কার ভাবে শ্যাম নদেয় এলো।
ও তার ব্রজের ভাবে কি অসুসার ছিল৷
গোলাকের ভাব ত্যজিয়ে সে ভাব
প্রভু ব্ৰজপুরে লয়েছিল যেহি ভাব
এবে নাহি সে ভাব, দেখি নতুন ভাব
এ ভাব বুঝিতে কঠিন হল
সত্য যুগে সঙ্গে কৌশকী ছিল
ত্রেতায় সঙ্গী সীতে লক্ষ্মী হল
এবে দ্বাপরে সঙ্গিনী রাধা রঙ্গিনী
কলির ভাবে তারা কোথায় র’লো।
কলিযুগের ভাব একি অসম ভাব
নাহি ব্রত পূজা, নাহি অন্য ভাব
ছিল দণ্ডী বেশ, কেবল দণ্ড-কমণ্ডলু
নিতাই আবার তাহা ভেঙ্গে দিল।
উহার ভাব জেনে ভাব নেওয়া হল দায়
জানি কখন কি ভাব উদয়
করলে তিনটি মিলে এক নদীয়ায়
লালন ভেবে দিশে নাহি পেলো৷।
————-
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১১৪; লালন-গীতিকা, পৃ. ২০৯
চার যুগের চার অবতার– গোলোকে বিষ্ণু, ত্রেতায় রামচন্দ্র, দ্বাপরে শ্রীকৃষ্ণ এবং কলিতে শ্রীচৈতন্য লালন শ্রীচৈতন্যকে গৌর রূপে কৃষ্ণকে দেখেছেন সত্য, তবে সেখানে শ্রীরাধাও বিদ্যমান আছেন। রাধা-কৃষ্ণের যুগলমূর্তি শ্রীচৈতন্য– এ ধারনা বৈষ্ণবের মতো লালনও পোষণ করতেন। বিষ্ণু-লক্ষ্মী, রাম-সীতা, কৃষ্ণ-রাধা– অবতার-অবতরীর কল্পনায় এর স্বাক্ষর আছে। গানটিতে একটি অতিরিক্ত স্তবক আছে। অন্ত্যমিলও সর্বত্র রক্ষিত হয় নি।
Leave a Reply