১/
দুর্গতি নাশ করতে মাগো ধরার বুকে এলে
বিপদ সকল দেখলে তোরে যাবে মাগো পলে।।
মাতৃ চরণ ছায়া যে ঐ
নাচবে আজি শীর্ষ আলোয়
কালো মায়ের চরণালয়
আলোতে আজ জ্বলে।।
কালি মায়ের কালো চরণ
আজি মোরে করলো আপন
নাশ হইলো পাপ যে কখন
মাতৃ চরণ তলে।।
ভিরু শঙ্কর বাজে শঙ্খ
নিয়াছে সবে হাতে তুলে
পূজো পুষ্প,আরতি ডালা
মায়ের পূজোর বলে।।
২/
দে মা মোরে কী দিবি দে
মুক্তি নাকি শক্তি দিবি
নে মা এবার কী নিবি তুই
ভকতি নাকি স্তুতি নিবি।।
দেখছি জগৎ নাচচে আলোয়
তোর আসাতে উঠলো রবি
হৃদয় মন্দির খুললো তালা
তোর আসাতে পেলেম চাবি।।
বল মা মোরে রাঙ আঁচল তোর
কোথা গিয়ে উড়াবি
নাকি রে তোর পাগল সন্তান
অধমেদের ক্রন্দন দেখবি।।
ডাক মা এবার ডাক সবারে
নিয়ে এলো যারা দাবি
পূজোর তালা হস্তে সবার
সবার পূজো গ্রহণ করবি।।
৩/
মা কালি তোর কালো রুপে
দেখিলেম এ কেমন আলো
যে আলোতে জগৎ সাড়া
সকল আঁধার লোপ পাহিলো।।
কী যে আর বলি তোরে
মনে যে মানেনা রে
তোর ঐ রুপ নাগরে
শীর যে আমার ধাবিল রে।
দিয়াছ মোর দুখ ভাঙিয়া
উঠিলো হৃদয় রাঙিয়া
আজিকে অশান্ত মনে
শান্তি যে এলো।।
পূজিতে মা তোরে এবার
বরণডালা হাতে আমার
খুলেছি হৃদয়ের দ্বার
আয়রে উমা হৃদয় ঘরে।
যায় ওরে কাল পেরিয়া
দেব কাল তোরে সেবিয়া
দিব মা প্রাণ সঁপিয়া
মাগো তোর চরণ তলো।।
৪/
তোমার পূজার সময় হলো
দ্বার খুলো তাই
তোমার গানে সুর তুলেছি
ছাড়ার উপায় নাই– মা।।
তোমারি মায়ার ডালে
নাচে প্রাণ গানের তালে
ফুটিলো ফুল মরন ডালে
ছাড় কিছু নাই।।
বহিলো পাগলা হাওয়া
আর তো চলিবে না যাওয়া
ভূলিয়া ঐ স্বর্গমায়া
নাও হে পূজো ভূবনে ঠাঁই।।
আমারি যত আশা
গড়িলুম সোনার বাসা
স্বর্গ তো নয় অধিক খাসা
তুল্য তাহার নাই।।
৫/
আনো সখি পিড়ি
দাও ওগো পেতে
বসিবে মা হৃদমন্দিরে।।
মায়ের কোলে রহিবে খোকা
তবে এ ভালে সুখ আসে ফিরে।
মায়ের ও খোকা ডাকিয়া কহে
লও মা আমায় সু নজরে।।
জ্বালায়ে প্রদিব পাতিনু আসন
সে প্রদিব তব নাম সহকারে।
জ্বলিছে প্রদিব মোর গৃহেতে
শ্যামা মায়ের নামটি ধরে।।
জীবন প্রদিব নিবু নিবু মোর
দাও তুমি আলোয় ভরে।
সে আলোয় মাগো ভজিবো তোমায়
ক্ষমো মাতা ওগো বলি করজোড়ে।।
৬/
মম প্রদিব জ্বলছে মা,জ্বলছে ঐ জ্বলছে
তোমারে করিতে আহুতি
লভিতে তোমা প্রীতি
মিনতি,দাও কৃপা মোরে-( মা- মাগো)।।
তব মহিতে মম প্রাণ চাহে মা
তবু ডাকিনি তোমারে ওহে শ্যামা
মাগো,মোরে করে দাও ক্ষমা
লও হে তব বৎস্ করে।।
শ্রীচরণে মাতা শ্রদ্ধা নিবেদিত মোর
দাও খুলে মাতা আলোকিত দোর
করো হে কৃপা আঁধার করো দূর
আসিবো তোমা তরে বারে বারে।।
শ্যামা মা তোমার হেরি মায়া রুপ
পারিনে বসিয়া থাকিতে চুপ
মনে হয় চুমি চরণ কমলে
মা মা বলিয়া ডাকি তোমারে।।
৭/
মোরে করো করো করো প্রভূ ক্ষমা
ক্ষমাসুন্দরে দেখ,নিরাশেরে আশাতে রাখো
করো অধমেরে ক্ষমা।।
দিন কেটে যায়,কেটে যায় ক্ষণ
পুরাও আশা প্রভূ,পুরাও পণ
তুমিহীন কে পুরাবে আশা– তুমি নিরুপমা।।
তোমারে সেবিতে পারিনি আমি
কাঁদে হিয়া মোর দিবসযামি
এ জীবন ক্ষীণ তাই– চাই যে ক্ষমা।।
মোর ব্যথিত চক্ষু, কাঁদি রজনী দিবা
মোর আঁধার গৃহে তুমি প্রভা
মোরে দাও শান্তি,দাও শান্তি –করতে কাজ অনুক্রমা।।
৮/
মোর হৃদয় গহিনে প্রভূ পাতিনু আসন
