আর্জেন্টিনার রবিতীর্থ
আহমেদ হেলাল
ভিলা ওকাম্পো ১৯২৪ সালে জাহাজে পেরু যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে আজেন্টিনায় ভিক্তোরিয়া ওকাম্পোর বাড়িতে বিশ্রামের উদ্দেশে আসেন রবীন্দ্রনাথ। ওই বাড়িতে আরও অতিথি হয়েছেন বহু বিখ্যাত ব্যাক্তি। কোন হালে আছে সেই রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত ‘ভিলা ওকাম্পো’?
বুয়েনস এইরেসের হোটেল শেরাটনের ঠিক উল্টো দিকেই ট্রেনস্টেশন। এখান থেকে তিন দিকে ট্রেন যায়। আমাকে ধরতে হবে তিগরে লাইনের ট্রেনটি। এমনটাই জানিয়েছেন টুরিস্ট কাউন্টারে বসা ভদ্রমহিলা। ঠিকমতো কাউন্টারে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার সময় দেখলাম, আমার গন্তব্য পর্যন্ত ট্রেনভাড়া মাত্র দেড় পেসো! আর শেষ স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া দুই পেসো। আর্জেন্টিনার হিসাবে বেশ সস্তাই লাগল। আমার গন্তব্য বুয়েনস এইরেস থেকে ত্রিশ কিলোমিটার দূরের সান ইসিদ্রো। সেখানে বেক্কার স্টেশনে আমায় নামতে হবে। অথচ হাতের ম্যাপ বলছে, সেই বেক্কার থেকে নেমে সোজা সাত ব্লক হাঁটার পর পুয়েন্তে উরিবুরু। তার দিকের রাস্তার নাম এল অরতোন্দো। আমি যাব তার শেষ মাথার বাড়িটিতে। বাড়ির নাম ভিলা ওকাম্পো। আর্জেন্টিনায় আমার আসার উদ্দেশ্য ১৫তম বিশ্ব মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি সম্মেলনে যোগদান, ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে এই সম্মেলন। আর বাড়িটি দেখতে যাচ্ছি আমি ২৪ সেপ্টেম্বরে।
বাড়িটি ১৯৭৩ সাল থেকে ইউনেসকোর সম্পত্তি। ২০০৩ সালে সংস্কারের পর একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও জাদুঘর হিসেবে এটি ব্যবহূত হয়ে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কবি-সাহিত্যিকেরা এখানে বছরে বিভিন্ন সময় একত্রিত হন। বাড়িটির মালিক ছিলেন লাতিন আমেরিকার সাড়া জাগানো কবি ভিক্তোরিয়া ওকাম্পো। সুর নামে একটি সাহিত্যপত্রের সম্পাদকও ছিলেন তিনি। পৈতৃক সূত্রে বাড়িটি পেয়েছিলেন।
১৮৯১ সালে ভিক্তোরিয়ার বাবা মানুয়েল ওকাম্পো, পেশায় স্থপতি, বাড়িটি নিজের নকশায় তৈরি করেছিলেন। ওখানকার একটি প্রকাশনা থেকে জানলাম, এই বাড়িটিতে ইংরেজ আর ফরাসি দুই ধরনের স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণ রয়েছে। সামনের বাগানটি ১১ হাজার বর্গমিটার আয়তনের। বাড়িটির গ্রন্থাগারে প্রায় ১২ হাজারের মতো এস্পানিয়োল, ইংরেজি ও ফরাসি বই আছে। সেই সঙ্গে আছে সুর পত্রিকার পুরোনো সব সংখ্যা। আরও আছে ভিক্তোরিয়ার লেখা পাণ্ডুলিপি, চিঠি ইত্যাদি। ভিলা ওকাম্পোতে নানা সময়ে এসেছিলেন হোর্হে লুইস বোর্হেস, আলব্যের কামু, অক্তাভিয়ো পাজ, ইন্দিরা গান্ধীসহ আরও বহু গুণীজন। ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত এটি ভিক্তোরিয়ার ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল। আর্জেন্টিনায় ক্ষমতায় সে সময় পেরোনের ফ্যাসিবাদী সরকার। তারা আর্জেন্টিনার নানা শিল্পসৌকর্য ও প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করছিল। তাদের হাত থেকে রক্ষার জন্য ভিক্তোরিয়া বাড়িটি ইউনেসকোর হাতে তুলে দেন।
