২৪. দ্বিশির হংস জাতক
“আমরা সর্বভবে যেন” ইহা ভগবান বুদ্ধ জেতবনে অবস্থান করবার সময় পরস্পর অতি প্রিয়তর দুজন বন্ধুকে। উপলক্ষ করে বলেছিলেন–
শ্রাবস্তীবাসী দু’জন লোক তারা সর্বদাই একস্থানে বসতেন, শয়ন করতেন, এক সাথে গমন করতেন ও দাড়াতেন। একজন অপর জনকে কোন কালেই ত্যাগ করতেন না। একদা ভিক্ষুগণ ধর্ম সভায় বসে পরস্পর এরূপ আলোচনা করতে লাগলো“অহো বন্ধুগণ, এদুজন লোক পরস্পর অতি প্রিয়ভাব-ত্যাগ করতে না পেরে উভয়ে এক স্থানেই বাস করে। তারা কি কারণে পরস্পর এরূপ অতিপ্রিয় ভাবাপন্ন হল?” তখন ভগবান বুদ্ধ গন্ধকুঠি হতে দিব্য কর্ণে ধর্মসভায় ভিক্ষুদের এসব আলোচনা শুনে ধর্মসভায় উপস্থিত হলেন। তথায় তিনি প্রজ্ঞাপ্ত শ্রেষ্ঠ বুদ্ধাসনে উপবেশন করে বলেন–হে ভিক্ষুগণ তোমরা এখন কি আলাপ আলোচনা নিয়ে এখানে উপবিষ্ট আছ? তখন ভিক্ষুগণ তাঁদের আলোচ্য বিষয় বুদ্ধকে যথাযথভাবে বললেন–। ইহা শুনে বুদ্ধ বললেন–“হে ভিক্ষুগণ, শুধু এজন্মে নয়, পূর্বও এদুজন পরস্পর অতিশয় প্রিয় সহায় ছিল। এ বলে বুদ্ধ সে অতীত কাহিনী বলতে আরম্ভ করলেন–
সুদূর অতীতে এভদ্রকল্পে কশ্যপ বুদ্ধের শাসনে এ দুজন স্বামী-স্ত্রী ছিল। তারা উভয়ে বুদ্ধ ও ভিক্ষুসংঘের প্রতি অতি শ্রদ্ধা সম্পন্ন ছিল। একের প্রতি অন্যের দুচ্ছেদ্য হে মমতা ও একচিত্ত সম্পন্ন ছিল। এক দিবস তারা কশ্যপ বুদ্ধের বিহারে বুদ্ধ প্রমুখ ভিক্ষু সঙ্কে বন্দনা করে সুগন্ধি দ্রব্য ও পুস্পাদি পূজা করে বুদ্ধপ্রমুখ ভিক্ষুসঙ্ঘকে পিণ্ডদান দিয়ে প্রার্থনাচ্ছলে নিন্মোক্ত গাথায় বললেন–
১। “আমরা সর্বভবে যেন উভয়ে পরস্পর অতি প্রিয়ভাবে থাকি। একমাতার জঠরেই যেন একক্ষণে ভূমিষ্ঠ হই।” ইহা শুনে স্ত্রীলোকটিও প্রার্থনাচ্ছলে নিন্মোক্ত গাথায় বললেন–
২। “আমি এপুণ্য কর্মে যেন নারীত্ব হতে মুক্তি লাভ করি এবং সকল জন্মে যেন সর্বদা এ স্বামীর সাথেই থাকি।” এবলে সে নারী নিজের স্বামীর সাথে জন্মগ্রহণ করবার ইচ্ছায় প্রার্থনাচ্ছলে নিন্মোক্ত গাথাদ্বয়ে বলল–
৩-৪। “ভন্তে, আমার এ স্বামী অনাগতে আমার ভ্রাতা হউক, আমি তাঁর কণিষ্ঠ ভ্রাতা হব। আমরা উভয়ে মহাবীর রূপে তীর্যক জাতিতে জন্ম নিলেও দ্বিশির ও এক দেহ বিশিষ্ট হয়ে প্রিয়ভাবে থাকবার জন্য জন্ম নেব।”
