গৌড়জন অভ্যাগতেষু
সেলিম আল দীন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার সম্মেলন ও ঢাকা থিয়েটার উৎসব ২০০২-এর ্নরণিকায় মুদ্রিত এই রচনাটি তাঁর কোনো গ্রন্থে এখনও সংকলিত হয়নি
শিল্পের ভূগোল যদি মানি তবে স্বীকার করতেই হবে এরও একটা সুনিশ্চিত এনভায়রনমেন্ট আছে। যে দ্রাক্ষা ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুতে সুমিষ্ট-আর্দ্র অঞ্চলে তা নির্মমরূপে খর। যে ট্র্যাজেডি গ্রিসের এপিডোরাস মঞ্চে জীবনের অবিকল্প পতনকে আবিষ্কার করেছিল, তাকে বাঙালির জীবনের মধ্যে কখনোই খুঁজে পাওয়া যেত না। যদি তা হতো তবে গ্রিক ট্র্যাজেডিগুলো এ দেশেই রচিত হতে পারত। যে জটিল ও রক্তাক্ত মানুষ শেক্সপিয়রের নাটকে ভিড় করেছে-আমরা তাদের মানবযাত্রার এক আশ্চর্য দিক বলে চিহ্নিত করতে পারি, কিন্তু স্বভূমিতে কৃত্রিম রূপে তাকে ফলাতে পারি না-এবং তা যে ফলেনি সে জন্য গ্লানিবোধ এক ধরনের হীনম্মন্যতাপ্রসূত। উপনিবেশের শাসন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বাঙলার সংস্কৃতিকে। ইংরেজদের রক্তচক্ষু এ কথা শিখিয়েছিল যে, আমাদের পক্ষে যা স্বাভাবিক, তাই পরিত্যাজ্য। তাদের রচিত ইতিহাসের পথেই আমাদের পুরো জনপদের ইতিহাস। সেখানে দুর্ভিক্ষ নেই, সাম্প্রদায়িকতার কর্কশ হাত থেকে রক্তঝরা নেই, সহস্র বছরের শিল্পরীতির নাড়িছেঁড়া আর্তনাদ নেই-আছে কেবল অন্ধকার থেকে আলোকে আসার পথ।
প্রাচ্যভূমির মহৎ ঐতিহ্য কিংবা তার জীবন পরিচর্যার কিছু বিষণ্ন দিক ছিল এ কথা স্বীকার করতেই হয়। তা কোথায় না ছিল। ইউরোপের ইতিহাস তো এ কথাই বলে যে-মহৎ সাহিত্য ও জীবন ভাবনার সঙ্গে সেখানে দাসপ্রথা, ডাকিনী চর্চা ও নারী নির্যাতন, হত্যা, নরমুন্ড শিকার ধর্মের একান্ত প্রভাবের মাধ্যমে ব্যক্তিজীবনকে নস্যাতের চেষ্টা সবই ছিল, সঙ্গে পররাজ্য গ্রাস-নির্মমতম পদ্ধতিতে স্বাধীনতার স্কূরণকে বিদমন।
সর্বভারতীয় জাগৃতির যে সম্ভাবনা, তা পলাশীর যুদ্ধে দু শ বছরের জন্য অপসৃত হলো কিন্তু তারপর দ্বিখণ্ডিত ও উদ্ভট রাষ্ট্রব্যবস্থায় যে ভূখণ্ডকে আমরা পেলাম তা বিলাতি গণতন্ত্রের বিশেষ ছাড়, রাজতন্ত্রের মুকুটখসানো গণতন্ত্র। একই ভূখণ্ড, সহাবস্থানের সহস্র বছরের ঐতিহ্য রাষ্ট্রীয় বিচ্ছিন্নতায় পরস্পর সন্দেহপ্রবণ হয়। একে অন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বীরত্বের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে। সভ্য