সুরা গ্বাশিয়া
শুরু করি শুভ নাম লয়ে আল্লার,
করুণা-নিধান যিনি কৃপা-পারাবার।
– আসিয়াছে নিকটে তোমার
বৃত্তান্ত কি আচ্ছন্নকারী ঘটনার?
বহু সে আনন হবে নত জ্যোতিঃহীন;
শ্রান্ত কর্ম-পরিক্লান্ত তাহারা সেদিন
প্রজ্জ্বলিত অগ্নিকুণ্ডে প্রবেশ করিয়া
ফুটন্ত উৎসের জল যাইবে পিইয়া।
বিষ কণ্টক শুধু পাইবে আহার,
করিবে না পুষ্ট দেহ, নিবৃত্তি ক্ষুধার।
খুশিতে হইবে বহু মুখ উজ্জ্বল,
হরষে লইবে তারা নিজ পুণ্যফল।
মহিমা-সুন্দর পাবে তাহারা বাগান,
শোনে না কেহই সেথা মিথ্যার ব্যাখ্যান।
সেথা চির বহমান উৎস সমুদয়,
সমুন্নত সিংহাসন সেইখানে রয়।
রাখা আছে পানপাত্র, শত উপাধান,
বিছানো মখমল শয্যা (আরাম-শয়ান)।
দেখে নাকি উট সব চেয়ে তারা সবে?
কীরূপে তাদের সৃষ্টি হইল, না ভাবে?
দেখে না বিনা স্তম্ভে আকাশ কেমনে
উচ্চে হয়েছে রাখা? পর্বতগণে
দেখে না কেমনে হল তাদের স্থাপন?
বিস্তারিত হল এ-ধরা সে কেমন?
তুমি উপদেষ্টা শুধু, উপদেশ দাও,
তুমি তো প্রহরী নহ, (পথ সে দেখাও)।
মানিবে না আদেশ যে, ফিরাইবে মুখ,
দিবেন আল্লাহ্ তারে কঠোর সে দুখ।
নিশ্চয় ফিরিতে হবে তারে মোর পাশে,
হিসাব-নিকাশ হবে আমারই সকাশে।
———–
সুরা গ্বাশিয়া
এই সুরা মক্কা শরিফে অবতীর্ণ হয়। ইহাতে ৬টি আয়াত, ৯৩টি শব্দ ও ৩৮৪টি অক্ষর আছে।
শানে-নজুল – মানুষ পরজীবনের কর্মফল ভোগ করিবে, আরবেরা ইহা বিশ্বাস করিত না। তাহারা বলিত, মানুষ একবার মরিয়া মাটি হইয়া গেলে পুনর্জীবন লাভ করিবে কী করিয়া? এই সুরায় মেঘমালার দৃষ্টান্ত দ্বারা বুঝানো হইয়াছে যে, আল্লার কুদ্রতে সব কিছু সম্ভব, অনন্ত শক্তিময় আল্লার পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়। তিনি মানুষকে পুনর্জীবন দান করিয়া এই জীবনের কর্মফল ভোগ করাইবেন। মানুষ এই জীবনে দুষ্কর্ম করিলে পরজীবনে তাহার সাজা পাইবে, আর এই জীবনে সৎকর্ম করিলে পরজীবনে তাহার পুরস্কার পাইবে। মানুষের কোনো কর্মই বৃথা হইবে না, ইহা বুঝাইবার জন্যই এই সুরা নাজেল হইয়াছে।
Leave a Reply