(০১)
ফাস্ট হবার প্রতিযোগীতা
মোঃ নাঈম মিয়া
হরেক রকম ডাকের মেলা বসে বিশ্বালয়ে
কার ডাক কে শুনতে পাবে বেলা অবসর লয়ে?
তাই এবার জাত প্রজাতির সবাই জড়ো হলো
ফাস্ট হওয়ার প্রতিযোগিতায় সবাই মেতে রইলো।
কাকে ডাকে কা কা করে বড্ড দারুন স্বাধে
ইচ্ছে কী আর সাড়বে নেকো মুখে ঘুমটো বেঁধে?
মুষলধারে বৃষ্টি হবে শুনবে রেওয়াজ সবে
তাহার পালা ভঙ্গ হলো সবাই ভেজে যাবে।
ভিজলে কী সে প্রতিযোগিতা হবে ষোলো আনা
সময়কে তো কাল হটিয়ে যায় না কভু কেনা।
মোরগ ডাকে কু- কু -রুক্কুর ডাকে আর হাঁস
জিতবে বলে পড়লো সেথায় সাত কবুতর লাশ ।
শেয়াল ডাকে হুক্কাহুয়া বিড়ালে ম্যাও ম্যাও
গরু ডাকে হাম্বা হাম্বা কুকুরের ঘেউ ঘেউ।
কোকিল ডাকে মধুর কন্ঠে সে বাসন্ত রানী
যাহার কন্ঠে পেছন হাটে কত মানব প্রাণী।
সাতটি ব্যাঙের পার্টি হলো ডাকতেছে ঘ্যাঁং ঘ্যাঁং
ঘোড়া কী রে ডাকতে জানে?তাই মেলে দেয় ঠ্যাঁং।
দোয়েল পাখি ডাকবে এবার সবাই হলো চুপ
কন্ঠে তাহার পড়ে গেল সাতটি খড়ের স্তুুপ।
বাঘে ডাকে হালুম হালুম সবাই ভয়ে সাড়া
সিংহ রাজা ডাক দিয়ে তাই করলো তাকে তাড়া।
অমন বেলায় প্যাঁচার ডাক লাগছিলো তো বেশ
ঝগড়া জুড়লো কন্ঠে তাহার কে করিবে শেষ?
তাইতো পন্ডিত শিয়াল এবার আরেকটি ডাক দেয়
আপন বুদ্ধির ভেড়াজালে যদি জিতে নেয় !!
বুঝলো তাহার সব চালাকি ও বনের সব গাছে
প্রকর গর্জনে তারা মেতে রইলো নাচে।
তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাওয়া এলো হেথায়
হো- হো করা রেওয়াজ যেন সবাই শুনতে পায়।
হাওয়ার শব্দ ভালোই ছিল নয়কো খারাপ তেমন
সবার মাঝে শীতে শীতে উঠে গেল কাপন।
ঝরণা জলে বইতে থাকে শুনে যেন সবে
একে একে তিনটি ডাক আসলো একই রূপে ।
গাছের হাওয়ার ঝরণার ডাক কন্ঠ হুবহু একই
কাহারও কান হইতে তাহা নয়কো দিল ফাঁকি।
সিংহ রাজায় বললো এবার অন্য কারো ডাক
বিচ্ছিরি সব কণ্ঠ এবার তোরা সবাই রাখ্!
