রান্নার প্রস্তুতি
যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, কাজের ধারা এবং খাওয়ার রুচিরও পরিবর্তন হয়ে আসছে। সৃজনশীল মানুষ রান্নাকে বই পুস্তকের আওতায় এনে রন্ধনজ্ঞানের সীমা বিস্তৃত করেছে। এ সঙ্গে প্রচলন হয়েছে রেসিপির। রেসিপি এমন একটি রন্ধন সম্বন্ধীয় তালিকা যা পড়ে অনায়াসে খাবার প্রস্তুত করা যায়। পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে পানীয়, সুপ, সালাদ, মিস্টানন, মাছ, মাংস ও সবজি দিয়ে তৈরি বিভিন্নরকম খাবার প্রস্তুতের রেসিপি দেয়া হয়েছে।
রেসিপি
রান্নার রেসিপিতে উপকরণের মাপ এবং কিভাবে রান্না করতে হবে তা লেখা থাকে। রেসিপি দেখে রেসিপির মাপে রান্না করলে জিনিসের অপচয় হয় না। কতজন খেতে পারবে সেই পরিবেশন সংখ্যাও রেসিপিতে উল্লেখ থাকে। তাছাড়া রেসিপি দেখে নুতন খাবার রান্না করা যায়। খাবার কিভাবে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে সে নির্দেশও রেসিপিতে দেয়া হয়।
রান্না করার জন্য কিরূপ প্রস্ততির প্রয়োজন :
(১) রেসিপি পড়ে ঠিকভাবে বুঝে নিতে হবে।
(২) রেসিপিতে যে সব উপকরণ দেয়া হয় তা ব্যবহার করতে হবে।
(৩) উপকরণ সাবধানে এবং সঠিকভাবে মাপতে হবে।
(৪) রেসিপিতে রান্নার যে কৌশলের উল্লেখ থাকে সে কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
(৫) খাদ্য প্রস্ততে উপযুক্ত পাত্র ব্যবহার করা, সঠিক তাপে রান্না করা, পানি মাপ মতো দেয়া এবং হাঁড়ির মুখ খোলা রেখে বা বন্ধ করে রান্না করার বিষয়সমুহ মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করতে হবে।
(৬) রান্না শেষে সময় মতো চুলা থেকে নামাতে হবে।
(৭) রেসিপির নির্দেশ মতো খাবার ঠান্ডা বা গরম এবং বিভিন্ন সস ও চাটনি ইত্যাদি সহযোগে নানা উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
রেসিপি বুঝার নির্দেশ
রেসিপি বুঝতে হলে খাদ্যের মাপ ও ওজন, রান্নার সরঞ্জম, রান্নার কৌশল, বিভিন্ন পদ্ধতিতে রান্না, রান্নার উপকরণ ও মসলা এবং বিনিময় বা বিকল্প খাদ্য ইত্যাদি কয়েকটি বিষয় সম্বন্ধে আগেই পড়ে জেনে নিতে হবে।
\’রান্না খাদ্য পুষ্টি\’ বইয়ের রেসিপি হতে কিছু কিছু অংশ উদ্ধত করে বুঝিয়ে দেয়া হলো :
(১) মাংস, টুকরা
(২) চিংড়িমাছ, খোসা ছাড়ানো (৩) পেঁয়াজ, কুচি (৪) আলু, স্লাইস (৫) আম, ফালি (৬) মরিচ, বাটা (৭) দারচিনি, ২ সে.মি. লম্বা (৮) পাউরুটি, ২ সে.মি. পুরু |
১ কেজি
১/২ কেজি ১ টে.চামচ ৪ টি ২ টি ১ চা চামচ ২ টুকরা ৩ স্লাইস |
১নং- এক কিলোগ্রাম মাংস টুকরা করে নেয়া বুঝায়।
২নং- চিংড়িমাছ খোসা ছাড়িয়ে আধা কাপ মেপে নেয়া্ বুঝায়।
৩নং- পেঁয়াজ কুচি করে ১ টেবিল চামচ নিতে হবে।
৪নং- চারটি আলু খোসা ছাড়িয়ে স্লাইস করে কাটতে হবে।
৫নং- দুটো আম খোসা ছাড়িয়ে j¤^v টুকরা করতে হবে।
৬নং- বাটা মরিচ ১ চামচ নেয়া বুঝায়।
৭নং- ২ সে.মি. লম্বা ২ টুকরা দারচিনি এবং
৮নং- ২ সে.মি.পুরু ৩ স্লাইস পাউরুটি বুঝায়।
রেসিপি বুঝতে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য রান্নার জ্ঞাতব্য বিষয়গুলো সহজভাবে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে মাপ ও ওজনের সাংকেতিক চিহ্ন (যেমন টে.চা.কেজি) রান্নার কৌশল, রান্নার পদ্ধতি, রান্নার তৈজসপত্র, তাপ, মসলা ইত্যাদি বিষয়গুলো পড়ে বুঝে নিতে হবে। রেসিপি বুঝে ঠিক মাপে এবং ঠিক পদ্ধতিতে রান্না করা একান্ত দরকার। তবে লবণ, চিনি এবং ঝাল ও মসলা ব্যবহারে নিজের পছন্দমতো মাপে কম বা বেশি করা যেতে পারে। চুলার তাপ বেশি বা কম হলে পানির পরিমাণে তফাৎ হয়। এ অবস্থায় নিজের বিবেচনায় পানির পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে। রেসিপিতে যে পরিমাণ দেয়া আছে তার চেয়ে দ্বিগুণ/ তিনগুণ খাবার তৈরি করতে হলে উপকরণের পরিমাণগুলো ২, ৩, …. দিয়ে গুণ করে নিতে হবে। আবার কম করতে চাইলে ২, ৩ ….. দিয়ে ভাগ করতে হবে।
Leave a Reply