কশ্যপ সম্বুদ্ধ ইহা শুনে তাদের দান অনুমোদন করে ভিক্ষুসঙ্ সহ বিহারে গেলেন। এ নারী স্বীয় স্বামীর সাথে দীর্ঘকাল ইহলোকে জীবন ধারণ করে যথায়ুষ্কালে মৃত্যুর পর ঐ প্রার্থনা বশে ক্রমান্বয়ে শ্রেষ্ঠী কুলে, গৃহপতি কুলে, ব্রাহ্মণ কুলে ও ক্ষত্রিয় মহাশালকুলে স্বীয় স্বামীর সহিত একমাতৃগর্ভে একক্ষণেই জন্মগ্রহণ করেছিল। এরূপে জন্মচক্রের মাধ্যমে সর্বপ্রার্থনানুসারে নারীটি কণিষ্ঠ ভ্রাতা ও পুরুষটি জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রূপে জন্মগ্রহণ করে। উভয়েই উভয়ের প্রতি অতিশয় প্রিয়, হে, মমতাশীল ও বিশ্বাসী ছিল। অপর এক সময় তারা উভয়ে এ মনুষ্য তোক হতে চ্যুত হয়ে হিমালয় প্রদেশে এক পদ্ম সরোবরে হংস শাবক হয়ে জন্মগ্রহণ করল। সে হংস শাবক দ্বিশির ও এক দেহ সম্পন্ন অতি মনোমুগ্ধকর পরিশুদ্ধ সুবর্ণ বর্ণ ছিল। সে দ্বিশির সম্পন্ন হংস শাবকটি সর্বদা পরিশুদ্ধ চিত্তে আহার অন্বেষণে গমন করত। একদা এক বনচর ব্যাধ সে হংস শাবকটি দেখে অতিশয় বিস্মিত হল তৎকালে বোধিসত্ত্ব ‘ধার্মিক’ নামক রাজা হয়ে বারাণসীতে ধর্মতঃ ও ন্যায়মত রাজত্ব করতেন। ধার্মিক রাজার অগ্রমহিষীর নাম ছিল “সুধর্মা দেবী”। ঐ বনচর ব্যাধ আশ্চর্য জনক দ্বিশির সুবর্ণ হংসের কথা ধার্মিক রাজাকে জ্ঞাপন করল। রাজা এ আশ্চর্য অদ্ভুত খবর শুনে উক্ত হংসকে নিজ সমীপে নিয়ে আসবার জন্য নিন্মোক্ত গাথায় বললেন–
৫। “বাপু, তুমি যদি সেই হংসের শাবক,
জেন্তভাবে মম নিকট আন্তে পার,
তাহলে তোমায় একখানি গ্রাম সহ,
বহুধন দানিব পারিতোষিক রূপে।
এ বলে বোধিসত্ত্ব সে বনচরকে পাথেয়াদি দিলেন। ব্যাধও তখন রাজাকে বন্দনা করে পাথেয় থৈলা গ্ৰহণান্তর মেণ্ডক শৃঙ্গ ধনু লয়ে বনে যাত্রা করল। ক্রমান্বয়ে সে হিমালয় পর্বতে গিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করে উক্ত দ্বিশির সুবর্ণ বর্ণ শাবকটি স্বীয় কৌশল বলে ধরল এবং তা যথা সময়ে এনে রাজাকে প্রদান করল। রাজা তা পেয়ে অত্যন্ত প্রমোদিত ও প্রসন্ন হয়ে ব্যাধকে বহু ধন ও একখানা গ্রাম উপহার দিলেন। রাজা সে হংস শাবকটি সুবর্ণ পিঞ্জরে ঢুকায়ে তা সঙ্গে এনে বিচারালয়ে রাখলেন। তখন অগ্র মহিষী হংস শাবকের পৃষ্ঠদেশে মৃদু হস্ত বুলাতে বুলাতে রাজার নিকট দাঁড়িয়ে রইল। তৎক্ষণে সে হংস শাবক নিজের শিরদ্বয় নমিত করে কেঁ কেঁ শব্দ করতে লাগল। সে মধুর শব্দে সে স্থান মুখরিত হল। এ শব্দ শুনে দেবী অত্যধিক প্রীত হয়ে সুবর্ণ পিঞ্জরে রক্ষিত অই হংসকে সুবর্ণ থালায় মধু