বর্ষসেরা বইঃ ১৪১৩
মননশীল শাখা
দ্বিজেন শর্মার কুরচি তোমার লাগি
শংসাবচন
নিসর্গসখা দ্বিজেন শর্মা প্রথমে লিখেছেন গাছগাছালির বর্ণনা ও তাদের সৌন্দর্যের কথা। তাঁর লেখার উপজীব্য হিসেবে পরে যুক্ত হয়েছে প্রকৃতি ও মানুষের আন্তঃসম্পর্কীয় বিষয়গুলো এবং ওদের মধ্যেকার ক্রমবর্ধমান সংকটের স্বরূপ বিশ্লেষণ। সবই বিধৃত রয়েছে অনন্য এই বিজ্ঞানলেখকের কাব্যমিশ্রিত অনবদ্য গদ্যে। উদ্ভিদবিদ্যার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিজ্ঞানলেখায় তত্ত্বকথার ভয়াল বয়ান থাকে না; থাকে উদ্ভিদের সঙ্গে এই সুবেদী মানুষটির অন্তরঙ্গ সংলাপ, যা এই গ্রন্থটিরও একটি স্বাতন্ত্র্যনির্দেশক দিক।
রবীন্দ্রনাথের বনবাণী কাব্যগ্রন্থ থেকে চয়িত অলোকসুন্দর নামটা প্রমাণ করেছে যে নামে অনেক কিছুই আসে যায়। কবিগুরু লিখেছেন, ‘কুরচি পড়েছ ধরা, তুমিই রবির আদরিণী’। দ্বিজেন শর্মা লিখেছেন, কুরচি আমাদের বনকুসুম, অযত্নে জ্নে, শুভ্র ফুল ফুটিয়ে সুগন্ধ বিলায়, ওষুধ জুগিয়ে মানুষকে বাঁচায়। কুরচি হোক আমাদের প্রকৃতিপ্রেমের প্রতীক।
বিশটি নিবন্ধে লেখক যেন একটি গল্পই বলে গেছেন, যে গল্পের কুশীলব প্রকৃতি ও পরিবেশ। বিজ্ঞানগল্পের এ গ্রন্থটিতে লেখক নৈসর্গিক শোভাসমৃদ্ধ উদ্যান গড়ার নানা কৌশল সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন। আমাদের আরণ্য পুষ্পগুলোকে দেশের নাগরিক উদ্যানে ঠাঁই দেওয়ার কথা বলে তিনি আক্ষেপ করেছেন যে ‘আমাদের দেশে লিখে ব্যক্তিগত সুনাম কুড়ানো ব্যতীত কোনো বাস্তব ফললাভ ঘটে না’।
এ গ্রন্থ তা ঘটাতে সহায়ক হবে বলে মনে করেন বিচারকগণ।
সে জন্যই এ পুরস্কার।
সূত্রঃ প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৫, ২০০৮।
Leave a Reply