নারায়ণ নর নরোত্তম এবং দেবী সরস্বতীকে নমস্কার করিয়া তদনন্তর জয় উচ্চারণ করিবে।
নারদ কহিলেন, প্রভো! প্রথমতঃ আমি পিতা ব্রহ্মার মুখকমল বিগলিত মনোহর ব্রহ্মখণ্ড শ্রবণ করিয়াছিলাম, তৎপরে তদীয় আদেশানুসারে সত্বর আপনার নিকট উপনীত হইয়া সুধাখণ্ড হইতেও উৎকৃষ্ট পরম প্রকৃতিখণ্ড ও সংসার জন্মখণ্ডন অখণ্ড গণপতিখণ্ড আপনার মুখে শ্রবণ করিয়াছি, তথাপি আমার চিত্ত পরিতৃপ্ত হয় নাই। যে পরাৎপর পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণের জন্মখণ্ড শ্রবণে মানবগণের জন্ম মরণাদির খণ্ডন হয়, এক্ষণে বিশিষ্টরূপে তাহা শ্রবণার্থ আমার মন নিতান্ত সমুৎসুক ও চঞ্চল হইয়াছে। ১।২।৩।।
গুরো! শুনিয়াছি, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মখণ্ড সমস্ত তত্ত্বের প্রদীপ স্বরূপ। ইহা শ্রবণ করিলে জীবের কর্ম্মবন্ধনের ছেদন ও সুদুর্লভা হরি ভক্তের আবির্ভাব হয় তাহাতে জীব সদ্য বৈরাগ্য লাভ পূর্ব্বক সংসারানুরাগে বিসর্জ্জন দিয়া মুক্তিপথের পথিক হইয়া থাকে। এই জন্মখণ্ড মুক্তি বীজের কারণ, দুস্তর ভবজলধি উত্তীর্ণ হইবার একমাত্র অবলম্বন, সমস্ত কর্ম্মোপভোগ ও রোগ সমুদায়ের খণ্ডনের রসায়ন স্বরূপ, পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণের চরণ কমল প্রাপ্তির সোপান কারণ, বৈষ্ণবগণের জীবন ও জগৎ পাবন পরম পদার্থ বলিয়া নির্দ্দিষ্ট আছে। এক্ষণে আমি ইহা পরিজ্ঞাত হইতে নিতান্ত সমুৎসুক হইয়া আপনার শরণাপন্ন হইয়াছি। আমি আপনার ভক্তশিষ্য, অতএব আপনি কৃপা করিয়া ইহা সবিস্তারে আমার নিকটা কীর্ত্তন করুন। ৪।৫।৬।৭।।
ভগবন্! সেই পরিপূর্ণতম অদ্বিতীয় পরাৎপর পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণ কোন্ পুরুষ কর্ত্তৃক প্রার্থিত হইয়া স্বয়ং পূর্ণরূপে মর্ত্যলোকে অবতীর্ণ হইলেন? কোন্ যুগে কি কারণে তাঁহার আবির্ভাব হইল? তাঁহার জনক বসুদেব কে? ও তাঁহার জননী দেবকীই বা কে? কাহার কূলে মায়াক্রমে তাঁহার জন্ম হইল? আর সেই হরি কোন্ রূপে অবতীর্ণ হইয়াই বা কাহার প্রতি কিরূপ বিড়ম্বনা করিলেন? কংস ভয়ে সূতিকাগৃহ হইতে তাঁহার গোকুল গমনের তাৎপর্য্য কী? তিনি স্বয়ং সর্ব্বভয়-হারক হইয়া কীটস্বরূপ কংস হইতে ভীত হইলেন কেন? তিনি গোকুলে গোপবেশে কী কী কার্য্য করিলেন? গোপাঙ্গনাদিগের সহিত সেই জগৎপতির বিহারের হেতু কী? গোপাঙ্গনাগণ ও চারু বেশধর