কিন্তু এতশত কারণে আমি বুয়েনস এইরেস থেকে এই বাড়িটি দেখতে আসিনি। আমি এসেছি এ বাড়িটির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে বলে। জড়িয়ে আছে তাঁর অনুরাগিনী ভিক্তোরিয়া ওকাম্পোর স্মৃতি। এই ভিক্তোরিয়া ওকাম্পোর নামই রবীন্দ্রনাথ দিয়েছিলেন বিজয়া।
সান ইসিদ্রোর বেক্কারো স্টেশনে নামতেই বিদায়ী শীতের বাতাস গায়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দিল, যদিও ঘড়িতে সময় তখন বেলা এগারোটা পেরিয়ে গেছে। ম্যাপ ধরে হাঁটতে থাকলাম নির্ধারিত গন্তব্যে। রাস্তাঘাট সুনসান। একেবারেই নীরব। বেশ কিছু সময় পরপর একটা-দুটো গাড়ি যাচ্ছে-আসছে তীব্রবেগে। দূরে দূরে দু-একজন মানুষ দেখা যাচ্ছে। পাঁচ-ছয় ব্লক পার হয়ে একজন ভদ্রমহিলাকে দেখে মনে হলো, তিনি ইংরেজি বুঝতে পারবেন। তাঁর কাছে ভিলা ওকাম্পোর কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি স্প্যানিশ ভাষায় কী যেসব বললেন! আমি তাঁর মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝলাম না। ‘সি, সি, গ্রাসিয়াস’ (হ্যাঁ, হ্যাঁ, ধন্যবাদ) বলে আমিও আবার হাঁটতে লাগলাম। এটুকুই আমার স্প্যানিশ ভাষাজ্ঞান । (ঢাকা থেকে আসার সময় শিল্পী শহীদ কবির আমাকে এক ঘণ্টা স্প্যানিশ ভাষার যে ‘শিক্ষা’ দিয়েছিলেন, তার কিছুই মনে নেই!)
রাস্তার সাইনবোর্ডে লেখা দেখে বুঝতে পারলাম, আমি পুয়েন্তে উরিবুরুতে চলে এসেছি। সেখানে দেখি, একটা কাচের ঘেরাটোপে বসে আছেন একজন উর্দিপরা পুলিশ। ভিলা ওকাম্পোর কথা জানতে চাইলে তিনি পরিষ্কার ইংরেজিতে জানালেন, আর মাত্র ৫০ মিটার সামনেই ভিলা ওকাম্পো। তবে সেটা খুলবে সাড়ে বারোটায়। এখনো প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা বাকি।
হাঁটতে হাঁটতে ভিলা ওকাম্পোর সামনে চলে এলাম। বাইরে থেকে চমৎকার বাড়িটি। বাড়ির নম্বর ১৮৩৭। আশপাশের বাড়িগুলোও খুব সুন্দর। ছবির মতো সাজানো। তবে বিস্ময়ের ব্যাপার, আমি আর সেই পুলিশটি ছাড়া কোথাও কেউ নেই। বাড়ির ভেতরে কেউ আছে কিনা বাইরে থেকে বোঝা যাচ্ছে না। বিশাল ফটকটি বন্ধ। নানা রকম পাখির কাকলি আর বাতাসে গাছের পাতা নড়ার শব্দ ছাড়া অন্য কিছু শোনা যাচ্ছে না। বাড়িটি একটি বন্ধ রাস্তার শেষ মাথায়। ফলে কোনো গাড়িও চলছে না। গাছে ঢাকা বাড়িটির ছবি তুললাম। আশপাশের কয়েকটি বাড়ির ছবিও। খুব বেশি দূরে না গিয়ে বাড়ির সামনে ফুটপাথে বসে জিরোতে লাগলাম।
সাড়ে বারোটার ঠিক দশ মিনিট আগে একটি পিকআপ এসে থামল বাড়িটির খিড়কি-দরজায়। দুজন ভদ্রলোক নেমে ভেতরে ঢুকে গেলেন। তবে ঢোকার আগে আমাকে সম্ভাষণ জানাতে ভুললেন না। একটু পরেই দেখি হাঁটতে হাঁটতে আরও তিনজন মানুষ বাড়িটির কাছে এলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, দুজন স্বামী-স্ত্রী। রাশিয়া থেকে এসেছেন আর্জেন্টিনায় বেড়াতে। ভদ্রলোক পেশায় রসায়নবিদ, তাঁর স্ত্রী স্কুলের শিক্ষিকা। তাঁদের সঙ্গের আর্জেন্টিনীয় ভদ্রমহিলাটি টুরিস্ট গাইড। গেটের সামনে যেখানে ইউনেসকোর লোগো দেওয়া বোর্ড টাঙানো আছে, সেখানে তাঁদের ছবি তুলে দিলাম। তাঁরা ভিক্তোরিয়া ওকাম্পো সম্পর্কে অনেক কিছু পড়ে এসেছেন, এমনকি রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কেও তাঁরা জানেন!