পৃথিবীর সব সংজ্ঞাসূত্র ভেঙে ধর্মের ছদ্মাবরণে রাজনীতি মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়। যে প্রাচ্য একদা নবীন ঊষালোকে আয়াত ও বাণী বিকীর্ণ করেছিল বিশ্বময়, তা হয়ে ওঠে আমাদের মূঢ়তা ও ঔপনিবেশিক শাসনের অন্তিম দুঃস্বপ্ন। লাতিন আমেরিকার এক শীর্ষ লেখক ওরিয়েন্টকে স্বর্ণকণার দেশ বলেছিলেন। আমিও স্বীকার করি, ‘পুরাতত্ত্বের গাঁটাকাটা’ নয়-এ প্রাচ্যের যথার্থ আত্মিক সম্পদ।
ঢাকা থিয়েটার ১৯৭৩ সালে দেশজ ও মৌলিক নাটকের প্রতিশ্রুতিদানপূর্বক আবিভূêত হয়েছিল। তখন বাংলাদেশের নাটকের সামগ্রিক অবস্থাটা ছিল খুবই হতাশাব্যঞ্জক। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মুনীর চৌধুরীর হাতেগোনা কয়েকটি নাটক ব্যতীত অন্য নাটকগুলোর পাঠমান ছিল অত্যন্ত নিচু। আর ছিল কিছু অনুবাদ রূপান্তর। মঞ্চে আমাদের জীবন একান্তরূপে উপস্থাপিত হওয়ার মতো তেমন কোনো নাটক ছিল না।
কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার উদ্দামতা মঞ্চে আমাদের আত্ম অন্বেষণের পর্বকে সাহস দিয়েছিল। আমরা প্রসেনিয়াম হাতড়েই প্রসেনিয়াম ভাঙার পথ খুঁজে পেয়েছিলাম। আমরা খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে যাই পাশ্চাত্য শাস্ত্রসম্মত নাটকের পরিবর্তে আরও একটা নতুন এবং বাঙালির সহজাত নাট্যপদ্ধতির চিরায়ত ধাঁচকে। কাজটা সহজ ছিল না। অনধিগম্য অতীত, সমকালীন নাট্যমডেলের অখণ্ড প্রতাপ-সব মিলিয়ে একটা শঙ্কা ও অনিশ্চয়তা। যেমন-‘কিত্তনখোলা’ দেখে একজন বলেছিলেন যে নাটকটি পুনর্লিখিত হবে কি না কিংবা কারও কারও বলা যে, সেটি কাব্য উপন্যাস নাটক-কোনোটির মধ্যেই পড়ছে না বিধায় তা পরিত্যাজ্য। কিন্তু ঢাকা থিয়েটারের ভরসা ছিল নিজের কাণ্ডজ্ঞানে, ইতিহাসের অন্বেষণ এবং তাকে আধুনিকতর সমৃদ্ধিদানের অপ্রমিত স্বপ্নে। কাজেই সেই পথে অগ্রসর হতে হলো-যে পথ উপনিবেশকালে লুপ্ত বি্নৃত এবং নিতান্ত লোকজজ্ঞানে পরিত্যক্ত। সেদিনের কম্পমান বুকে ঢাকা থিয়েটারের মঞ্চশিখা ক্রমেই উজ্জ্বল ধূম্রবিহীন শিখায় পরিণত হতে থাকে-এ সব বাক্য আত্মশ্লাঘাপ্রসূত মনে হলেও আজ তা-ই বলতে হয়। বলবার দরকার।