মিশ্রিত লাজাদি ভোজন করালেন। অপর এক সময় সুধর্মা দেবী ধার্মিক রাজাকে বললেন–“মহারাজ, একটি দেহ দুটি শির” এটা বড়ই আশ্চর্য ব্যাপার। যদি কোন ব্যক্তি এ হংসটিকে দুভাগ করতে সমর্থ হয়, তা হলে আমার অন্তঃপুরে বাসস্থানে এক ভাগ এবং বহুজনের দর্শনার্থ বর্হিাড়ীতে এক ভাগ রেখে দিতাম। বোধিসত্ত্ব রাণীর এ পরামর্শ খুব উত্তম বলে অনুমোদন করলেন। তখনই সকল অমাত্যকে একত্রিত করে বললেন–“ভদ্রগণ, তোমাদের মধ্যে কেহ এ হংসটিকে দোভাগ করতে পারবে কি? যে ব্যক্তি এ কাজ পারবে, তাকে মহাপূজা সৎকার করে বহু ধন দান করব। অমাত্যবৃন্দ ও জনগণ বোধিসত্ত্বের একথা শুনে বহু চিন্তা করলেন বটে, কেহ দ্বিভাগ করার কোনই উপায় কৌশল ঠিক করতে পারলনা। তখন রাজার এক উপায় কৌশল-সুদক্ষ পণ্ডিত অমাত্য রাজাকে বন্দনা করে বললেন–“মহারাজ, এ দ্বিশির এক অঙ্গ বিশিষ্ট সুবৰ্ণ বর্ণ হংসটিকে আমিই দ্বিভাগ করতে পারব।” ধার্মিক রাজা অমাত্যের একথা শুনে তা সাধুবাদের সহিত অনুমোদন পূর্বক তাকে বহু ধন দিয়া হংসটি তার হস্তে গচ্ছিত করে দিলেন। অমাত্য হংসটিকে স্বীয় গৃহে নিয়ে সযত্বে পালন করতে লাগলেন। একদিন অমাত্য রাজার নিকট গিয়ে পূর্বের ন্যায় স্বীয়কার্য সম্পাদন পূর্বক গৃহে ফিরে ঐ দ্বিশির সম্পন্ন হংসের নিকট উপস্থিত হলেন। তখন হংস শিরের কর্ণ সমীপে স্বীয় মুখ নিয়ে চুপে চুপে কিছু কথা বলার ন্যায় ভাণ করে সহাস্যে চলে গেলেন। তখন অপর হংসশিরটি ঐ হংসশিরকে সম্বোধন করে বললেন–হে বন্ধো, অমাত্য তোমার কানে কি। বলে গেলেন? সে শির বলল–“আমি বুঝিমত কোন কথাই তিনি বলেনি ইহা শুনে ঐ শীর বলল–“আমি তোমার কথা বিশ্বাস করিনা। যেহেতু, আমার চক্ষের সামনে অমাত্য এতগুলি কথা বললেন–। আর তুমি বলছ, কিছুই না। আমাদের এতদিনের বন্ধুভাব প্রকট হল।” এরূপে একশির অপর শিরের কথা বিশ্বাস না করার চিত্ত অপরিশুদ্ধ হল। এদ্বিধায় শিরদ্বয় ক্রমে কলহ বর্ধন করে পরস্পর অমনোজ্ঞ ভাবেই বাস করতে লাগল। কিয়দিবস পরে একশির অপরশিরের সাথে আলাপাদিও বন্ধ করে দিয়ে একে অন্যকে আক্রোশ ও ভৎর্সনা করতে লাগল। ক্রমে এদ্বিশির ক্ষোভে ও আক্রোশে অতিষ্ঠ হয়ে পাকসাট করতে লাগল। পরিশেষে অতি ক্রোধবেশে পাকসাঠের বেগে সুবর্ণ হংসের এক দেহ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি সুবর্ণ হংসের পরিণত হল। তখন অমাত্য সেই সুবর্ণ হংসয় নিয়ে ধার্মিক রাজাকে