গোপালগণ কে কে ছিল, নন্দ যশোদা কে? এবং পূর্ব্বে তাঁহারা কি পূণ্য করিয়াছিলেন? গোলকবাসিনী আদ্যা প্রকৃতি পূণ্যবতী শ্রীমতি রাধিকা দেবী কি জন্য ব্রজে ব্রজকন্যারূপে আবির্ভূতা হইয়া হরির প্রেয়সী হইলেন? গোপিকগণ সেই দুরারাধ্য পরাৎপর পরম পুরুষকে কিরূপে প্রাপ্ত হইলেন? এবং সেই হরিই বা তাঁহাদিগকে পরিত্যাগ করিয়া মথুরায় আগম করিলেন কেন? আর তিনি কি রূপ কার্য্যানুষ্ঠানে পৃথিবীর ভারাবতরণ করিয়া লীলা সংবরণ করিলেন, এই সমস্ত শ্রবণ কীর্ত্তনে জীবের পবিত্রতা সমুৎপন্ন হয়, অতএব আপনি কৃপা করিয়া এই সমুদায় আমার নিকট ব্যক্ত করিয়া কৃতার্থ করুন। ৮-১৬।।
হে প্রভো! এক্ষণে আপনার আশ্রয় গ্রহণ করাতে আমি সুদুর্লভা হরি কথা লাভের উপায় প্রাপ্ত হইয়াছি। এই হরি কথা শ্রবণে কর্ম্মফল ভোগরূপ বন্ধন জনিত ক্লেশ হইতে মুক্তিলাভে সক্ষম হওয়া যায়। সুদুর্লভা হরি কথা পাপরূপ কাষ্ঠ সমুদায়ের দহনে প্রজ্বলিত অগ্নিশিখার তুল্য, যাহারা এই হরি কথা শ্রবণ করে, তাহাদিগের কোটি জন্মার্জিত পাপ সমুদায় ধ্বংস হইয়া যায় আর তাহারা দুস্তর শোক সাগর হইতে উত্তীর্ণ হয় এবং তাহাদিগের শ্রুতিবিষয়ে ঐ হরি কথা সুধারাশি বর্ষণ করিয়া থাকে। আমি আপনার ভক্ত শিষ্য অতএব আপনি কৃপা করিয়া আমাকে জ্ঞান প্রদান করুন। ১৭-১৯।।
ভগবন্! তপস্যারূপ জপ, পৃথিবীর সমস্ত তীর্থ দর্শন, বেদপাঠ, অনশন ব্রত, দেবার্চ্চনা ও সমস্ত যজ্ঞদীক্ষায় মনুষ্যের যেরূপ ফল লাভ হয়; তাহা জ্ঞানদান ফলের ষোড়শাংশেরও যোগ্য হইতে পারে না। ২০-২১।।
প্রভো! আমার পিতা ব্রহ্মা মদীয় জ্ঞানোপার্জ্জনের নিমিত্ত আপনার নিকটা প্রেরণ করিয়াছেন, অতএব কোন্ ব্যক্তি সুধা সমুদ্র প্রাপ্ত হইয়া তাহা পান করিতে ইচ্ছা না করে? ২২।।
নারায়ণ ঋষি কহিলেন, হে কুলপাবন তপোধন! তুমি ধন্য ও মূর্ত্তিমান পুণ্যরাশি স্বরূপ, তোমার অন্তর আমার অজ্ঞাত নহে, তুমি সদ্য সমস্ত লোকের হৃদয় মধুর বচনে পবিত্র করনার্থ সর্ব্বত্র শ্রমণ করিয়া থাক। দেবর্ষে! শিষ্য, কলত্র, কন্যা, দৌহিত্র বান্ধব, পুত্র, পৌত্র, বাক্য, প্রতাপ, যশ, শ্রী, বুদ্ধি, জল ও বিদ্যাতেই জনগনের অন্তরের কুটিলতা বা সরলতা জ্ঞাত হওয়া যায়। ফলতঃ যাহাদিগের ঐ সমস্ত উত্তম তাহারাই সরন ও সাধু বলিয়া অনুমেয় হইয়া থাকেন। ২৩-২৫।।
তপোধন! তুমি জীবন্মুক্ত শুদ্ধচেতাঃ পবিত্র ও সনাতন হরির পরম ভক্ত, তোমার চরণ রজঃ স্পর্শে সর্ব্বাধারা বসুন্ধরাও পবিত্র হইতেছেন। ২৬।।
