ্যুৎ-চমক ছিল। স্বামী ভদ্রলোককে বেশ নিরীহ মনে হচ্ছিল। জানালা দিয়ে এর চা এগিয়ে দেন, ওর জল এগিয়ে দেন। একে জায়গা ছেড়ে দেন তো আর-একজনের শোবার জন্যে উঠে দাঁড়ান। কিন্তু ব্যস্তবাগীশ নন। ওর মধ্যেই, ভদ্রলোককে আবার সব বিষয়ে কেমন যেন নিরাসক্ত মনে হচ্ছিল।
একটি জিনিস চোখে পড়ল অনেকক্ষণ পর। আমাদের পরিবারের মধ্যে এক যুবক ছিলেন। তিনি জামাই। জনাকয়েক যুবতী শাশুড়ির তত্ত্বাবধানে তিনি কলকাতায় ফিরছিলেন। সেই যুবকের সঙ্গে দেখলাম, ও-পক্ষের স্ত্রীটির কখন বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। সব ফেলে ওই দুটি!
কেমন করে, কখন এ বন্ধুত্ব হয়েছে, কেউ খবর রাখেনি। বোধহয় ওঁরা দুজনেও রাখেননি। যখন চোখে পড়ল, তখন দেখি, ভদ্রমহিলার ঠোঁটের চমক, চোখের ঝিকিমিকি, কখন আর-এক ভাবের দরজা দিয়েছে খুলে। এমন দুটির বন্ধুত্ব হলে যা হয়। দজ্জাল কথাটি বাংলায় গালাগাল কিনা, সঠিক জানিনে। তবু বলছি, ভদ্রমহিলা দজ্জাল সুন্দরী নন। তাই তাঁর আবেগের মধ্যে কিছু ভাবপ্রবণতার লক্ষণ দেখেছিলাম।
শাশুড়িদের চোখে যে না পড়েছিল তা নয়। তবে, নিজেদের মেয়েটির রূপ ও গুণ সম্পর্কে আস্থা এত বেশি ছিল যে, জামাইয়ের জন্য তাঁদের ভয় ছিল না একটুও। তবু, মানুষের মন তো! চোখের মণিগুলি চোখের কোণ থেকে আর মাঝে গেল না তাদের।
স্বামী ভদ্রলোকের ব্যাপারটি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। আমাদের মনে যাই থাক, সবটুকুই খুব সহজ চোখে দেখবার চেষ্টা করছিলাম। স্বামীও বোধ হয় তাই। কেননা, উনি যেন সকলের চেয়ে সহজ। ওর মধ্যেই মাঝে মাঝে স্ত্রীর সঙ্গে দু-একটা কথা যে বলছেন, তা নয়। কখনো বাইরে তাকাচ্ছেন, কাগজ পড়ছেন, চা খাচ্ছেন। কিন্তু ঝিমুচ্ছিলেন না একদম।
বলতে গেলে জামাইবাবু আমারও জামাইবাবুই। আলাপও কম হয়নি। এখন চোখাচোখি হলেও তিনি তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন। সে বেচারীরও যে অস্বস্তি কম ছিল, তা নয়। কিন্তু সেও তো মানুষ! ভদ্রমহিলার চোখ দুটিও কম নয়। তার উপরে তাঁর চোখের বিষন্ন ছায়ার কোল ঘেঁষে যে সামান্য একটু রোদের ঝিকিমিকি ছিল, এখন সেই দুটি চোখের পুরোটিই তৃতীয়ার চাঁদের মতো বঙ্কিম ও রহস্যময় হয়ে উঠেছিল।
সন্ধ্যার পর খাওয়া, শোয়া ইত্যাদির জন্য সকলকেই কিছু পরিমাণে এলোমেলো হতে হল। সেই ফাঁকে একবার শুনতে পেলাম ভদ্রমহিলা বলছেন, বউ বুঝি খুব রূপসী আর গুণী!