প্রদান করলেন। রাজা তা দেখে অতিশয় প্রসন্ন হয়ে তাকে শ্রেষ্ঠ একখানা গ্রাম দান করলেন। এবং হংসদ্বয়কে দুটি সুবর্ণ পিঞ্জরে রেখে অগ্রমহিষীর ইচ্ছানুসারে একটি অন্তঃপুরে আর একটি জনগণের দর্শনার্থ বহিবাড়ীতে রাখলেন। তারপর রাজা অমাত্যকে বললেন–তাত, তুমি কি উপায়ে ইহাকে দ্বিভাগ করলে? তখন অমাত্য দ্বিভাগ করার উপায়ের সব কথা বিবৃত করে বললেন–। ইহা শুনে ধার্মিক রাজা সংবিগ্ন চিত্তে চিন্তা করলেন–“অহো এরূপ একদেহ দ্বিশির সম্পন্ন অভিনব ব্যাপার। একচিত্তভাবে ও সংবাস হওয়া সত্ত্বেও দ্বিভাগ হল। আর নানা দেহধারী প্রাণীদের কথাইবা কি? এরূপ প্রাণীরা কখনো একত্রে বাস করতে পারবেনা। পরস্পর সুহৃদ ও প্রিয়ভাবে সংবাস করলেও পরে নানা কারণে শত্রু ভাবের উৎপত্তি হয়। প্রাণীদের কর্মই স্বকীয় কর্মদায়দ, কর্ম বন্ধু ও কর্ম প্রতিশরণ হয়।” রাজা এরূপ চিন্তা করে নিজের অমাত্যগণকে সম্বোধন করে বললেন–“ভদ্রগণ, কোন কোন প্রাণী অজ্ঞাতি বা পরস্পর প্রিয় সহায়ক ও পুনঃ পুনঃ বিবাদকরে গ্রাম, নগর, ক্ষেত্র, বস্তু গৃহ, গো মহিষ, হস্তী, অশ্ব, দাস, দাসী, দ্বেষ বশে ক্রোধবশে বা ঈর্ষাবশে লাভ সত্ত্বারের দ্বারা, প্রিয় স্বামীদ্বারা, প্রিয় পুত্র দারের দ্বারা যান-বাহন বলের দ্বারা, রাজ কর্মচারী দ্বারা অথবা দৈহিক শক্তি দ্বারা সর্বদা ভিন্ন হয়।” পুনঃ বোধিসত্ত্ব অমাত্যগণকে সম্বোধন করে বললেন–“কোন কোন প্রাণী পরের অল্প দোষ দেখে তা মহৎ বলে প্রকাশ করে, কোন কোন সত্ত্ব বহুবিধি পরগুণ দেখে তা অতি স্বল্প বলে প্রকাশ করে, আর কোন কোন সতু পরের গুণ মর্দনকারী, বিনাশকারী ও সেগুণের প্রতি ঈর্ষা পোষণ কারী হয়। কোন কোন সত্ সুমেরু প্রমাণ নিজের দোষকে বিন্দুমাত্র রূপেও দেখেনা। আর কোন কোন সত্ত্ব পরের সর্ষপ প্রমাণ দোষকে ও বড় বলে মনে করে।” ইত্যাদি চিন্তা করে নিন্মোক্ত পাঁচটি গাথায় বললেন–
৬-১০। “রত্নাকর ও সুবর্ণ খণি অতিশয় গম্ভীর। এরত্নাকর সমুদ্র সুবর্ণ খণি সর্বদা বালুকাদি দ্বারা আচ্ছাদিত। জগতে তা সর্বদা ভূমির ন্যায় দেখায় “জনগণের অধিপতি ভূমিপাল মহাযশঃস্বী ধার্মিকরাজা ও স্বীয় রাজ্যে সর্বদা অমাত্যগণ দ্বারা নিষ্পীড়িত হয়। মিত্রদ্রোহী ব্যক্তিগণ বিশ্বাসের প্রয়োজন রাখেনা। তারা সর্বদা কুলের সমস্ত ধন বিনাশ করে” পাপী ব্যক্তিগণ সর্বদা পুনঃ পুনঃ পাপ কর্ম করে। তারা সর্বদা পরের অনর্থকারী ও উৎপীড়নকারী হয়। জগতে পণ্ডিত ব্যক্তিগণ সর্বদা মৈত্রীকামী হয়ে নিজকে চালিত করে।” এবলে মহাসত্ব নিজের রাজ্যবাসী মহাজনগণকে উপদেশ প্রদান করে নিন্মোক্ত একাদশটি গাথা বললেন–