দেবর্ষে! তুমি স্বয়ং পবিত্রমূর্তি দর্শন করাইয়া সমস্ত লোককে পবিত্র করিতেছ। এই জন্য সুমঙ্গলা হরি কথা শ্রবণে তোমার এতদূর ঔৎসুক্য হইতেছে। ২৭।।
যে স্থানে হরি কথা প্রসঙ্গ হয় সেই স্থানে সমস্ত দেব মুনি ঋষি ও তীর্থ সমুদায়ের আবির্ভাব হয়। ২৮।।
সাধুগণ হরি কথা শ্রবণ করিয়া হরি কথা অবসানে সমস্ত আপদ হইতে মুক্তি লাভ করেন, আর যে যে স্থানে পবিত্র হরি কথা হয় সেই সেই স্থান তীর্থ স্বরূপ হইয়া থাকে। ২৯।।
হরি কথা বক্তা সদ্য শত শত পিতৃপুরুষকে উদ্ধার করেন এবং যাহারা ঐ হরি কথা শ্রবণ করেন তাহাদিগেরও নিখিল কুল পবিত্র হইয়া থাকে সন্দেহ মাত্র নাই। ৩০।।
হরি কথার প্রশ্ন কর্ত্তা প্রশ্ন মাত্রে স্বীয় কুল পবিত্র করেন এবং শ্রবণ মাত্রে শ্রোতার কুল ও তাহার বন্ধুবর্গ পর্য্যন্ত পবিত্র হয়। ৩১।।
মনুষ্য শত জন্ম তপস্যায় পবিত্র হইয়া মনুষ্য কর্ম্মক্ষেত্র ভারতে জন্ম গ্রহণ করেন, পরে সেই নর, হরি কথামৃত পানে সেই দুর্লভ জন্ম সফল করিয়া থাকেন। ৩২।।
হরির অর্চ্চনা, হরির বন্দন, হরিমন্ত্রজপ, হরিসেবা, হরিস্মরণ, হরিগুণ কীর্ত্তন, নিরন্তর অভীষ্ট হরিগুণ শ্রবণ, হরিতে আত্ম নিবেদন ও হরির দাস্য এই নবধা ভক্তি লক্ষণ শাস্ত্রে নির্দ্দিষ্ট আছে, জীব ভারতে জন্ম পরিগ্রহ করিয়া ঐ নবধা ভক্তি প্রসঙ্গ শ্রবণে স্বীয় জন্ম সফল করে। ৩৩-৩৪।।
হরিভক্তিপরায়ণ ব্যক্তির কখন কোন বিঘ্ন ও আয়ুঃক্ষয় হয় না। গরুড় দর্শনে সর্প যেমন ভয়ে পলায়ন করে তদ্রুপ তদ্দর্শনে কাল তাহার নিকট হইতে ভয়ে পলায়ন করিয়া থাকে। ৩৫।।
ভক্তবৎসল হরি স্বয়ং সর্ব্বদাই সেই ভক্ত নিকটে অবস্থান করেন, এবং শীঘ্রই অণিমাদি সিদ্ধি সমুদায় তাহার করতলস্থ হয়। ৩৬।।
সুদর্শন চক্র পরাৎপর হরির আজ্ঞাক্রমে দিবানিশি সেই ভক্তের রক্ষার্থ তৎসন্নিধানে ভ্রমণ করিয়া থাকেন সুতরাং কেহই তাহার অণুমাত্র অনিষ্ট সাধনে সক্ষম হইতে পারে না। ৩৭।।
যেমন শলতগণ জ্বলদগ্নি দর্শনে সেই অনল নিকট হইতে পলায়ণ করে, তদ্রুপ যমকিঙ্করগণ স্বপ্নেও সেই হরিপরায়ণ সাধু ব্যক্তির নিকটস্থ হইতে সমর্থ হয় না, হরিভক্তজনের রোগ, শোক, বিঘ্ন, বিপদ, সমস্তই বিদুরিত হয়, এমন কি মৃত্যু ও মৃত্যুভয়ে তাহার নিকট আগমন করিতে পারে না। ৩৮-৩৯।।
