রূপের ঘরে
অটল রূপ বিহারে
চেয়ে দেখ না তোরা।
ফণি-মণি জিনি
রূপের বাখানি
দুই রূপে আছে সেই রূপ হলকরা।
যেজন অনুরাগী হয়
রাগের দেশে যায়
রাগের তালা খুলে সেরূপ দেখতে পায়।
রাগেরি করণ
বিধি-বিস্মরণ
নিত্য লীলার উপর রাগ নেহারা।
ও সে অটল রূপ সাঁই
ভেবে দেখ তাই
সে রূপের কভু লীলা নিত্য নাই।
যেজন পঞ্চতত্ত্ব ভজে
লীলারূপে মজে
সেকি জানে অটল রূপ কি ধারা।
আছে রূপের দরজায়
শ্রীরূপ মহাশয়
রূপের তালা-ছোড়ান তার হাতে সদায়।
যেজন শ্রীরূপগত হবে
তালার ছোড়ান পাবে
অধীন লালন বলে, অধর ধরবে তারা।।
————
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ২২৭; লালন-গীতিকা, পৃ. ৯৩, ৩১৩; বাংলার বাউল ও বাউল গান, পৃ. ৮৩ ( উভয় গ্রন্থে শব্দগত সামান্য কথান্তর আছে।); বাউল কবি লালন শাহ, পৃ. ২৯২ (স্তবকের স্থান-বদল হয়েছে এবং শব্দগত কিছু কথান্তর আছে।) মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন বঙ্গবাণী, অগ্রহায়ণ ১৩৩৩ সংখ্যায় গানটি প্রকাশ করেন। একই গান হারামণি, ১ম খণ্ডেও প্রকাশ করেন। এখানে একটি স্তবকের স্থানান্তর হয়েছে। কিছু চরণে পাঠভেদ আছে। ‘সে রূপের কভু লীলা নিত্য নাই।’ স্থলে “নিত্য লীলা কভু সে রূপের নাই।” লেখা হয়েছে। ‘রাগেরি করণ’ স্থলে ‘মহা রাগেরই কারণ’ এবং ‘তালা-ছোড়ান’ স্থলে ‘তালাচাবি’ কথান্তর আছে।– হারামণি, ১ম খণ্ড, পৃ ৩৭-৩৮। এরূপ আঙ্গিকে লালনের রচিত কমই গান আছে। এখানে অন্য স্তবকের মতো ধুয়ার পঙক্তি ছয়। ছোট ছোট পঙক্তিতে অত্যমিল দিয়ে নাচের দোলা সৃষ্টি করা হয়েছে।
Leave a Reply