মগ ডালেতে বকের বাসা ডাকতে করলো শুরু
গলা যে তোর নয়কো ভালা ওরে নাটের গুরু।
অমন গালি দিয়ে চড়ুই ডাকে কিচির মিচির
মিষ্টি অতি কন্ঠ তাহার কান হলো সব ধীর।
বাবুই পাখি ডাকলো আবার কন্ঠে দুটো মিল
বিচ্ছিরি এক কন্ঠ হেকে আসলো সেথায় চিল।
টুনটুনি আর ময়না বড়ই মজার পাখি ভাই
তাহাদেরও কন্ঠে যেন কান খুলিয়া যায় ।
ডাহুক শুধু নামের পাখি ডাক নহে তার ভালো
শুনবে যদি মধুর কন্ঠ কাকাতুয়ার কাছে চলো।
অমন বেলায় ভালুক এলো গর্জন করবে সে
কাকাতুয়া উঠলো ডেকে তাহার পিঠে বসে।
ভালুক তখন রেগে মেগে দিল বড্ড হাক
কাহারো নয় শুধু শুধুই কাকাতুয়ার প্রতি রাগ।
যাক গে বাবা রাগ যে তাহার পড়লো মাটিতে
তাইতো মাটি তলিয়ে গেলো কন্ঠ ধরিতে।
সবার কন্ঠ শুনতে শুনতে যাচ্ছে বেলা কেটে
কেউ কী ওদিক লক্ষ্য করে দেখেছে ও মোটে?
তাইতো হাতি কইতে কথা মুখের জল দেয় ফেলে
পড়ে তখন জলে ও তাই দিল কণ্ঠ তুলে।
এ যে দেখি না জানা এক কন্ঠ আসলো সেথায়
যার কথাটি কখনো না আসলো কারো মাথায়।
জিতবে বলে আপন কন্ঠে উঠল ডেকে বাজ
তাহার কন্ঠে রাগ করে তাই ডাকে মেঘরাজ।
মেঘরাজেও ডাকতে থাকে সবার করে ভয়
ভয় দেখিয়ে কেউ কখনো করলো কিবা জয় !
রেগে সবাই দেখে তখন প্রতিযোগিতার লাস্ট
সকল কণ্ঠ গুনে এবার দেখবে কে হয় ফাস্ট।
অমন বেলায় আসলো ভেড়া কণ্ঠ
ছাড়বে সে
তাইতো তাহার শুনতে কন্ঠ সবাই সেথায় বসে।
মাছরাঙা ও বল পাহিয়া আসলো কণ্ঠ দিতে
কন্ঠ না দিলেও তবে,পানকৌরি তার সাথে।
বাদুর তখন উড়ে উড়ে আসলো সেই সালিশে
ঝিঃ ঝিঃ পোকা লুকিয়ে সেথায় ঝোপ লাগানো বাঁশে।
হাজার হাজার কন্ঠ এলো একের পরে এক
কাহার কন্ঠ সেরা হলো সবাই তোরা দেখ।
নিজেই নিজের কন্ঠে সেরা ভাবল সেথায় সবাই
তাদের সবার কন্ঠ শুনে পুরস্কার দিতে কেউ নাই।
রচনাকাল-১৩ ই ডিসেম্বর ২০২০
চিড়াকান্দি আবাসিক এলাকা, হবিগঞ্জ
(০২)
কবিতা – মা
কবি- মোঃ নাঈম মিয়া
(০৩)
এ মোর মুনাজাত
মোঃ নাঈম মিয়া
একদা,
মোল্লা দিয়া পড়াইতেছিল আহমেদের বাড়ি
কত ওয়াজ মাহফিল করিলো একের পরপরি।
তাহাদিগ বাড়িতে নাকি অশুভন হাতছানি
বাড়ি করিবে পবিত্র করে লয়ে সৎ বাণী।
সবশেষে এলো এবার মুনাজাতের পালা
গরমে মোল্লা ঘামছেন বলে পাখায় বাতাস
দিচ্ছে সেই আহমেদের পোলা।
তাহার মাঝে আছে জ্ঞান, কবে কী বলিতে হয়
ন্যায় পথে চলিতে হইবে অন্যায়ে নয়।
মোল্লা কহিলো পোলাকে, হে খোঁকা
আমাকে নাহি ক আর পাইল দিতে হবে,
যাও এবার তুমি মুনাজাতে সামিল হইবে।
মুনাজাত পড়িলে তোমার হইবে কল্যাণ
সত্যের পথে দাও তুমি করে জীবনদান।
খোকা,
হুজুর কহিতে পারিবেন আমায় মুনাজাত কাহাকে বলে?