নতুন ধারার নাটকের প্রবর্তনার ক্ষেত্রে সংকটগুলোর মধ্যে প্রধান ছিল আমাদের ঔপনিবেশিক মানসিকতার নিত্য অভ্যস্ততা। এটা যেন একটা স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার হয়ে গিয়েছিল যে, মঞ্চে এক বা একাধিক লোক সংলাপ বলবে, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের ঘোর তৈরি করবে, তারপর পড়বে যবনিকাপট। কে কবে কোথায় নাটকের জন্য এই সংজ্ঞা তৈরি করেছিল, করলেই যে তা মানতে হবে কেন তার কোনো জবাব পাওয়া যাচ্ছিল না। যেন হবসের কল্পিত রাজ্যের রাজা আর প্রজা। একবার দাসখত লিখে দিয়েছিল বলে মানবজাতি ওই শর্তই পালন করে যাবে। অন্যদিকে ছিল নান্দনিক সংকট। বাঙলা ভাষায় প্রাচীন ও মধ্যযুগে, ইউরোপীয় প্লে বা থিয়েটার নেই আবার সংস্কৃত ভাষা থেকে কৃত ‘নাটক’ শব্দটিও হুবহু নাটক অর্থে বাঙলা নাটকের ইতিহাসে পাওয়া যায় না। যা পাওয়া যায়, তা গায়েন এবং চরিত্র দোহার মিলে দীর্ঘ দীর্ঘতম নৃত্যগীতসংবলিত আখ্যান। প্রশ্নটা তবে দাঁড়ায়, এই আখ্যানকে বাঙলা নাটকের ইতিহাসের ধারায় জুড়ে দেবার অর্থ কী? উত্তরে বলা যায় যে গায়েন চরিত্র দোহার দর্শকের সম্মুখে দাঁড়িয়েই কিংবা বসে তাঁদের ক্রিয়া সম্পন্ন করতেন। বিষয়টাকে ঢাকা থিয়েটার আধুনিকতার আলোকে দেখতে দেখতে চরিত্র বর্ণনা, প্রয়োজনে গীতনৃত্য সংযোগ দ্বারা চলতি থিয়েটারের কাঠামোর মধ্যেই নিয়ে এসে দাঁড় করায়। ফলে একান্ত চরিত্র-নির্ভরতার পরিবর্তে মঞ্চে বর্ণনার পরিসর যুক্ত হতে থাকে। এমনকি আত্ম আবিষ্কারের প্রেরণায় পাঁচালি ও কথকতার নানা ধারা এর সঙ্গে নানা মাত্রাভেদে গৃহীত হলো।
বাঙলা উপাখ্যানের দর্শকানুবর্তিতার গুণটি ঢাকা থিয়েটার বাঙালির নিজস্ব নন্দন কৌশলরূপে চিহ্নিত করল তার বেশ কয়েকটি নাটকে। ফলে ইউরোপীয় থিয়েটারের চলতি কাঠামোটা নাট্যের চারপাশ থেকে বিদায় নিল। অভিনয়, রচনা, নির্দেশনার ক্ষেত্রে বাঙালির নাট্যোপাখ্যান পরিবেশনার কৌশল আহৃত হবার ফলে সে স্থলেও পাশ্চাত্য ধাঁচ পরিত্যক্ত হতে থাকল।
আজ আমরা যত সহজে বর্ণনাত্মক নাট্য, বর্ণনাত্মক অভিনয়, কথানাট্য, পাঁচালিধারা প্রভৃতি কথা উচ্চারণ করি, খ্রিষ্টীয় বিশ শতকের নব্বই সালের দিকেও শব্দগুলো উচ্চারণে আমাদের আড়ষ্টতা, সন্দেহ কম ছিল না।
আজ দেখতে পাই তরুণতর নাট্যকার-নির্দেশকেরা এ পথেই, শিল্পরীতি সমৃদ্ধ ইতিহাসের পথেই তাঁদের নাট্য রচনার পথ খুঁজে পেতে চাইছেন।
