অখণ্ড ভারতবর্ষ – রাজা ভট্টাচার্য
অখণ্ড ভারতবর্ষ – রাজা ভট্টাচার্য
অখণ্ড সংস্করণ : জানুয়ারি ২০১৯
.
ভূমিকা
আমার অনেকদিনের একটা স্বপ্ন পূর্ণ হতে চলেছে এই বইমেলায়। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যহীন ভঙ্গীতে, ফেসবুকে লিখতে শুরু করেছিলাম ‘ভারতবর্ষ’। মস্ত আর বুড়ো এক দেশের সাধারণতম মানুষের ধুলোমাখা আখ্যান। মনের সুদূরতম প্রান্তেও এমন কোনও ধারণা ছিল না— এ লেখা এত মানুষ পড়বেন, বুকে তুলে নেবেন। অপ্রত্যাশিত আঘাতে ভেঙে-পড়া বন্ধুর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ‘ভারতবর্ষ’ খুঁজবেন কেউ— এ আমার কল্পনার অতীত ছিল। ভাবতেও পারিনি— গভীরতম অন্ধকার থেকে কেউ উঠে আসবেন এই বই পড়ে। প্রবাসী মানুষ এই বই যত্নে রেখে দেবেন তাঁর ল্যাপটপের ব্যাগে। ফলে বইপাড়ার গ্রন্থ-জহুরি সৌমেনদা যেদিন স্বয়ং জানাল, ‘ভারতবর্ষ’ দুই মলাটে নিয়ে আসার দায়িত্ব নিতে চলেছে সৌমেনদা নিজেই— আমি হাঁ হয়ে গিয়েছিলাম। আর বুকফার্ম সেই দায় যেচে ঘাড়ে নিয়েছে— জেনে সেই হাঁ আর বন্ধই হচ্ছিল না।
তারপর দুই খণ্ডে বেরুল ‘ভারতবর্ষ’। পড়লেন অজস্র মানুষ। ক্রমে লেখক হিসেবে যৎসামান্য পরিচিতি হলো আমার; অন্য অনেক বই এসে পড়ল। কিন্তু ওই যে গোড়াতেই বললাম— স্বপ্ন— ওইটে রয়েই গেল। এক খণ্ডে সব ‘ভারতবর্ষ’-গুলোকে আনা যায় না? এবারেও এগিয়ে এল সেই বুকফার্ম। এবারেও দুর্দান্ত প্রচ্ছদ বানিয়ে আমায় বাকরুদ্ধ করে দিল সৌমেনদা। বুকফার্মের এক কর্ণধার শান্তনু সেই একই যত্নে নিখুঁত করে তুলতে লাগল বইটাকে, আর অন্যজন— মানে কৌশিক— প্রত্যেকবারের মতোই লেগে রইল পিছনে—“আর কদ্দূর?”
ফের আসছে ‘ভারতবর্ষ’। এবার এক খণ্ডে। অন্তত আমার পছন্দের সব লেখা আছে এতে।
মাঝে একদিন ভাতৃপ্রতীম অভীকের বাড়িতে বসে তিন বন্ধু মিলে মিটিং করার নাম করে আড্ডা দিচ্ছিলাম। অভীকের ফোন সারাক্ষণ হরেক রকমের শব্দ করেই চলে, মস্ত চাকরি করার দায় থাকে বইকি! তায় আছে বইচই। তা অমনি একটা শব্দে ফোন তুলে, ফিক করে হেসে ফোনটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল—“এই বইটার অর্ডার কক্ষনো থামে না স্যর।”
দেখি— সেই ‘ভারতবর্ষ’।
আপনাদের এই আশীর্বাদ থেকে যেন এই বই কখনও বঞ্চিত না-হয়। ব্যস। আর কীই বা চাওয়ার আছে! এই নশ্বর জীবনের মানে তো এইটুকুই!
রাজা ভট্টাচাৰ্য
Leave a Reply