খানিক পরই বিশাল সবুজ দরজা খুলে গেল। আমরা সব মিলিয়ে চারজন দর্শনার্থী ঢুকলাম। টিকিটঘর বাড়িটির সবুজ বাগানের ডান দিকে। প্রথমেই বাড়ির ভেতরে না ঢুকে চলে গেলাম পেছনের বাগানে। সবুজ ঘাসে ঢাকা বাগানের মধ্যে একটি ধীরলয়ে চলা ফোয়ারা, আর গুটিকয়েক পামজাতীয় গাছ। এ রকম একটি পামগাছের পাশে রবীন্দ্রনাথের একটি ছবি আছে। তবে শঙ্খ ঘোষের বই থেকে জানা যায়, সেই ছবিটি সান ইসিদ্রোর মিরালরিও নামের বাড়িটির বাগানে তোলা, যেখানে রবীন্দ্রনাথ থাকতেন। বাগানের এককোনায় একটি শেড দেওয়া ছোট বসার জায়গা। দূরে বিস্তৃত গাছ আর আর গাছ। একটা নুড়িবিছানো রাস্তা চলে গেছে সেই গাছগাছালির দিকে। বাগানের বেঞ্চে বসে বাড়িটির দিকে তাকিয়ে দেখলাম, পোস্টকার্ড, ইন্টারনেট আর বিভিন্ন প্রচারণায় ভিলা ওকাম্পোর যে ছবিটি দেখা যায় সেটি আসলে বাড়িটির পেছন থেকে তোলা। সামনের দিকে ওপরে যেখানে ‘ভিলা ওকাম্পো’ লেখা আছে সে দিককার ছবিটি কোথাও নেই। আসলে সামনের দিক থেকে পুরো বাড়িটির ছবি নেওয়া কষ্টকর। আংশিক ছবি নেওয়া যায় মাত্র।
কিছুক্ষণ বসে থেকে ঢুকলাম বাড়িটির ভেতরে। সেখানে ছবি তোলা নিষেধ। একতলায় খাওয়ার ঘর, বসার ঘর, নানা রকম বই, আর সুর ম্যাগাজিনের পুরোনো সংখ্যা দেয়ালে। অসম্ভব সুন্দর পুরোনো চিত্রকর্ম টাঙানো। দোতলায় যাওয়া যাবে বেলা আড়াইটার পর। তখন সেখানে স্প্যানিশ ভাষায় গাইড সবকিছু ঘুরিয়ে দেখাবে।
আমি কথা বললাম নিচতলায় বসা ভিলা ওকাম্পোর মূল তত্ত্বাবধায়ক মিসেস আন্দ্রের সঙ্গে। তিনি বেশ ভালো ইংরেজি বোঝেন ও বলেন। আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি জেনে তিনি নানাভাবে আমাকে ইন্দিরা গান্ধী আর রবীন্দ্রনাথ যে এই বাড়িতে এসেছিলেন তা বর্ণনা করলেন। আড়াইটা বাজার আগেই তিনি আমাকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে বাড়িটির সবকিছু দেখালেন। ভিক্তোরিয়ার বসার ঘর, শোয়ার ঘর, গ্রন্থাগার, চেয়ার ইত্যাদি। তিনি আমাকে একটা সাদা কাগজে মানচিত্র এঁকে বোঝালেন মিরালরিও যাওয়ার রাস্তা। একটা নতুন বিষয় জানলাম, মিরালরিও যাওয়ার পথে একটি ছোট্ট রাস্তার নাম ‘আর তাগোরে স্ট্রিট’। সরল বাংলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সড়ক। মাত্র সাত-আট মিনিট লাগবে হেঁটে যেতে। নিচে নেমে আবার বাগানে। সেখানে একধরনের সাদা ফুলের ঝাড়। বিভিন্ন বইয়ে দেখেছি, এই ফুলের সামনে বেশ কিছু ছবি আছে ভিক্তোরিয়ার। আন্দ্রের কাছে জানলাম, ফুলটির নাম ‘করোনা দো নুভিয়া’। এস্পানিয়োল থেকে বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘প্রেয়সীর মাথার মুকুট’। সুবাস মৃদু, কিন্তু সৌন্দর্য দারুণ, বিশেষত যখন গুচ্ছে গুচ্ছে ফুটে থাকে।
