দ্য উলফ লিডার – আলেক্সান্ডার দ্যুমা
রূপান্তর – ফারুক বাশার
অনুবাদকের কথা
এতদিন ধরে নিজেই বই পড়ে যাচ্ছি। আজ যখন একটা অনুবাদ বই বেরোচ্ছে, যে বইয়ের অনুবাদক হিসেবে আমার নাম যাবে, তখন ব্যাপারটা ভাবতেই কেমন যেন অদ্ভুত লাগছে।
মানুষ হিসেবে আমার গড়ে উঠবার, আজকের এই জায়গায় এসে দাঁড়াবার পেছনে বইয়ের যেমন অবদান আছে, তেমনি আছে আমার কাছের কিছু মানুষের। স্বজন, বন্ধু-আলাদাভাবে সবার নাম করতে গেলে বিশাল লিস্ট হয়ে যাবে। শুধু এটুকুই বলব, এই মানুষগুলোর কাছে আমার প্রাপ্তি অনেক। এদেরকে আমার জীবনে পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ। আজীবন যেন তারা এভাবেই আমার সাথে থাকে, এটাই চাওয়া।
হঠাৎ করেই সৈয়দ অনির্বাণ একদিন প্রস্তাবটা দিয়ে বসলেন। আলেক্সান্ডার দ্যুমার একটা উপন্যাস, অতিপ্রাকৃতিক ব্যাপার স্যাপার আছে, তার উপর প্রকাশক নিজেই প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাই আর না বলিনি। উপন্যাসটা খুঁজে বের করার কৃতিত্ব অবশ্য তানভীর মৌসুমের। দুজনেই নানান কারণে নিজেরা অনুবাদে হাত না দিয়ে আমাকে করার সুযোগ দেয়ায় দুজনকেই অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরও ধন্যবাদ দিতে হবে সাজেদুল হক রনি ভাইকে। উৎসাহ, পরামর্শ এবং উপন্যাসটা দেখে দেয়ার জন্য। হুমাইরা আহমেদ তিহিকে ধন্যবাদ প্রচ্ছদের জন্য। আরও যারা বইটা প্রকাশের সাথে জড়িত, যাদের সবার নাম হয়তো আমি জানিও না, তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
যতটুকু পারি নিজের জ্ঞানে অনুবাদটা সহজ করার চেষ্টা করেছি। পড়তে পারছেন কি না সেটা পাঠকেরাই বিবেচনা করবেন। ভাল লাগলে তার কৃতিত্ব লেখকের, আর খারাপ লাগলে সে দায় অনুবাদক হিসেবে মাথা পেতে নিচ্ছি।
ফারুক বাশার
জানুয়ারি ২০১৮
.
দ্য উলফ লিডার প্রসঙ্গে
যদিও সূচনায় সাক্ষরের তারিখ ৩১ মে, ১৮৫৬, কিন্তু ধারণা করা হয় উলফ লিডার রচিত হয় ১৮৫২ থেকে ১৮৫৪-এর মধ্যে। ওই সময়টায় দ্যুমা নির্বাসনে ছিলেন। সে সময়ের প্রকাশিত আরও কিছু উপন্যাসের সাথেই এটা লেখা হয়।
দ্যুমার পৈতৃক আবাসস্থল ছিল ভিলারস-কটেরেট। সেখানেই প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে গল্পটা শুনেছিলেন তিনি। পরে তাতে কল্পনার রঙ মিশিয়ে আর নাটকীয়তা যোগ করে পুরো কাহিনীটা লিখে ফেলেন। সূচনায় শৈশবের কিছু স্মৃতিচারণ করেছেন। এবং স্বীকারও করেছেন শোনা গল্পটা তিনি নিজের মতো করে বলেছেন। এই উপন্যাসে প্রেমের সাথে অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা এবং অরণ্য জীবনের মিশেল দিয়েছেন মা।
মূল গয়ে ডুবে যেতে যেতে পাঠক যেন অরণ্যের মুক্ত জীবনের ছোঁয়া পায়। সেদিকে লক্ষ রেখেছেন। বনের ভেতর একটা পরিষ্কার অংশে অবস্থান একটা ছোট্ট শহরের। সেই শহরেরই ছেলে আলেক্সান্ডার। প্রায়ই সে পালিয়ে যায়। কখনও পালায় স্কুলের বাধাধরা রুটিন থেকে, কখনও বা সেই আত্মীয়ের হাত থেকে যে ওকে যাজক বানাতে চায়। এভাবেই শৈশবে দ্যুমা কাব্যিক সৌন্দর্য্য এবং রহস্যের আধার বনের কাছে চিরকৃতজ্ঞ হয়েছিলেন তাকে লুকোবার জায়গা এবং শিকারের সুযোগ করে দেয়ার জন্য। নিকটবর্তী পার্কে যখন গাছ কেটে ফেলা হয়েছে, তখন সেই কষ্ট তাঁকে ছুঁয়ে গেছে। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর স্মৃতিকথায়।
উলফ লিডার প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৫৭ সালে, তিন খণ্ডে। পরে ১৮৬০ সালে দমা দ্য মন্টেক্রিস্টো পত্রিকায় উপন্যাসটা আবার প্রকাশ করেন।
Leave a Reply