তবে এতটুকু জানিতে পারিবো সত্যের দ্বারগুলে।
আপনারে আমি দিতেছি আয়েশ ভালো লাগিতেছে
তাহলে কহেন মোর মুনাজাত কিসে।
এই বিশ্বে কত পাপ তাপ কত পাপী চাহে ক্ষমা
আমি পাপ কাজ করিতেছি নহে কী তাহার উপমা,
হস্ত তুলিলেই নাহি হয় মুনাজাত কখনো কোন কালে
হৃদ দেহ থাকিলে সত্য কাজ হবে মুনাজাত করিলে।
আমি নহে হস্ত তুলিলুম হুজুর পারিলুম নাহি এবার
এখন মোর শ্রেষ্ঠ কর্ম সেবা করা আপনার।
মোরে করিবেন ক্ষমো হুজুর হইলে অন্যায়
মনে মনে করি মুনাজাত হস্ত তুলিয়া নায়।
আপনি মুনাজাত আরম্ভ করুন হস্ত তুলিয়া
মোর মুনাজাত হবু মন সপেঁদ করিয়া।
মোল্লা কহিলেন;–
বাপু নহে আমি তোমায় জোড় করিবো
নহে জোড় করি তোমায় আমি মুনাজাত পড়াইবো।
কোথা হতে পেলে খোকা এত্ত ভালো বাণী
যাহা এখনো আমি কিছু নাহি জানি?
তবে, তুমি যাহা কহিয়াছ সত্য বটে বাপু হে
সু শিক্ষায় মস্ত তোমার চির উন্নত রবে।
রচনাকাল-০৭ ই নভেম্বর ২০১৮
(০৪)
ক্ষুব্ধ বাঙ্গালীর গান
শোনো আজ এক শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালীর কথা
হাজার বছরের বাঙ্গালী তিনি,
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালীর জাতীয় পিতা।
কে বলেছে মৃত তিনি নাই এ মোহনায়
তিনি হয়ে অম্লান-জেগে আছেন বাংলায়।
যার কন্ঠধ্বনিতে জেগেছিল সকলের মুক্তি
স্বাধীনতার জয়গানে উঠেছিল বাংলা মাতি।
চির শান্তিতে থাকতে বাঙ্গালী যুদ্ধের আহ্বান
দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
কোন সীমারে কাড়তে চাইলো মুজিবরের প্রাণ
সামনে এলে আজি তাহার দেব গর্দান।
যার জন্য জাগলো বাংলা – হয়নি তার ডাক বৃথা
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালীর জাতীয় পিতা।
মুজিব আহ্বান এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।
ঘরে ঘরে দুর্গ তোলার সেই আহ্বানে
নামে যুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙ্গালী অস্ত্র টেনে।
অবশেষ রক্তের বিনিময়ে এলো স্বাধীনতা
বাঙ্গালীদের কর্ণে ভাসে মুজিবরের কথা,
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালীর জাতির পিতা।
পনেরোই আগস্ট আসে সীমারের সেনা
মুজিবরকে মারতে তারা দ্বিধাবোধ করলো না,
মুজিব বেঁচে বাঙ্গালীদের প্রাণে তারা বুঝলো না।
এক মুজিবকে বাঁচতে যারা দিল না বাংলাদেশে
