সামান্যে কি সে ধন পাবে।
দীনের অধীন হয়ে সাধিতে হবে।
সাধন-পথে কি না হল
বাদশার বাদশাই ছাড়িল
কুলবতীর কুল গেল
কালারে ভেবে।
কত কত মুনি-ঋষি
যুগ যুগান্তর বনবাসী
পাব বলে কাল-শশী
বসিয়ে তপে।
গুরুপদে কত জনা
বিনে মূল্যে হয়ে কেনা
করে গুরুর দাস্যপনা
সে ধনের লোভে।
চরণ-ধনের যার আশা
অন্য ধনের নাই লালসা
লালন ভেড়ের বুদ্ধিনাশা
দো-ভাসা ভবে।।
————
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১৮৪-৮৫; লালন-গীতিকা, পৃ. ২২-২৩
হারামণি, ১ম, ২য় ও ৭ম খণ্ডে গানটি সংকলিত হয়েছে। সব খণ্ডেই গানটি অসম্পূর্ণ ও বিকৃতভাবে সংকলিত হয়েছে। ১ম খত্রে গানটি এরূপ :
সামান্যে কি সে ধন পাবে।
দীনের অধীন হয়ে তারে, চরণ সাধিতে হবে।
ভজন পথে এহি হল।
কত বাদশার বাদশাই গেল
কত কুলপতি কুল খোয়াল
শুধু চরণের আশে।
কত কত যোগী ঋষি
তারা যোগে করে যোগ তপস্যি
অধীন লালন ভেঁড়ে কুল নাশি
দু-আশায় ফেরে।।- পৃ. ৫৬-৫৭
হারামণি, ২য় ও ৭ম খণ্ড গানটি আরও বিকৃত হয়েছে।– পৃ. ১৫২, পৃ. ১৬-১৭
‘বাংলার বাউল ও বাউল গানে’ গানটির ভাষা অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। সঞ্চারী স্তবক সম্পূর্ণ নতুন। পার্থক্য বুঝার জন্য এটি সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া হল :
ও রে সামান্যে কি সে ধন মিলে।
মিটে সকল আশা, সব পিপাসা
সে অমূল্য রতন পেলে।
যুগ যুগ ধরে যোগী ঋষি
হয়েছে সব বনবাসী
পাবো বলে ঐ চরণ-শশী
তারা বসেছে তরু-তলে।
ও রে গুরু-বল যে পেয়েছে
জ্ঞান-নয়ন তার খুলে গেছে
অমূল্য ধন তার মিলেছে
ভেসে আনন্দ-সলিলে।
তার অন্য ধনের নাই লালসা
পুরেছে তার মনের আশা
লালন ভেড়ো বুদ্ধিনাশা
নাশ হল সে মূলের ভুলে।।– পৃ. ৮৮-৮৯
‘বাউল কবি লালন শাহ’ গ্রন্থে নিম্নরূপ পাঠভেদ আছে :
অন্তরার ১ম চরণ– কত কত যোগী ন্যাসী
৩য়/৪র্থ চরণ–পাব বলে কাল শশী/বসেছে স্তবে।
আভোগ– গুরুপদে যার আশা
অন্য ধনে নাই লালসা
লালন ভেড়োর বুদ্ধিনাশা
মলো দো-আশা ভেবে।।– পৃ. ২৭০
Leave a Reply