১১-২১। “যে ব্যক্তি অযৌক্তিক কর্ম করে বা করায়, সে কর্ম সর্বদা নিষ্ফল হয় এবং দুঃখময় নিরয়ে পতিত করায়। ভদ্রগণ, যারা সম্যক কর্ম করেনা, তাদের কর্ম নিরর্থকে পর্যবসিত হয়। তারা জগতে সর্বদা দুর্গতি প্রাপ্ত হয়। সুবীজ সুক্ষেত্রে বপিত হলে যেমন মানুষকে সর্বদা সুষ্ঠরূপে ফলাদি দান করে, সেরূপ শ্রদ্ধাচিত্তে সযত্নে কুশল কর্মাদি কৃত হলে জগতে সর্বদা নিশ্চয়ই অসুখ প্রদান করে। তদ্ধেতু পণ্ডিত ব্যক্তিরা ইহলোকে পুণ্য কর্মাদি সম্পাদন করে সর্বদা দেবমনুষ্যলোকে সুখ পরিভোগ করে। যাবজ্জীবন নিজের মিত্রকে ভেদ করে না। সর্বদা স্বীয় মিত্রকে তারা প্রাণের ন্যায় রক্ষা করে। পণ্ডিত-অপণ্ডিত সবাই নিত্য কুশল কর্ম করবেন। ভদ্রগণ, নিজের জ্ঞানবলে বিচার করে পুনঃ পুনঃ কুশল কর্ম সম্পাদন করলে পরে তারা অনুতপ্ত হননা। যদি বিচার না করে কর্ম সম্পাদন করে, তদ্বিধায় পরে তারা নিত্য ঐ সুবর্ণ হংসের ন্যায় অনুতপ্ত হতে হয়। যেমন এক দেহ দ্বিশির সম্পন্ন সুবর্ণ বর্ণ হংস ক্রোধবশে ভিন্ন হয়ে গেল, জনগণও সেরূপ ক্রোধবশে ভিন্ন হয়ে পড়ে। একটি হংস অন্তঃপুরে এবং অপরটি বর্হিবাড়ীতে বাস করছে। একারণে হংসেরা পরস্পর কাউকেও কেহ স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছেনা।”
সে হতে ধার্মিক রাজা স্বীয় রাজ্যে ধর্মত সাম্যভাবে রাজত্ব করে দানাদি পুণ্য ক্রিয়া করণান্তর যথায়ুষ্কালে মৃত্যুর পর দেবলোকে উৎপন্ন হলেন। সে নগর বাসীরাও সবাই বোধিসত্ত্বের উপদেশক্রমে দানাদি পুণ্য ক্রিয়া করণান্তর মৃত্যুর পর নানা দেবলোকে উৎপন্ন হলেন। এবলে ভগবান জাতক পরিসমাপ্তির পর নিন্মোক্ত পাঁচটি শেষ গাথা ভাষণ করলেন–
২২-২৬। “তখনকারের বনচারক এখন ছন্ন অমাত্য। পণ্ডিত অমাত্য এখন প্রজ্ঞাবান সারিপুত্র। সুবর্ণ বর্ণ হংস একটি এখন আমার উপস্থায়ক আনন্দ। অপর হংসটি এখন কালুদায়ী। তাঁর মহাদেবী মাতা, এখন আমার মাতা মহামায়া। তাঁর পিতা মহারাজ এখন শুদ্ধোদন। সুধর্মা তাঁর ভার্যা এখন যশোধরা। অমাত্যাদি নগরবাসীগণ এখন সবাই আমার শ্রাবক। সে ধার্মিক রাজা’ এখন আমিই লোকনাথ। এ জাতক এরূপই ধারণ কর।”
(দ্বিশির হংস জাতক সমাপ্ত।)
Leave a Reply