প্রবন্ধের বক্তব্য থেকে এ কথা মনে করলে চলবে না যে বাঙলা নাটকের নবরূপাধার সংকীর্ণ জাতিগত আবেগবশত নিজেকে বিশ্ববঞ্চিত করেছে। আমরা যা করতে চেয়েছি তা হলো ঔপনিবেশিক অন্ধত্ব, দাস্য মনোভাবের বিপরীতে স্বভূমিজ শিল্পরীতির প্রতিষ্ঠা। আর ওই প্রতিষ্ঠায় পাশ্চাত্যকে প্রভূত পরিমাণে আত্মস্থ করতে হয়েছে। পাশ্চাত্যের মহৎ শিল্প, বুননকৌশল, মানবদৃষ্টির যে যে স্থল আমাদের থিয়েটারে অনিবার্যরূপে গ্রহণ করা প্রয়োজন, আমরা তা করেছি। কিন্তু তা ক্রীতদাসের অনুচ্চারিত শাসন পালন নয়, মুক্ত চেতনায় এবং প্রয়োজনে সমাহৃত। সেই সঙ্গে আমরা চেয়েছি প্রাচ্য শিল্পের সমুন্নত দৃষ্টিভঙ্গিও যুক্ত হোক।
এই যে পাশ্চাত্য মডেল ভেঙে কাজ, সে কাজের শুরুটা কীভাবে হয়েছিল, কোন কোন পর্ব আমাদের চিন্তাকে সচ্ছল ও স্বনির্ভর করেছে, তার ইতিহাসটা অন্তত ্নরণ করা দরকার।
ঢাকা থিয়েটারের তিনটি নাটকে প্রথমত কিছু সম্ভাবনা ও সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। সেগুলো যথাক্রমে ফণীমনসা, মুনতাসীর ও শকুন্তলা। চরিত্রগত সংলাপনির্ভর হওয়া পরিণতি দানের যে ইউরোপীয় কৌশল তা থেকে ফণীমনসা ছিল ভিন্ন। অন্য দুটি নাটকের প্রথমটিতে ইউরোপীয় মিউজিক্যাল কমেডির সঙ্গে কিছু বর্ণনাত্মক ভাষা, প্ল্যাকার্ড, ছড়া, একশ্রেণীর আবৃত্তি যুক্ত হয়েছিল। শকুন্তলায় সংস্কৃতরীতির একটা আভাস আছে। পরে কিত্তনখোলায় এসে মধ্যযুগের আখ্যানরীতির কৌশলটা গৃহীত হলো-যুক্ত হলো প্রয়োজনীয় বর্ণনা, গীত, নৃত্য প্রভৃতি। এমনকি মধ্যযুগের পাঁচালিধারার চিত্রপটও সেখানে ঠাঁই করে নিয়েছিল।
ঠিক এ সময়ে, ঢাকা থিয়েটার বিশেষত কিত্তনখোলার সাফল্যের পর ভাবল, গ্রামবাঙলার জীবনের বিচিত্রতা, লোকায়ত সংস্কৃতি সম্বন্ধে তার অভিজ্ঞতা আহরণ প্রয়োজন। কোনো তত্ত্বের বশবর্তী হয়ে নয়, শুদ্ধ লোকায়ত সংস্কৃতি জানবার জন্য আমরা মেলাপত্তনের ব্যবস্থা করলাম। তাতে ঢাকা থিয়েটার অতিশয় অনুপ্রভ যাত্রাবর্তী একটা নাটক নিয়ে গেল। মেলাতে অভিনীত হলো ‘গাজীর গান’, নৃত্যসংগীতের, কথা ও বর্ণনার এক আশ্চর্য সঙ্গম প্রত্যক্ষণপূর্বক আমরা স্থির করি যে বাঙলা ঐতিহ্যবাহী বর্ণনাত্মক নাটকরূপে এর পরিচিতি অত্যাবশ্যক। সেই সঙ্গে এর কাহিনী ও উপস্থাপন কৌশলসমূহের সংস্থান পরীক্ষা করে দেখা। সেই ১৯৮১ সালের কথা। তালুকনগরে আজহার বয়াতির ওরসকে কেন্দ্র করে যে মেলা বসত তাতে আসাম, রাজশাহী, পাবনা থেকে ভক্ত ও বয়াতিরা জড় হতো। গ্রামবাসীর চাপে সে ওরস সঙ্কুচিত হয়ে খন্দকার আজহার বয়াতির উঠানের মধ্যে ঠাঁই নিয়েছিল। তালুকনগর মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুরের একটি অখ্যাত গ্রাম।