বসো হৃদে স্ব-উল্লাসে– করো আগমন।।
হে জগতপতি
হে সুন্দর, দাও কিরণ
দাও আলো দাও আলো
ভরো ভূবন।।
তব আসার আশাতে
হবে আঁধার প্রক্ষালন
হৃদ নিভৃতে আসো প্রভূ
সজল দু নয়ন।।
আরো আশা,ভালোবাসা
হৃদ স্পন্দন
বিমূর্ত হৃদে গিয়েছে বিধে
আলোর বন্ধন।।
৯/
অধম বসিয়া আছি আশার তরে
বাঞ্চা তরণী লয়ে
এ তরণী ত্বরায় প্রভূ
যাবো কেমনে বেয়ে।।
প্রাণের উল্লাসে সবাই উদ্ভাসে
তব নাম নিয়ে
বাহি তরণী হে দয়াময়
আমি দিনহীনে।।
মোরে আশ্রয় দাও হে প্রভূ
লও নাও ত্বরিয়ে
বিমুখ হয়ো নে প্রভূ
ডাকি ডাকি অভাগিয়ে।।
এলো ঝঞ্ঝা, এলো ঘূর্ণি
যায় তাহা বয়ে
দাও শ্রান্তি ভেঙে ক্লান্তি
এ হৃদয়ে।।
১০/
প্রভূ কৃপা করো
মোর ভাঙা গৃহে
দাও আলো, দাও আলো আরো।।
দাও শান্তি, দাও শান্তি নেও কোলো
গৃহে গৃহে করুনা করো
দাও আলো।।
নাও পূজো পূজে পূজোরি নামে তোমারও
করি ভকতি চিরশান্তি দাও হে ঘরো ঘরো।।
নমো নমো গান গাহে সবে তুলে গানের সুরো
তোমার সুরে বহে অঙ্গলীলা, লাগিয়ে দিলে যা আরো।।
১১/
নমো নমো নমো গাহি গান
মোর হৃদয়ের গোপন গৃহে
প্রভূ,দাও ফরমান।।
পূজিনি তোমারে যাহিনি তব দ্বারে
গাহিনি তব গান
বাজাইনি বীণা, তুলিনি শঙ্খ
শান্ত করিনি তব প্রাণ।।
তুমি আসিয়াছ জানি নিভৃতে
তবু পারিনি তোমা সেবিতে
ঘুরিলেম শুধু আপনি স্বার্থে
দেইনি পূজোর স্নান।।
জগৎজুড়ে সেই শান্তির বারতা
শুধু তোমারি গান
গাইনি আমি হায়রে জীবন
খুলিলো না উদাস পরাণ।।
১২/
প্রভূ মোর কুঞ্জ তলে গড়িলে আসন
দেখিনি তোমারে দেখিনি
গড়েছ আসন প্রভূ কখন
সে হদিশ আমি পাই নি।।
আপন কুঞ্জ পানে
কখনো আমি চাহিয়া দেখিনি
অপরের কুঞ্জে দেখিতে চাহিলাম
সেবিতে কভূ পারিনি।।
অপরের তরে লহিয়া ডালা
পূজিতে তোমায় পারিনি
মোর মাঝে তুমি রহিছ নিভৃতে
খুঁজিতে আর যাই নি।।
মোর অশান্ত ভজনে শান্ত্বতা তুমি
নিলে তা তো বুঝিনি
সে গানের আকুল সুর কোথা
গেয়ে গান আর গাই নি।।
১৩/
মোর এ ভজন শুনিছো প্রভূ
দাঁড়ায়ে হৃদয় দ্বারে
রহিছো তুমি দেখি নাই আমি
রহিছো বিশ্বমাঝারে।।
তোমারে দেখিনি চিনিলেম না
আমি তোমারে
ক্ষমো সুন্দর ওহে সুন্দর
ক্ষমা করে দাও মোরে।।
তুমি রহিছো আসন পাতিয়া
এ বিশ্বমাঝারে
সে আসনে দাওনি কো ঠাঁই
অন্য কাহারে।।
তোমার আসন তোমার রবে
যেন তোমায় পূজে সবে
তোমারি গান গাইবে সবে
হাজার জনম ভরে।।
১৪/
আমার গান কে কাঁড়িলো গো
কাঁড়িয়া কাঁড়িয়া নিল
আমার সুরে কে মজিলো গো
প্রাণেতে তিয়াষ বাড়ালো।।
সে জনের গাইছি যে গান
বুঝিয়া জুড়ালো প্রান গো
তার পদভারে নাশে অসুর
আমার সুর যে বুঝিলো গো।।
আমার এই আকুল পরাণ
গাহে গান হৃদয় খুলে গো
আমি তারে সেবিবো
তবে তো পাব আলো গো।।
নমো নমো তার চরণে
আলোকময় সে ভূবনে গো
তাহারে ডাকি সদা
কে দেয় বাঁধা স্পর্ধা কাহার গো।।
১৫/
হিয়ার মাঝারে রাখিবো তোমারে
কহিব মনের কথা
মরমের অনল মিটিবে অবিচল
ভাঙিবে হৃদেয় ব্যাথা।।
দেখি না যারে স্বপন ঘোরে
ভাবি নাই জীবন বৃথা
দেখেছি তারে হিয়ার কোণে
তুমি সে,ভেবেছি একা।।
আশারি গৃহে বৃথা এতদিন
জ্বলিলো মরন চিতা
পুরিবে বাঞ্চা তোমারি পূজায়
নহে তাহা মিথ্যা।।
পিরিত রসে মজিলো হিয়া
মেলিনি নয়ন পাতা
জাগিলে তোমায় পাব না জানি
ভাবনা হইবে বৃথা।।
Leave a Reply