কীর্তন
আমি কেন হেরিলাম নবঘনশ্যাম
কালারে কালো কালিন্দী-কূলে।
সে যে বাঁশরির তানে সকরুণ গানে
ডাকিল প্রেম-কদম্ব-মূলে।
তার সাগর-অতল ডাগর আঁখির কূলে
সে কী ঢেউ উঠিল দুলে॥
সখী সে কী সকরুণ আঁখি লো
ভয়- অনুরাগ-মাখামাখি লো,
তার অশ্রু-সজল আঁখি ছলছল
দূর মেঘপানে ডাকিল॥
কেন কলস ভরিতে গেনু যমুনা-তীরে,
মোর কলাসির সাথে গেল ভাসি লাজ-কুল-মান
আকুল নীরে।
কলসির জল মোর নয়নে ভরিয়া সই
আসিনু ফিরে॥
সখী লো, তোদের সে রাই নাই,
তোদের গোকুলের রাই গোকুলে নাই,
এ-কুলে নাই ও কুলে নাই।
গোকুলের রাই গোকুলে নাই।
সে যে হারাইয়া গেছে শ্যামের রূপে লো
নবীন নীরদে বিজলি-প্রায়।
সে রবি শশী সম ডুবিয়া গেছে লো
সুনীল রূপের গগন-গায়॥
হরি-চন্দন-পঙ্কে লো সখি
শীতল করে দে জ্বালা,
দুলায়ে দে গলে বল্লভ-রূপী
শ্যাম পল্লব-মালা!
নীল কমল আর অপরাজিতার
শেজ পেতে দে লো কোমল বিথার,
পেতে দে শয্যা পেতে দে,
নীল শয্যা পেতে দে পেতে দে!
মোর শ্যামের স্মৃতির নীল শিখী-পাখা,
চূড়া বেঁধে কেশে গেঁথে দে!
পরাইয়া দে লো সখী
অঙ্গে নীলাম্বরী,
জড়াইয়া কালো বরন
আমি যেন মরি॥
Leave a Reply