জামাই বললেন, সেটা তাহলে আপনাকে গিয়ে দেখে আসতে হয়। ভদ্রমহিলা : আমাকে? কেন, আপনার মুখ দেখেই তো বুঝতে পারছি। জামাই : মুখ দেখলেই সব বোঝা যায় বুঝি?
ভদ্রমহিলা : নয়?
বলে, ওঁরা দুজনের দিকে কয়েক মুহূর্ত তাকিয়ে রইলেন।
তারপর রাত হয়েছে। কতরাত কে জানে! কোনোদিনই গাড়িতে সহজে ঘুমোতে পারিনি। ভদ্রমহিলা শাশুড়িদের এক পাশে আধশোয়া হয়েছিলেন। জামাই আমার মাথার কাছে কনুই রেখে অন্য বেঞ্চিতে আধশোয়া। তার পাশে স্বামী ভদ্রলোক।
শুনলাম ভদ্রমহিলা বলছিলেন, মনে আছে তো?
জামাই বললেন, নোটবুকে লিখে রেখেছি।
যদি একেবারেই মনে না থাকে, সেই ভয়ে, না? ভদ্রমহিলার গলায় একটু অস্ফুট হাসির নিক্কণ
জামাই : না, মনে থাকবে। তবু লিখে রাখা উচিত।
ভদ্রমহিলা : তবে, কাগজে। আবার একটু হাসি।
একটু নীরবতা। আবার ভদ্রমহিলা বললেন, আসবেন তো সত্যি? সত্যি আসব।
মিথ্যে বলছেন না?
ভদ্রমহিলার গলায় কী ছিল জানিনে। মনে হয়েছিল যেন যুগযুগান্ত ধরে শুধু মিছে কথাই শুনে এসেছেন। জামাই বললেন, মিথ্যে বলিনে।
তারপর চুপ। শুধু চাকা আর লাইনের ঘষাঘষি। ওঁদের স্তব্ধতা দেখে, চোখ চাইলাম।
আশ্চর্য! দেখলাম, জামাই অন্যদিকে মুখ করে আছেন চিন্তিতভাবে। ভদ্রমহিলা জামাইয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বিষন্ন হাসি নিয়ে। আমার চোখের ভুল কিনা জানিনে, ভদ্রমহিলার চোখ দুটি ভেজা মনে হয়েছিল।
তারপর হাওড়া স্টেশন। স্বামী-স্ত্রী নামলেন। ওঁদের নিতে লোক এসেছে। গাড়ি এসেছে নিতে। জামাই আমি দুজনেই মালপত্র নামাতে ব্যস্ত। শাশুড়িদের ধমকানিতে জামাই একটু বেশি ব্যস্ত।
মালপত্র নামানো হল। সেই স্বামী-স্ত্রী তখনো দাঁড়িয়ে। স্ত্রী এগিয়ে এলেন জামাইয়ের কাছে। বললেন, হয়েছে?
জামাই চমকে বললেন, অ্যাঁ? তারপর ভদ্রমহিলাকে দেখে লজ্জিত হয়ে বললেন, হ্যাঁ হয়েছে।
ভদ্রমহিলা বললেন, তা হলে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে জামাইকে একবার বিষণ্ণ ও বিস্মিত হতে দেখলাম। যেন এতক্ষণে সে বুঝতে পেরেছে, এই মেয়েটির সঙ্গে তার এক বিচিত্র ভাবের বন্ধন হয়েছে। সে মেয়েটির বাসি মুখের দিকে তাকিয়ে কেবল বলল, আচ্ছা। ভদ্রমহিলা আমাদের দিকে ফিরেও একবার হেসে নমস্কার করলেন। স্বামীও তাই করলেন। জামাইকে বললেন, আসবেন কিন্তু।
শেষ। তবু শেষ নয়। কেবলি ভাবছিলাম, একে কী বলে? কখন এর শুরু আর কখন শেষ, কেউ জানে না। অনুসন্ধানে ধরা পড়তে পারে।
কিন্তু এ ঘটনা নিয়ে বলার তো কিছু নেই।
বেশ কিছুদিন পর জামাইকে হঠাৎ একটি গলির মোড়ের কাছে দেখে থমকে দাঁড়ালাম।
মনে পড়ে গেল সেই ঠিকানাটি, গলিটা দেখে। মনে পড়ল মেয়েটির মুখ। গলি দেখিয়ে বললাম জামাইকে, এ পাড়ায় গেছলে বুঝি!