হাজার মুজিব ক্ষুব্ধ এবার জ্বলছে প্রতিশোধে
তাদের রক্ত ছিটিয়ে দেব রাজপথের দরবেশে।
রচনাকাল-১৩ ই আগস্ট ২০২১খ্রিষ্টাব্দ
গানপুর,মাঝহাটি
আবৃত্তি:-আহসান হাবিব
১১ সেপ্টেম্বর ২০২১খ্রিষ্টাব্দ
(৫)
মায়ের মতন নেয়না কোলে কেহ তুলে
খোদা বেজার হবে,মা কে কষ্ট দিলে।
মায়ের চরণ তলে মিলে সন্তানের জান্নাত
দিও নারে পাষাণ সন্তান মায়ের মনে আঘাত।
জন্মধাত্রী মায়ের সম নেই কেহ মোহনায়
মা হলো আলোকাম্বরী, লুটাও শীর তার চরণ ধূলায়।
কেউ হবেনা বিশ্বে আপন একমাত্র মা বিনে
নিজের প্রাণের বিনিময় যে বিশ্বে সন্তান আনে।
নিজের জীবন বাজি রেখে দশমাস দশ দিন
সন্তানেরে আগলে রাখে পেটে গর্ভাধীন।
এমনি করে হাজারো যন্ত্রণা সহ্য করে
সন্তান পালন করেন মা সোহাগ আদরে।
সন্তানেরে পাঠান মায়ে মসজিদে ইশকুলে
সত্য শিক্ষা পেতে হবে পাপ অনাচার ভূলে।
এভাবেই মা সন্তানেরে করেন লালন পালন
সঠিক শিক্ষার পায়চারি পায় বড় হবে যখন।
তবুও মায়ের ঋণ যায়না কভূ মুছে দেওয়া
ঋণী সন্তান মায়ের কাছে এই জগৎ জুড়িয়া।
কেউ জগতে পারেনি মার করতে ঋণের শোধ
মায়ের ঋণকে শোধ করিবে হয়নি কাহারো বোঁধ।
মায়ের পায়ের তলে সন্তানের জান্নাত মিলে
জীবন তোমার হইবে অসার মায়ের কথা না মানিলে।
মা নামটি অতি মধুর ডাকতে হবে মরন হওয়া পর্যন্ত
মা যে মমতাময়ী,মা শ্রদ্ধায়েণেষু, মা অনাদি অনন্ত।
মায়ের দেয়া জনম শিক্ষা ভূলে যায় যে সন্তান
সে চিনেনা কোথায় মানব,কোথায় আল্লাহ্- ভগবান।
মা ই একমাত্র যিনি সন্তানেরে জনম শিক্ষা দেন
মায়ের সাথে হয়না কভু সেই শিক্ষার লেনদেন।
নারী,সে মায়ের সম শ্রদ্ধা করো তারে তুমি সদা
মায়ের উপদেশ তাহা,কু কর্মে দেন বাঁধা।
মা মাত্র একটি অক্ষর দিয়ে দেয়া নাম
তবুও সেই নামের সাথে নেই তুলনা,আছে বহু দাম।
যদি কোনো সন্তান করে গিয়ে আবদার মায়েরই ধারে
সেই আবদার করেন পুরা মায়ে হাজারো কষ্ট করে।
মায়ের কী জাগেনা আবদার, বলতে কী নেই মুখ
বলেনা কভু মায়ে,সন্তানের সুখে খুঁজে নিজ সুখ।
করিও মায়েরে সেবা ওহে সন্তান নিজে বুঝধার হলে পরে
নইলে ত্বরিবে না গিয়ে মরণ পর অকূল কষ্টকর পারাবারে।
সুখের আবাস সদা রয় জেগে মায়ের আচল তলে
আহ্ কী যে লাগে আয়েশ সুখ শান্তি সেথায় গেলে।
এই বিশ্ব আছে কত জন জন কত কত কত মহাজন
