সুরা মাঊন
শুরু করি নামে সেই পবিত্র আল্লার
করুণা দয়ার যাঁর নাই শেষ পার।
তুমি কী দেখেছ, বলে ধর্ম মিথ্যা যেই?
পিতৃহীনে তাড়াইয়া দেয়, ব্যক্তি এই।
দরিদ্র কাঙালগণে অন্নদান তরে
এই লোক উৎসাহ দান নাহি করে।
যাবে ভণ্ড তপস্বীরা বিনাশ হইয়া
ভ্রান্ত যারা নিজেদের নামাজ লইয়া;
সৎকাজ করে যারা দেখাইতে লোক,
বাধা দেয় দান ধ্যানে, ধ্বংস তারা হোক!
————–
সুরা মাঊন
মক্কা শরিফে এই সুরা অবতীর্ণ হয়; ইহাতে ৭টি আয়াত, ২৫টি শব্দ ও ১১৫টি অক্ষর আছে।
শানে-নজুল – আবু জহল কোনো মুমূর্ষু ব্যক্তির সন্তানের তত্ত্বাবধানের ভার লইয়া উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর নিজেই বালকের পিতার ত্যাজ্য সম্পত্তি ভোগ করিতে থাকে, এবং বালকটিকে বিতাড়িত করিয়া দেয়। উক্ত বালক ক্ষুধার্ত ও বিবস্ত্র অবস্থায় হজরতের নিকট উপস্থিত হইয়া আবু জহলের অসদ্ব্যবহার ও অত্যাচার-কাহিনি প্রকাশ করে। হজরত আবু জহলের নিকট যাইয়া উহার প্রতিকারার্থে তাহাকে কেয়ামতের ভীতি প্রদর্শন করেন। আবু জহল কেয়ামতের প্রতি অসত্যারোপ করিতে থাকায় হজরত দুঃখিত মনে নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন।
আবু সুফিয়ান সম্মান লাভের ইচ্ছায় প্রতি সপ্তাহে দুইটি করিয়া উষ্ট্র জবেহ করিয়া সম্ভ্রান্ত কোরেশদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া খাওয়াইত। একদা জনৈক পিতৃহীন বালক আবু সুফিয়ানের বাড়িতে নিমন্ত্রণের দিন উপস্থিত হইয়া কিছু মাংস ভিক্ষা চাহিয়াছিল। উহাতে সে যষ্টির আঘাত করিয়া উক্ত বালককে বিতাড়িত করে; সেইজন্য এই সুরা নাজেল হয়।
(এমাম রাজী।)
কেহ কেহ বলেন– কেয়ামত অমান্যকারী পাপী আ-স কিংবা ধনশালী, অবাধ্য ও অহংকারী অলীদের সম্বন্ধে ইহা অবতীর্ণ হইয়াছিল।
শেষার্ধ আবদুল্লা-বেনে-ওবাইয়া নামক জনৈক কপটাচারীর সম্বন্ধে অবতীর্ণ হইয়াছিল বলিয়া ‘খাজেনে’ উল্লিখিত আছে।
পরন্তু ধার্মিক বলিয়া পরিচিত যে সকল ব্যক্তির ব্যবহারে অধর্ম প্রকাশ পায় তাহাদের লোক-দেখানো কপটতার উদ্দেশ্যেই এই সুরা নাজেল হইয়াছে।
Leave a Reply