জামাই অবাক! বললেন, না তো! তোমার বাড়ি কি এ পাড়ায়? বললাম, না। আমি যাব একটু অন্যদিকে। একটু সন্দেহ করেই জিজ্ঞেস করলাম, তবে তুমি এদিকে কোথায়?
জামাই নির্বিকার সরল ভাবেই বললেন, আগের বাসটা ধরতে পারিনি। একটু এগিয়ে এসে দাঁড়িয়েছি বাসের অপেক্ষায়
তবু জামাইয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, এ পাড়ায় তোমার কেউ নেই?
জামাই আকাশ থেকে পড়লেন। গলিটার দিকে একবার ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললেন, কই মনে পড়ছে না তো!
থাকবে কেন। কাগজের লেখা তো! হেসে বিদায় নিলাম। হয়তো কোনো একদিন ওঁর মনে পড়বে। তবু আমার সারা মন দুর্বল অভিমানে ভরে উঠল মনে মনে বললাম, মিথ্যুক! তুমি বড় মিথ্যুক!
কিন্তু তারপর! তারপর আর কী বলব! সকলের সব পত্রের, সব প্রীতি, ভালোবাসা, ধন্যবাদ, আশীর্বাদ আমি মাথা পেতে ও বুক ভরে নিয়েছি। কলকাতার কোনো এক অখ্যাত গলির বাঁকা-চোরা অক্ষরের সে বিচিত্র প্রশ্নভরা চিঠি থেকে শুরু করে, সেই দৃষ্টিহীন ভদ্রলোক এবং লক্ষ্ণৌয়ের লেখিকার সনেট, বহু পত্রের জবাবের প্রত্যাশাহীন অভিনন্দনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
কিন্তু অনেকের আন্ কথার কী জবাব দেব! তাতে শুধু আবাড়ির রাস্তাই খোলা হয়ে যাবে।
তাই সে সব কথা রইল। আমার নীরব হওয়ার পালা অনেক আগেই এসেছে। নীরবই ছিলাম। মাঝে এই বিচিত্রের গানটুকু বোধহয় বাকি ছিল গাওয়া। আমাকে বেশি বলিয়ে লাভ নেই। সব কথা বলা ও শোনা যায় না।
আর-একটি কথা। বিচিত্র লিখতে বসেছি, একটি প্যাকেট এলো ডাকে। খুলে দেখি ‘ডাকের চিঠি’, পশুপতি ভট্টাচার্য মহাশয়ের নতুন বই। পাতা খুলে দেখি, চিঠি লিখেছেন কালকূটকে, প্রথম পাতাতেই ‘অমৃত কুম্ভের সন্ধানে’র জন্যে বিস্ময় ও ভালোবাসা জানিয়ে। এ পর্যন্ত এই আমার শেষ চিঠি। কৃতজ্ঞতা জানাই তাঁকে।
মাঝে মাঝে রাস্তায় ট্রেনে এক শ্রেণীর অবাঙালি মেয়েকে ভিক্ষে করতে দেখলে ঝুসির সর্বনাশীকে মনে পড়ে। বুকে হাত দিই। মানিব্যাগের জন্য দিই কিনা জানিনে।
লক্ষ্মীদাসীর মূল গায়েনকে দেখতে পাই, চিনতে পারিনে। ভাবি, লক্ষ্মীদাসীর মন্দিরের রাধারানী আর তেমন করে হাসে কিনা।
যাকে দেখতে পাইনে চিনতেও পারিনে, সে তো আমার ভিতরের অন্ধকারেই ঢাকা রয়েছে। সেখানে আলো কোনোদিন পড়বে কিনা জানিনে।
—কালকূট
Leave a Reply