তুলনারহিত অনন্তব্রহ্মাণ্ডপতি, উদ্দীপ্ত দিনকরকিরণ সদৃশ জগৎপ্রকাশক, সমস্তবেদবেদ্য পুরুষশ্রেষ্ঠ, যিনি সর্ব্বান্তর্যামী, সর্ব্বেশ্বর, জগতের উৎপত্তি স্থিতি লয়াদিকারণ, সকলের আকর্ষণ, পুরুষ প্রধান ও সর্ব্ববেদবেদান্তে যাঁহাকে ব্রহ্ম বলিয়া ব্যাখ্যা করেন, সেই সর্ব্ব বিঘ্নবিনাশন গণেশরূপ পরমাত্মাকে ভজনা করি।।১।।
যে প্রভুর নাভিপদ্মে উৎপন্ন হইয়া পদ্মযোনি ব্রহ্মা এই স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতালাদি লোক সর্জ্জন করিবার নিমিত্র তপস্বীরূপে তপ আচরণে নিরন্তর অবস্থিতি করিতেছেন, সেই অপরিসীম পুরুষপ্রধান সকলের স্তবনীয় পরমাত্মা নারায়ণকে আমি স্তুতি করি।।২।।
নৈমিষারণ্য ক্ষেত্রমধ্যে বহ্বৃচ শৌনকাদি ষষ্টি সহস্র ঋষি দ্বাদশ বার্ষিক সত্র সমাপনান্তে ক্লান্তচিত্তে অবস্থান করতঃ সমাগত রোমহর্ষণ পুত্র সূতকে কৃতাসন প্রদানে সমাদরপূর্ব্বক ভগবত্তত্ত্ব কথা জিজ্ঞাসা করিতেছেন।
শৌনক সূতকে সাধু সম্বোধনে কহিতেছেন, হে সাধো! তুমি আমাদিগের সংশয়চ্ছেদনার্থ সমস্ত প্রশ্নের আনুপুর্ব্বিক যে সকল উত্তর করিলে, তাহা অতি সাধু অর্থাৎ সুপ্রশংসনীয়, হর্ষসূচক এতন্নিমিত্ত সাধুশব্দের দ্বিরুক্তি হয় ইতি ভাবঃ।।৩।।
হে সূত! তোমাভিন্ন এই ত্রিলোকে সংশয়চ্ছেত্তা এবং সুবক্তা পুরুষ অপর কেহই নাই, সম্প্রতি আমরা সন্দেহরূপ মহাশৃঙ্খলে আবদ্ধ হইয়া রহিয়াছি, তুমি বাক্যরূপ খড়্গদ্বারা সেই বন্ধন চ্ছেদন করতঃ আমাদিগকে পরিমুক্ত কর।। বহুগোষ্ঠীয় প্রশ্ন, এই আকাঙ্ক্ষার অভিপ্রায়ে আমাদিগের এই ষষ্ঠ্যন্ত বহুবচনপদ প্রয়োগ করা হইল, অর্থাৎ সকলের প্রধান শৌনক, তদুক্তিমতে এক বচনান্ত মাং শব্দ মূলে উল্লেখ করিয়াছেন ইতি ভাবঃ।।৪।।
হে সূত! আমরা অপরাণীয় ভবজলধিতে পতিত হইয়াছি, এক্ষণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণেরলীলা সংশ্রিত বাক্যরূপাতরণীদ্বারা আমাদিগকে দুস্তর জন্মসমুদ্র হইতে উদ্ধার করা তোমার উচিত।।৫।।
হে সূত! ভবযোগে পীড্যমান হইয়া মৃতপ্রায়, আমাদিগকে সুদিব্য ভগবল্লীলামৃত রস ঔষধ প্রদানদ্বারা সংজীবিত কর।।৬।।
হে লৌমহর্ষণে! অর্থাৎ লোমহর্ষণপুত্র লৌমহর্ষ্ণি হে সূত! দুষ্পার ভব সিন্ধু পারেচ্ছু এই ব্রাহ্মণদিগকে উরুক্রম শ্রীকৃষ্ণলীলা উদ্গীত প্লব অর্থাৎ হরিসঙ্গীত রূপ ভেলাদ্বারা ভবপারাপারের পরপারে লইয়া চল।।৭।।
(চলবে)
Leave a Reply