কেহ নাহি হইবে আপন, মায়েরই মতন – মায়েরই মতন।
নেই এই বিশ্বে কেহ আর নিজের মায়ের উপমা
করিলে সন্তানে হাজারো ভূল করে দেয় যে ক্ষমা,
মা যে সত্যময়ী,মা যে এই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নিরুপমা।
হে সন্তান,চাও গিয়ে ক্ষমা মায়ের ধারে যদি করো কোনো ভূল
মা যে সততাময়ী,সরলমতি,বিদ্যায়ুণেষী, চাও তারই চরণের ধূল।
এই বিশ্বে রয়েছে কত পাপ তাপ আর কত পাপী ভরা
মা যে নহে পাপী,তিনি সত্য,তিনি সরলা,তিনি নূরে গড়া।
মা যে জননী মা যে বিশ্ব চির রমনী,
মায়ের চরণ তলে স্বর্গ মেলে সর্বদা আবহমানি
মায়ের রাঙ্গা চরণ তলে ডুবাও শীর বিনা বাঁধায় সরলে
তবুও পাবে খুঁজে তুমি এতটুকু হলেও আলোর খনি।
রচনাকাল:-৬ অক্টোম্বর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ
নিউ মুসলিম কোয়ার্টার,আ/ এ হবিগঞ্জ
(০৫)
কাব্য-প্রেম
মোঃ নাঈম মিয়া
কাব্য আমি লিখবো বলে
প্রতিক্ষাতে আছি,
কাব্য অনেক লিখার আশায়
কলম তুলেছি।
সেই কাব্য লিখবো আমি
প্রেমে গড়া যেটি,
কাব্য দ্বার ভরতে জগত
সদা ভেবে রটি।
রচি আমি কবিতা খুব
কাব্য লিখার আশায়,
সেই কাব্যে দেই ভরিয়ে
হরেক রকম ভাষায়।
যেই ভাষাতে বঙ্গভূমে
সবাই কথা বলে,
যেই ভাষাতে জুড়ায় হৃদয়
সকল মেয়ে ছেলে।
সেই ভাষাতে তৃষ্ণা মেটে
মেটে তাপিত প্রাণ,
প্রেমে প্রেমে মজলো আজি
কাব্য লিখার ঘ্রাণ।
রচনাকাল-১৭ ই আগস্ট ২০২১
উত্তর সাঙ্গর,বানিয়াচং
(০৬)
আশাহীন প্রেম
মোঃ নাঈম মিয়া
ভূলিয়াছো বলে মোর
নাই লাজ, নাই ভয়
হবে তাহা হিতকর
যাতে ভাব রস রয়।
প্রেম মোর ভাবময়
যদি হয় তাহা হীনা
প্রেমিকে তবে ঐ
প্রাণ নিয়ে বাঁচিবে না।
আশা ভালোবাসা দিয়ে
তবে প্রেম হয়,
কোনো আশা নাহি নিয়ে
প্রেম নাহি রয়।
প্রেম মোরে দেয় ব্যাথা
যে প্রেমে আশা নেই
বলে না সে কোনো কথা-
চেয়ে দেখি আমি সেই।
মোর ভূল মোর ভূল
যত প্রেম যত প্রেম,
তার মাঝে আছে মূল
মোর প্রিয় ঘনশ্যাম।
এই প্রেম আশাহীন
সেই প্রেম নয়,
জলহীন বাঁচে না মীন
যদি প্রেম সার্থক হয়।
রচনাকাল-০৪ ঠা আগস্ট ২০১৯
চান্দিনা,দেবিদ্বার,কুমিল্লা
(০৭)
প্রাক্তন প্রেম
মোঃ নাঈম মিয়া
সখি হে,কোন ভূলে আসিলে এই দ্বারে
বুঝি আজ নির্দয় মনে পড়িলো মোরে?
স্তব্ধ রাতিরে সখি,নিভৃতে আসিলে তুমি
মোরে তব প্রাক্তন প্রেমে মজালে পরে।
সখি,তব প্রেমে আবারো মজিনু আমি…….