আমরা ওরসের তারিখ ৪ বা ৫ মাঘকে সামনে-পেছনে করে তিন-চার দিনের একটি নিয়মিত বাৎসরিক মেলা স্থাপনপূর্বক নাম দান করি ‘আজহার বয়াতির মাঘী মেলা’। পরে ‘তালুকনগর থিয়েটার’ নামে এক নাট্যসংগঠন স্থাপন করি। তখন পর্যন্ত আমরা বলতাম ‘গ্রামীণ থিয়েটার’-পরে ১৯৮৩ সালের দিকে যথাক্রমে ‘বংশাই থিয়েটার’ (সাভার), ‘জামশা থিয়েটার’ (সিংগাইর, মানিকগঞ্জ) গড়ে তুলি। এর মধ্যে জামশা থিয়েটারের (বর্তমান নাম-হাকীম আলী গায়েন থিয়েটার) পত্তন হলো এবং তার পরের ইতিহাস এ দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের জানা। কুড়ি বছর ভেঙে-গড়ে গ্রাম থিয়েটারের সংখ্যা এখন দেড় শতাধিক।
গ্রাম থিয়েটারের লক্ষ্য ঐতিহ্যের অন্বেষণ, সংরক্ষণ, বিশেষত বাঙলা নাট্যরীতিকে সৃষ্টিশীল পন্থায় আধুনিক মঞ্চের যুগোপযোগী করে তোলা। সেই পথে আবার বাঙালির এপিকের নমুনাগুলোকে ইতিহাসের ধারায় পাঠ, অনুধাবন এবং সৃজন প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখা।
আত্ম অনুসন্ধানের এই যৌক্তিক পন্থাতেই ঢাকা থিয়েটারের উদর থেকে জ্ন নিয়েছে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, ইতিহাসের সঙ্গে চলমানতার তাগিদকে মিশ্রিত করে আত্মরক্ষা ও সমৃদ্ধিসাধনের এক অনিবার্য শিল্পযাত্রা। সবচেয়ে অবাক হবার বিষয় যে গ্রাম থিয়েটারের কর্মীদের ব্যক্তিগত ব্যয় দ্বারা নির্বাহিত এই সংগঠন।
এত কিছু আয়োজন সামনে, তবু অনেক দূরের পথ। মুক্ত মানুষের সাধনা আজও তবু ব্যর্থ হবার নয়। এই উৎসব এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা, অর্থনীতিতে ধস নামছে, ধর্মীয় ভেদবুদ্ধি মাথা উঁচু করছে ক্রমশ। সমগ্র প্রাচ্যভূমি আজ পরাশক্তির নির্মম থাবার নিচে-সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতার মতো চল্লিশ-পরবর্তী বিষয়গুলো আবার ঈশ্বরের চন্দ্র সূর্যকে লুপ্ত করে দিতে উদ্যত। ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত এক গভীর মূঢ়তা ও অন্ধকার পরিব্যাপ্ত দেখতে পাই।
এই উৎসবের মধ্য দিয়ে আমাদের মানবিক সংহতির প্রাচ্যদেশীয় পন্থা উ্নুক্ত হোক। যে মহামানবেরা এসব ভূমিতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন, তাঁদের বাণী ও কর্মের মধ্যে আমাদের মুক্তজীবনলীলা চলুক।
সূত্রঃ প্রথম আলো, জানুয়ারী ১৮, ২০০৮।
Madhumita ganguli
Boro modhur