হরিপরায়ণ সাধুজনের প্রতি মুনি, ঋষি ও দেবগণ সতত প্রসন্ন থাকেন, সুতরাং সেই ব্যক্তি পরাৎপর হরির প্রসাদে সর্ব্বত্র নিঃশঙ্কে পরম সুখে কাল হরণ করেন। ৪০।।
দেবর্ষে! হরিকথার সর্ব্বদা তোমার আত্যন্তিকী রতি দৃষ্ট হইতেছে। তোমার পক্ষে এরূপ হওয়াও আশ্চর্য্য নহে, জনকের স্বভাব নিশ্চয়ই জন্যে প্রবর্ত্তিত হইয়া থাকে। ৪১।।
হে বিপ্রেন্দ্র! সর্ব্বলোক পিতামহ ব্রহ্মার মানসে তোমার জন্ম, সুতরাং তোমার হরিভক্তি বিষয়ে কি প্রশংসা করিব, কারণ যাহার যেমন বংশে জন্ম তাহার সেইরূপ মতির আবির্ভাব হয়। ৪২।।
যে জগদ্বিধাতা ব্রহ্মা নিরন্তর নবধাভক্তি লক্ষণ ক্রমে হরির আরাধনায় প্রবৃত্ত হইয়া তদীয় চরণ সেবা করিতেছেন তিনি তোমার পিতা, অতএব তোমার বিষয়ে অধিক বলা বাহুল্য মাত্র। ৪৩।।
যে ব্যক্তি হরি কথায় আত্যন্তিকী রতি প্রযুক্ত পুলকাঞ্চিত কলেবর হইয়া প্রেমাশ্রু বিসর্জ্জন পূর্ব্বক তাহাতে নিবিষ্ট চেতা হন, পণ্ডিতগণ তাহাকেই ভক্তরূপ নির্দ্দেশ করিয়া থাকেন। ৪৪।।
যে ব্যক্তি কায়মনোবাক্যে পুত্র কলত্রাদি হরিতে অর্পণ করিয়া তৎ সমুদয়কে হরির পরিবার বলিয়া অবধারণ করেন তিনিই পণ্ডিতগণ কর্ত্তৃক ভক্তরূপে কথিত হন। ৪৫।।
যে ব্যক্তি সর্ব্বজীবে দয়াবান হইয়া নিখিল জগৎ কৃষ্ণময় দর্শন করেন সেই ব্যক্তিই মহাজ্ঞানী ভক্ত বৈষ্ণবোত্তম বলিয়া নির্দ্দিষ্ট হইয়া থাকেন তাহার সংশয় মাত্র নাই। ৪৬।।
যাঁহারা নির্জ্জনে তীর্থসম্পর্কে নিঃসঙ্গ হইয়া পরমানন্দে হরির চরণ কমল ধ্যান করেন, তাঁহাদিগকেই বৈষ্ণব বলিয়া কীর্ত্তন করা যায়। ৪৭।।
যাহারা নিরন্তর হরিনাম কীর্ত্তন, হরিগুণ গান, হরিমন্ত্রজপ, হরি কথা শ্রবণ ও হরির গুণগাথা বর্ণনা করেন তাহারা বৈষ্ণব নামে অভিহিত হইয়া থাকেন। ৪৮।।
সুস্বাধু মিষ্ট বস্তু লাভ করিবামাত্র তাহা পরাৎপর হরিতে নিবেদন জন্য যাঁহার অন্তঃকরণ পুলকিত হয় তিনিই জ্ঞানিগণাগ্রগণ্য ভক্ত বলিয়া নির্দ্দিষ্ট হইয়া থাকেন। ৪৯।।
যে ব্যক্তি বাহ্যিক পূর্ব্ব কর্ম্মাজ্জিত ফল ভোগ করেন; কিন্তু স্বপ্ন কি জাগ্রদবস্থা দিবারাত্রি মনকে হরির চরণ কমলে নিবিষ্ট রাখেন তিনিই বৈষ্ণব নামে অভিহিত হন। ৫০।।
গুরুমুখ হইতে যাঁহার শ্রবণ বিবরে কৃষ্ণ মন্ত্র প্রবিষ্ট হয়, মনীষিগণ তাঁহাকে মহাপূত বৈষ্ণব নামে কীর্ত্তন করেন। ৫১।।
হরিপরায়ণ ভক্ত ব্যক্তি ঊর্দ্ধতন সপ্ত ও অধস্তন সপ্ত পিতৃ পুরুষ, মাতামহাদি সপ্ত পুরুষ, সহোদরা ভগিনী, জননী, মাতামহী, পুত্র, কলত্র, কন্যা, বন্ধু, শিষ্য, দৌহিত্র ও কিঙ্কর কিঙ্করী পর্য্যন্ত সমুদায়কে উদ্ধার করিতে সমর্থ হন। ৫১-৫৩।।