গৃহে আসো হে- আর কত তুমি রবে দূরে।
মোর সেই প্রেম ফিরিলো তোমায় দেখি
প্রাক্তন প্রেম-হেরি তাকে জুড়ালো আঁখি।
সখি,আর নহে অভিমান আঁখি ঐ খুঁলো
সখি হে -আর বেলা মোর নেই যে বাকি,
তোমায় সোহাগ করিবার সময় এলো
মনে হয় তব পানে শুধু চাহি থাকি।
আর অভিমান,ভূঁই সহ্য নাহি হয়
রচিতে ঐ তোমা মোর মনে কভূ ক’য়।
প্রাণহীন তন্যশা মোর এ বিরল চিত্তে
তোমারি,সেই প্রাক্তন প্রেমে মেতে রয়,
খেলিবো প্রেম খেলা দুজন মোরা নিভৃতে
পিপাসী হৃদে কভূ শ্রান্ততা নাহি বয়।
প্রাক্তন প্রেম মোদের জাগো আজি রাতে
যাহার প্রতিক্ষায় মোরা দুজন মেতে।
শয়ানে রচিবো প্রেম,গাঁথিবো বসে মালা
দেব পাড়ি মোরা সেই প্রেম যমুনাতে।
আর নয় সখি,আজিকে শুভ এই বেলা
গাই প্রেম, কানাই শ্যাম,সাজি বাসরেতে।
(০৮)
প্রেম
মোঃ নাঈম মিয়া
এক পলকে দেখার পরে আসবে মনে প্রভাব
ধীরে ধীরে মন ভিতরে উঠবে প্রেমের ভাব।
ভালোবাসা স্বর্গ হতে আসে বলে আমি
তাইতো সবই ছেড়ে দিয়ে হলেম তাহার প্রেমি।
ভালো আমায় বাসবে না সে তাই যদি বা হয়
তবে কিসের ভালোবাসা,তবে কিসের জয়।
প্রেম খেলাতো নয়কো তেমন, অভিমানে ঠাসা
প্রেমেতে ত্যাগ,ভোগ হীনা সে আছে শুধু আশা।
গগন পানে আবাবিলে উড়ে যেমন সই
প্রেম ও তেমন ভাবের ছুটে তোলে যায় বাড়ই।।
বলতে পারো ভূয়া কথা প্রেম ভরা তো ছলে
যদি তাহা রয় অন্তরে মরাণান্তর হলে।
সাত জনমে পারি দিয়ে স্বর্গ জনম এসে
প্রেম তখনি হবে সার্থক, রুপ সাগরে ভেসে।
বিধিশাপে হয়না যে প্রেম পূণ্যেতে প্রেম ঘেরা
নতুন ছন্দে লিখে জীবন গড়বে বসুন্ধরা।
খেলার ছলে প্রেম ভাসিয়ে সখা প্রেমে সখি
কেউ ডুবে না মিছা প্রেমে, মিছে দেখাদেখি।
স্বর্গ হতে আসে প্রেম স্বর্গে চলে যায়
প্রেম যদি সে সখা সখি রিতে নিয়ে যায়।।
রচনাকাল-০৫ ই এপ্রিল ২০১৬
গানপুর,মাঝহাটি( লেখা দ্বিতীয় কবিতা)
(০৯)
ভাটি বাংলার প্রেম
মোঃ নাঈম মিয়া
আমি এই সোনার বাংলার সন্তান
যেখানে সবুজে সবুজে প্রকৃতি রাঙা,
যেখানে স্বাধীন সবাই, জাগানো নূতন প্রাণ
ডুমুরের গাছ-বটবৃক্ষ আমি তাদের চেনা।
এই দেশের সাথে আমার সাদৃশ্য আছে
আমি ভাটি বাংলার সন্তান
ঘুরে বেড়াই ভাটির গেরামের আনাচে কানাচে
“বিধ্বস্ত লোকের হতে সহেনা কোনো অপমান।”
কালসে ধলা বকের সারি বসে ঐ মগ ডালে
তারা আমায় চেনে,আমি ভাটি বাংলার সন্তান
চেনে আমায় বসন্তের কোকিলে
যে আমাকে কন্ঠ শুনিয়ে জুড়াতো তাপিত প্রাণ।
এই ভাটি বাংলার সাথে রয়েছে আমার প্রবল প্রেম
আমি তার বুকেই রচনা করি সাহিত্য, নিই তার তালেম।।
রচনাকাল-০২ রা ফেব্রুয়ারী ২০১৬
