দ্বাদশ অধ্যায়
দানবিধি*
অনন্তর ঋষিগণ পুনর্ব্বার জিজ্ঞাসা করিলেন,–“হে মহাত্মন্! কাহাকে এবং কাহারই বা দান করা কর্ত্তব্য? কিরূপ সময় দান পক্ষে প্রশস্ত এবং কাহারই বা প্রতিগ্রহ করা উচিত, এক্ষণে তাহা আমাদিগের নিকট কীর্ত্তন করুন।” ইহাতে পরমতত্ত্বজ্ঞ সূত পুনর্ব্বার বলিতে আরম্ভ করিলেন,–“হে বিপ্রেন্দ্রবর্গ! ব্রাহ্মণই সর্ব্ববর্ণের পরম গুরু; তাঁহাকেই দান করা কর্ত্তব্য। ব্রাহ্মণই প্রতিগ্রহণ করিবে; ইহা শাস্ত্রীয় বিধান। ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য কখনই দান গ্রহণ করিতে পারে না, অতএব তাহাদিগকে দান করা অকর্ত্তব্য। কিন্তু তাহা বলিয়া যে, ব্রাহ্মণকুলে জন্মগ্রহণ করিলে সকলেই প্রতিগ্রহপাত্র হইতে পারে, এমত নহে; ইহার বিশেষ নিয়ম আছে। যে ব্যক্তি দেবদ্বেষী। পুত্রহীন, দাম্ভিক, অথবা দম্ভাচারনিরত; তাহাকে দান করিলে নিষ্ফল হয়। যাহারা বেদবিদ্বেষী, দ্বিজকুলকে যাহারা ঘৃণা করে, অথবা যাহারা তাঁহাদের অনিষ্ট কামনা করিয়া থাকে, যাহারা স্বাশ্রমোচিত আচার হইতে পরিভ্রষ্ট; যাঁহারা পরদাররত, পরের দ্রব্যদর্শনে যাহাদের লোভ উদ্রিক্ত হয়, এবং যাহারা নক্ষত্রপাঠক, তাহাদিগকে দান করিলে নিষ্ফল হইয়া থাকে। যে ব্যক্তি অসূয়াবিষ্ট, কৃতঘ্ন, মায়ামূঢ়, হিংসক অথবা শঠ; যে দ্বিজ অযাজ্য করিয়া জীবন ধারণ করে এবং স্বার্থ সাধনার্থ অপরের উপর অত্যাচার করিয়া থাকে, তাহাকে দান করিলে তাহা নিষ্ফল হইয়া যায়। যাহারা পাপাচারী; স্বজনগণের নিকট যাহারা নিরন্তর নিন্দিত হইয়া থাকে, তাহাদিগের নিকট দান গ্রহণ অথবা তাহাদিগকে কিছুই দান করিতে নাই। যাহারা সৎকর্ম্মের অনুষ্ঠান নিয়ত নিরত, তাহাদিগকে এবং শ্রোত্রিয় ও আহিতাগ্নি, বৃত্তিহীন অথবা দরিদ্র কুটুম্বকে দান করা কর্ত্তব্য। হে বিপ্রবর্গ! দেবপূজাসক্ত, সৎকথাপরায়ণ,–বিশেষত দরিদ্রকে যত্ন সহকারে সর্ব্বদা দান করা উচিত।
—————–
* শাস্ত্রকারদিগের মতে দান ত্রিবিধ,–সাত্বিক, রাজস, ও তামস।
কাহার কাহারও মতে দান চতুর্ব্বিধ;–নিত্য, নৈমিত্তিক, কাম্য ও বিমল। যে দান নিষ্কাম অর্থাৎ ফলের অনুদ্দেশে ব্রাহ্মণকে দেওয়া হয়, তাহা নিত্য; যাহা পাপশাস্তির নিমিত্ত প্রদত্ত হয়, তাহা নৈমিত্তিক; ঐশ্বর্য্য, গৌরব, পুত্র, জয় ও স্বর্গ প্রভৃতির কামনায় যাহা অর্পিত হয়, তাহা কাম্য এবং ঈশ্বরের প্রীতিসাধনার্থ ধর্ম্মপূর্ণ হৃদয়ের সহিত ব্রহ্মবিদ ব্রাহ্মণকে যাহা কিছু দেওয়া যায়, তাহাই বিমল। এই শেষোক্ত দানই শ্রেষ্ঠ দান।
Amritendu Mukhopadhyay
এটা কার অনুবাদ সেই নামটা যদি একটু দেন।
বাংলা লাইব্রেরি
পুরো বইটি পাইনি। অনেক পেজ মিসিং। অনুবাদকের নাম পাওয়া যায়নি। প্রিন্টও খুব পুরানো। তাই বাকিটুকু আর করা হয়নি।