অথ সাঁওতাল কথা – বুদ্ধেশ্বর টুডু
(মহান সাঁওতালি পরম্পরার অনুসন্ধানে)
বিজয়ন প্রকাশনী
৩বি, সীতাকান্ত ব্যানার্জি লেন, কলকাতা
ATHA SANTAL KATHA
by Buddheswar Tudu
প্রথম প্রকাশ : ২০০০
প্রকাশক : সাধনা মুখোপাধ্যায়
৩বি, সীতাকান্ত ব্যানার্জি লেন কলকাতা
প্রচ্ছদ : সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়
আমার সর্ব কনিষ্ঠ
ভ্রাতা যাকে তার নামকরণ হবার আগেই আমি হারিয়েছি
তার অমর আত্মার পুণ্য স্মৃতির উদ্দেশ্যে।
মুখবন্ধ
অথ সাঁওতাল কথা (মহান সাঁওতালি পরম্পরার অনুসন্ধানে) এক মহান জাতির কথা বাস্তবের উপর ভিত্তি করে রচিত। উৎসাহী পাঠক-পাঠিকাদের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ, আমার কথায় যদি কারো বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকে, সাঁওতালরা অঙ্গ, বঙ্গ এবং কলিঙ্গর বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাদের মহান ঐতিহ্য এবং কৃষ্টি নিয়ে। ঐতিহ্য এবং কৃষ্টি যদিও অবলুপ্তিব পথে কিন্তু এখনো তার বেশ কিছু অবশিষ্ট আছে, অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে অনুসন্ধান করলে তার দেখা মিলবেই। সমাজের মূলস্রোতে আসার জন্য তারা সংগ্রামে অবিচল, কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে আজ স্বাধীনতার বয়স ৫০ অতিক্রান্ত অথচ একমাত্র সংরক্ষণ ছাড়া ভারতবর্ষের আদিবাসীদের জন্য আর কিছুই করা হয়নি। আবার সংরক্ষণের মাধ্যমে আদিবাসীদের উন্নয়নের চেয়ে ভোট হস্তগত করতেই রাজনৈতিক দলগুলি বেশি উৎসাহী। এক্ষেত্রে ইংরেজদের সঙ্গে এদের খুব একটা ফারাক নেই। এ প্রসঙ্গে W. W. Hunter এর মন্তব্য বোধহয় অপ্রাসঙ্গিক হবে না।
“While the fair skinned race which usurped the plains has become the favourite child of modern scholarship, the dark face primitive heritors of the soil have continued as we found them, uncared for, despised, hiding away among their immemorial mountains and forest”.
তথাকথিত সভ্যদের আধুনিক হবার পেছনে আছে ইংরেজদের পৃষ্ঠপোষকতা, তার কানাকড়ি যদি আদিবাসীরা পেত তাহলে অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াত আন্দাজ করা মুস্কিল। ইংরেজরা আদিবাসীদের খ্রীষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত করবার জন্য যতটা তৎপর ছিল, মানুষ করে তোলবার জন্য তাদের বিন্দুমাত্র প্রচেষ্টাও ছিল না। এ কথা W. W. Hunter এর মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার হয়ে উঠেছে, “In the hope that I may able to interest both the scholar and statesman in these lapsed races, I propose in the following chapter to set forth what I have been able to learn regarding the history, language, the manners, and the capabilities of the mountaineers of Beerbhoom, the scholar will find that their language and traditions throw an important light on a unwritten chapter, in the history of our race. Indian Statesman will discover that these children of the forest are not so utterly fallen away from the common wealth of nations as he has supposed, that they are prompted by the same motives of self interest, amenable to the reclaiming influences as other men, and that upon their capacity for civilisation the future extension of English enterprise in Bengal in a large measure depends.”
ভারতবর্ষের প্রকৃত ইতিহাস লুকিয়ে আছে এদের ভাষায়, আচার, আচরণে তাই তাকে জানা খুবই দরকার। আলোচ্য অথ সাঁওতাল কথা তারই এক ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র।
আমি যেমন দেখেছি, বুঝেছি সে ভাবেই এখানে তুলে ধরেছি, কিন্তু আমার দেখায় ভুল থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন, তবে অবশ্যই স্বাগত জানাব।
শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক পবিত্র সরকারকে বইটির একটি ভূমিকা লিখে দেবার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। শত ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি যে আমার অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন তার জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।
মান্যবর অমরজ্যোতি মুখোপাধ্যায়ের সহায়তায় বইটি পাঠকের হাতে তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত। তাই অমরজ্যোতি বাবুকেও ধন্যবাদ।
বুদ্ধেশ্বর টুডু
২৩ জানুয়ারি ২০০৪
সাঁত্ৰাগাছি
Leave a Reply