সমস্ত তীর্থ বৈষ্ণব স্পর্শ ও বৈষ্ণব দর্শনের বাঞ্ছা করে, কারণ বৈষ্ণব সংসর্গে পাপিদত্ত পাপ হইতে সকল তীর্থের নিষ্কৃতি লাভ হয়। ৫৪।।
হরিপরায়ণ সাধু ব্যক্তি গোদোহন পরিমিত কাল মাত্র যে স্থানে অবস্থান করেন তথায় পৃথিবীস্থ সমস্ত তীর্থের আবির্ভাব হয়। জ্ঞান পূর্ব্বক গঙ্গামরণে ও হরিস্মরণ পূর্ব্বক মৃত্যুতে যেমন জীব মুক্তিলাভ করে তদ্রুপ ঐ স্থানে পাপী ব্যক্তি নিশ্চয় মুক্তিলাভ করিয়া হরির পরম পদ লাভ করিয়া থাকে। ৫৫-৫৬।।
যেমন তুলসী কাননে, গোষ্ঠে শ্রীকৃষ্ণমন্দিরে বৃন্দাবণ্যে হরিদ্বারে বা অন্যান্য তীর্থ সমুদায়ে স্নানাবগাহনে পাপিগণ পাপমুক্ত হয় তদ্রুপ বৈষ্ণবের স্পর্শ বায়ু যোগে পাপাত্মাদিগের সমস্ত পাপের ধ্বংস হইয়া থাকে তাহার সংশয় মাত্র নাই। ৫৭-৫৮।।
যেমন জ্বলদগ্নিতে প্রদত্ত শুষ্কতৃণ ভষ্মীভূত হয়, তদ্রুপ বৈষ্ণব সংস্পর্শে জীবের সমস্ত পাপ নষ্ট হইয়া যায়। ৫৯।।
যাহারা হরিপরায়ণ ব্যক্তিকে পথে গমন করিতে দর্শন করেন, তাহাদিগের নিশ্চয় সপ্তজন্মার্জ্জিত পাপের ক্ষয় হয়। ৬০।।
যে নরাধমগণ পরমাত্মা হরিতে ও হরি ভক্তি পরায়ণ সাধু ব্যক্তিকে নিন্দা করে, তাহাদিগের শত জন্মার্জ্জিত পুণ্য ক্ষয় হইয়া যায় এবং তাহারা দেহান্তে ভয়ানক মহাঘ্যের কুম্ভীপাক নরকে পতিত হইয়া তথায় চন্দ্র সূর্য্যের স্থিতি কাল পর্য্যন্ত কীটগণের দংশনে অশেষ যন্ত্রনা ভোগ করিয়া থাকে। সেই পাপাত্মার দর্শনে জীবের নিশ্চয় পূণ্যক্ষয়, জ্ঞানবান ব্যক্তি দৈবক্রমে ঐ রূপ পাপাত্মাকে দর্শন করিলে গঙ্গাস্নান ও সূর্য্য দর্শন করিয়া শুদ্ধিলাভ করেন। ৬১-৬৩।।
পাতকীজন বৈষ্ণব সংস্পর্শমাত্র পাপ হইতে বিমুক্ত হয়, বৈষ্ণব সংস্পর্শ মাত্র তদীয় হৃদয়াধিষ্ঠাতা মধুসূদন সেই পাপিজনের সমস্ত পাপের ধ্বংস করেন। ৬৪।।
হে হরি পরায়ণ নারদ! এই আমি তোমার নিকট সনাতন হরির ও হরি পরায়ণ সাধুদিগের গুণ কীর্ত্তন করিলাম। এক্ষণে হরির মাধুর্য্য জন্মলীলা কহিতেছি তুমি অবহিত চিত্তে শ্রবণ কর। ৬৫।।
ইতি শ্রীব্রহ্মবৈবর্ত্তে মহাপুরাণে নারায়ণ নারদ সন্বাদে শ্রীকৃষ্ণজন্মখণ্ডে বিষ্ণু বৈষ্ণব গুণ প্রশংসা নাম প্রথম অধ্যায় সম্পূর্ন।।
মধু সাহা
পরম পুরুষ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ
চাই।