ধরি নাপিতিনী বেশ, মহলেতে পরবেশ,
যেখানেতে বসিয়াছে রাই।
হাতে দিয়া দরপণী, খোলে নখ-রঞ্জণী,
বোলে বৈস, দেই কামাই।।
বসিলা যে রসবতী নারী।
খুলিল কনক বাটী, আনিয়া জলের ঘটী,
ঢালিলেক সুবাসিত বারি।।
করে নখ-রঞ্জণী, চাঁছয়ে নখের কণি,
শোভিত করিল যেন চাঁদে।
আলসে অবশ-প্রায়, ঘুম লাগে আধ গায়,
হাত দিলা নাপিতিনী কাঁধে।।
নাপিতিনী একে শ্যামা, ননীর পুতলী, ঝামা
বুলাইছে মনের আনন্দে।
ঘসি ঘসি রাঙ্গা পায়, আলতা লাগায় তায়,
রচয়ে মনের হরষেতে।।
রচয়ে বিচিত্র করি, চরণ হৃদয়ে ধরি,
তলে লিখে আপনার নাম।
কত রস পরকাশি, হাসয়ে ঈষৎ হাসি,
নিরখি নিরখি অবিরাম।।
নাপিতিনী বলে \”ধনি, দেখহ চরণ খানি,
ভাল মন্দ করহ বিচার।\”
দেখি সুবদনী কহে, \”কি নাম লিখা উহে,
পরিচয় দেও আপনার।।\”
নাপিতিনী কহে \”ধনি, শ্যাম নাম ধরি আমি,
বসতি যে তোমার নগরে।\”
দ্বিজ চণ্ডীদাস কয়, এই নাপিতিনী নয়,
কামাইলা যাও নিজ ঘরে।।
————–
শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ং দৌত্য ।। ধানশী ।।
যাবক – আলতা। নখ-রঞ্জণী – নরুণ। চাঁছয়ে – বিভিন্ন পাঠ \”চাঁকয়ে।\” একে – \”বরণ একে\” পাঠান্তর। প্রা, কা, সং। আনন্দে – \”আকুতে\” পাঠও আছে।
নাপিতিনী বলে \”ধনি, দেখহ চরণ খানি,
ভাল মন্দ করহ বিচার।\”
দেখি সুবদনী কহে, \”কি নাম লিখা উহে,
পরিচয় দেও আপনার।।\”
বিভিন্ন পাঠঃ
নাপিতিনী বাণী শুনি, দেখিয়া চরণ খানি,
তলে লেখা দেখে শ্যাম নাম।
তবে বুঝি আপন মনে, চাহে নাপিতিনী পানে,
বলে তুমি কহ আপন নাম।।
–প্রা, কা, সং।
Leave a Reply