কীর্তন
না মিটিতে মনোসাধ
যেয়ো না হে শ্যামচাঁদ
আঁধার করিয়া ব্রজধাম।
সোনার বরনি রাই
অঙ্গে মাখিয়া ছাই
দিশা নাই, কাঁদে অবিরাম॥
রাই অবিরাম কাঁদে হে
তারে কাঁদায় যে তারই তরে
অবিরাম কাঁদে হে॥
তারে বুঝালে বুঝেনা
ধৈরজ নাহি বাঁধে হে।
তারে ত্যজিয়া যাইবে শ্যাম
কোন অপরাধে হে॥
সে যে নয়ন মেলিতে হেরে তুমিময় সবই হে,
হেরে নয়ন মুদিলে শ্যাম তোমারই সে ছবি হে
রহি সুনীল গগনতলে
ভুলিবে সে কোন ছলে
ও সুনীল রূপ অভিরাম।
রহি শ্যামল ধরার কোলে
ভুলিবে সে কোন ছলে
ও শ্যামল রূপ অভিরাম॥
সখা হে–
এখনও মাধবীলতা
কহেনি কুসুম-কথা
জড়াইয়া তরুর গলে,
এখনও ফোটেনি ভাষা,
আধ-ফোটা ভালোবাসা
ঢাকা লাজ-পল্লবতলে।
বলা হল না হল না,
বুকের ভাষা মুখে বলা যে হল না।
না শুনে তা রসময়
যেয়ো না হে অসহায়
অভিমান থাকে যদি মনে,
রাই যে কথা মুখে না বলে
হেরো তা চোখের জলে
বিদায়ে হেরো গো, যাহা
পেলে না মিলনে॥
সখা আমরা নারী, বলতে নারি!
আমরা মনের কথা বলতে নারি
চির-নয়নজলে গলতে পারি
তবু খুলে বলতে নারি।
মোরা নিজেরে নিজেই ছলতে পারি
মুখে তবু বলতে নারি।
মোরা মরণ-কোলে ঢলতে পারি
মুখ ফুটে তবু বলতে নারি॥
নবীন নীরদ-বরন শ্যাম
জানিতাম মোরা তখনই,
ওই করুণ সজল কাজল মেঘে
থাকে গো ভীষণ অশনি।
তুমি আগুন জ্বালিলে,
ওহে নিরদয়! বুকে কেন
আগুন জ্বালিলে।
বুকে আগুন জ্বালায়ে – চোখে
সলিল ঢালিলে!
তাহে চোখের জলে বুকের আগুন নেভে কি॥
কাঁদিসনে যমুনা নদী শুকাইয়া শোকে,
বাঁচিয়া রহিবি লো তুই শ্রীরাধার চোখে।
সেথা বইবি উজান,
তুই রাধার চোখে বইবি উজান,
তার দুই নয়নের দু-কূল ছেপে
বক্ষ ব্যেপে বইবি উজান!
শুনিবি দু-কূলে রোদন
শ্যাম শ্যাম নাম॥
Leave a Reply