১৯২৪ সালে পেরুর স্বাধীনতার শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জাহাজে রওনা দেন রবীন্দ্রনাথ। গন্তব্য পেরুর রাজধানী লিমা। কিন্তু আন্দিন নামক জাহাজে উঠে আর্জেন্টিনার কাছাকাছি এসে তিনি শীতে কাতর হয়ে গেলেন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন লিওনার্ড এলমহার্স্ট। বুয়েনোস আইরেসে জাহাজ ভিড়ল। প্লাজা হোটেলে উঠলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর্জেন্টিনার চিকিৎসকেরা জানালেন, এই মুহূর্তে কবির বিশ্রাম ও চিকিৎসা প্রয়োজন। নতুন করে জাহাজযাত্রা আপাতত বন্ধ। হোটেলে কবির সঙ্গে দেখা করেন তাঁর গুণমুগ্ধ আর্জেন্টিনার লেখক ভিক্তোরিয়া ওকাম্পো। তাঁর উদ্যোগেই হোটেল ছেড়ে সান ইসিদ্রোতে কবির থাকার ব্যবস্থা হয়। প্রথমে ভিক্তোরিয়া চেয়েছিলেন তাঁর বাবার বাড়ি ভিলা ওকাম্পোতেই কবিকে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে। কিন্তু রাজি হলেন না ভিক্তোরিয়ার বাবা। পরে ভিলা ওকাম্পোর কাছাকাছি তাঁদেরই আরেক আত্মীয়ের বাড়ি মিরালরিওতে কবিকে রাখার ব্যবস্থা হয়। ১৯২৪ সালের ১২ নভেম্বর কবি এসে পৌঁছালেন সান ইসিদ্রোতে। উঠলেন মিরালরিও নামের বাড়িটিতে। এটিই প্রকৃতপক্ষে আর্জেন্টিনায় রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিচিহ্ন। কিন্তু পরে নানা কারণে মিরালরিও পাদপ্রদীপের আলোয় আসতে পারেনি। যা হোক, আমি মিরালরিওর খুব কাছে চলে এসেছি। আর্জেন্টিনার প্রায় সব রাস্তায় পথের নাম লেখা ফলক থাকে। মানচিত্র অনুযায়ী যে রাস্তাটির নাম ‘আর তাগোরে স্ট্রিট’ সেখানে কোনো পথনির্দেশক ফলক নেই। মনটা একটু দমে গেল। কিন্তু কয়েক পা হাঁটতেই একটা বাড়ির দরজায় আবিষ্কার করলাম বাড়িটির নম্বরের পর লেখা আছে ‘আর তাগোরে স্ট্রিট’। এর দিক ডান দিকের গলির শেষ মাথায় মিরালরিও।
বাড়িটি এখন ব্যক্তিগত সম্পত্তি। বাড়িটি পুরো তালা দেওয়া। কেউ থাকে না। মালিকেরা সবাই ইউরোপপ্রবাসী। বাড়িটির সামনে গেলাম। প্রবেশপথ বন্ধ। এর মধ্যেই ছবি তুললাম। রবীন্দ্রনাথ রাত্রি যাপন করতেন এই বাড়িতে। আর প্রায় প্রতিদিন বিকেলে এখান থেকে যেতেন ভিলা ওকাম্পোয়, অবসর যাপন করতে। সেখানে বাগানে গল্পগুজব, চা-পান আর সাহিত্য আলোচনার পর আবার ফিরে আসতেন এখানে। রবীন্দ্রনাথের পূরবী কাব্যগ্রন্থের বেশির ভাগ কবিতা আর্জেন্টিনায় লেখা। গ্রন্থটি তিনি উৎসর্গ করেছিলেন ওকাম্পোকে। উৎসর্গপত্রে লিখেছিলেন ‘বিজয়ার করকমলে’।
মিরালরিও থেকে ফিরে আসছি স্টেশনের দিকে। বিকেল শুরু হচ্ছে মাত্র। ঠান্ডা বাতাস লাগছে গায়ে। আর্জেন্টিনায় আসার সময় পূরবী আর শঙ্খ ঘোষ ও কেতকী কুশারি ডাইসনের বই নিয়ে এসেছিলাম সঙ্গে করে। ট্রেন চলছে বুয়েনোস আইরেসের মূল শহরের দিকে। পূরবীর একটি কবিতা আগেও পড়েছি। কিন্তু এখনকার মতো করে তার মানে আগে উপলব্ধি করতে পারিনি: প্রবাস বনের ছায়ে/ সহসা আমার গায়ে/ ফাল্গুনের ছোঁওয়া লাগে এ কি/ এ পারের যত পাখি/ সবাই কহিল ডাকি/ ‘ওপারের গান গাও দেখি’।/ ভাবিলাম মোর ছন্দে/ মিলাবে ফুলের গন্ধে/ আনন্দের বসন্তবাহার/ খুঁজিয়া দেখিনু বুকে/ কহিলাম নতমুখে/ ‘বীণা ফেলে এসেছি আমার’।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ২৩, ২০১১
Leave a Reply