রাত পোহালে পাখটে বলে দেরে তাই।
তখন গুরু কার্য মাথায় থুয়ে কি করি রে কেমনে যাই।
সদায় বলে আত্মারাম
লও রে মুখে কৃষ্ণনাম
যাতে মুক্তি পাই।
সে নামে তো হয় না রত
খাব খাব রব সদায়।
এমন পাখি কে পোষে
খেতে চায় সাগর চুষে
আমি কিরূপে জোগাই।
আমার বুদ্ধি গেল, সাধ্যি গেল
সার হল রে পেটকো বাই।
আমি লালন লাল পড়া
পাখি সেও সেই আড়া
তার সবুরি কিছুই নাই।
তাইতে লালন বলে, পেট ভরলে
হয় কি আর গুরু গোঁসাই।।
————
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১৭৬-৭৭; লালন-গীতিকা, পৃ. ৩৯
‘বাউল কবি লালন শাহ’ গ্রন্থে শব্দে ও পংক্তিতে বেশ ওলট-পালট হয়েছে। এর পাঠটি এরূপ :
রাত পোহালে পাখটে বলে দেরে তাই
আমি গুরু কার্য মাথায় থুরে কি করি আর কমনে যাই।
এমন পাখী কে পোষে
খেতে চায় সাগর চুষে
পাখী পেট ভরিলে হয় আনন্দ
কি করবে গুরু গোসাঁই।
আমি বলি আত্মারাম
পাখী লও রে আল্লা নাম
পাখী কথাতে হয় না রত
খাব খাব রব সদাই।
আমি লালন লাল পড়া
পাখী আমার সেই আড়া
সবুরি কিছু নাই।
আমি বুদ্ধি শুদ্ধি সব হারায়ে
সারা হলাম পেটুক ভাই।।– পৃ. ৩১০
বস্তুত গানটিতে অনেকটা ফ্রি-স্টাইলে হস্তক্ষেপ হয়েছে। যুগের ও অঞ্চলের প্রভাবে ‘কৃষ্ণনাম’ স্থলে আল্লা নাম হয়েছে।
১. পাখটে <পাখিটি; আঞ্চলিক উচ্চারণে এরূপ হয়েছে।
Leave a Reply