গানপুর, মাঝহাটি( লেখা প্রথম কবিতা)
১০/ ক্ষণিক
সুরুজ ডুবে ও উঠে দিবারাত্রির মিলন বেলায়
মানবে চলিয়া যাহে বেলা অবেলায়।।
রচনাকাল-০৯ ই মে ২০১৯
বানিয়াচং,পথেপ্রান্তে/ ভ্রমণে
১১/
সত্য প্রেম সত্য আশা
তবেই গড়ে ভালোবাসা,
যদি আপন চেনা হয়
জনজীবন সুখীময়।
রচনাকাল-২৩ শে জুন ২০১৯
গানপুর,মাঝহাটি
১২/ শিকর
বৃক্ষ মঞ্জরি খুব করে ফুৎকার
চেয়ে দেখ শীর কত উচ্চে আমার।
আমি তো গর্ব করিয়া বলিতে পারি
নহে নহে উপরে কিছু আমারি।
শিকরে মুচকি হাসে গৌরব করিলো মনে
আমারি খুঁটি আজ সুখ দেয় অন্যে
ধন্য হে হলেম আমি লজ্জা তাতে নাই
মোর তরে বড় আজ মঞ্জরি ভাই।
রচনাকাল-২৭ শে জুন ২০২০
গানপুর, মাঝহাটি
১৩/ সুখ
নিছক স্বপন টাকা
নাহি সুখ দেয়,
বেচা কেনার হাট বাজারে
কেবল তারে নেয়।
সুখের তরে নাই সে দেখি
খুলে না দিলের চোখ,
আপনি মাঝে মানবতা শুধু
আনে রে কেবল সুখ।
রচনাকাল-১১ ই অক্টোবর ২০১৯
মুরাদপুর উচ্চ বিদ্যালয়
১৪/ উল্ঠো ঢিল
দূরন্ত কিশোর বলে শুনো মিঞা ভাই
দেখিলে সাহসে মোর কোন অন্ত নাই
ঢিল মেরে খ সম তুলি উপড়ে
তবু কী সে নীচে নামিতে পারে?
মিঞা ভাই বলে তখন ইহা তব ভূল
ঢিল মেরে কভূ নাহি পাবে তার কূল।
ডানাহিন উড়িবে যত আপনি উপড়ে
নীচের দিকে তাহা ঢলিয়া পড়ে।
ঢিল তুমি দিলে ভায়া শ্রম তব বৃথা
আপনার উপড়ে তাহা পড়ে নীচতা।।
রচনাকাল-১৪ ই এপ্রিল ২০১৮
মুরাদপুর উচ্চ বিদ্যালয়
১৫/বাস্তব রুপ
কুকুরে ডাকিতে চাহে হুক্কা হুয়া বলে
পারে কী শিয়ালের মতন লেজ নিতে ঢলে?
যেমতি দিয়াছে বিধি রুপ তার তার
পারে না তুলিতে কেহ স্বীয় রুপ যার।
রচনাকাল-২২ শে সেপ্টেম্বর ২০২০
গানপুর, মাঝহাটি
১৬ / চেনা
বাহ্যিকতায় চোখ রাঙিয়ে কোনো কিছু যায় না দেখা
ভিতর গহিন স্বচ্ছ হলে জীবনটা হয় মধুমাখা।।
রচনাকাল -১৬ ই নভেম্বর ২০২১
পুরান মুন্সেফি,হবিগঞ্জ
১৭/ হীন পরিচয়
কুকুরের কামর হাটুর নীচে
উপরে নাহি উঠে
তাই বলে তো দুঃসাহসী
পেছন ফের না মোঠে।।
রচনাকাল-৩০ শে জুলাই ২০২১
গানপুর, মাঝহাটি
১৮/
ওরে ও মুর্খ করে দেখ তর্ক
জানিতে পারবি কিছু গুরুজন হতে
ভাঙ তবে ভয় কর ভয় জয়
মন যেন রয় সদা সততায় মেতে।।
রচনাকাল-১০ ই নভেম্বর ২০২২
মুরাদপুর উচ্চ বিদ্যালয়
১৯/
মিথ্যা,তুমি তো দারুন মজার মানুষ ভাই
যাচিয়া দেখি,তুমি বিহীন সত্য কোথাও নাই।
রচনাকাল-১৫ ই জুন ২০২২
গানপুর, মাঝহাটি
২০/
সত্যে পথ সত্যে রথ
সত্যে জীবন মুগ্ধময়
সত্য নিয়ে জীবন গড়লে
উঠবে আলোর দিগ্বিজয়।।
রচনাকাল-২৪ শে এপ্রিল ২০১৮
গানপুর, মাঝহাটি
Leave a Reply