ধর রে অধর চান্দে রে, অধরে অধর দিয়ে।
ক্ষিরোদ-মৈথনের ধারা
ধর রে রসিক নাগরা
যে রসেতে অধর ধরা।
দেখরে সচেতন হয়ে।
অরসিকের ভোলে ভুলে
মরিস নে ডুব নদীর জলে
কারণ বারির মধ্যস্থলে
ফুটেছে ফুল অচিন দলে
চাঁদ-চকোরা তাহে খেলে
প্রেম-বাণে প্রকাশিয়ে।
নিত্য ভেবে নিত্য থেকো
লীলের বশে যেও নাকো;
সে দেশেতে মহাপ্রলয়,
মায়েতে পুত্র ধরে খায়,
ভেবে বুঝে দেখ মনুরায়
সে দেশে তোর কাজ কি যেয়ে।
পঞ্চ বাণের ছিলে কেটে
প্রেম যাচো স্বরূপের হাটে।
সিরাজ সাঁই বলে রে লালন,
বৈদিক বাণে করিস নে রণ;
বাণ হারায়ে পশবি তখন।
রণ-খোলাতে(১) হুবড়ি খেয়ে।।
————
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১৬৯।
লালন-গীতিকায় অন্তরার ২য় চরণ “ডুবিসনে কূপ নদীর জলে”, সঞ্চারীর ৬ষ্ঠ চরণ “এমন দেশে কাজ কি যেয়ে” এবং আভোগের ৫ম চরণ “বাণ হারায়ে পড়বি তখন” রূপে লেখা হয়েছে! পৃ. ২৯-৩০;
বাংলার বাউল ও বাউল গানে অনুরূপ পাঠ আছে। লালন ও তার গানে সঞ্চারীর ১ম চরণে ‘নৃত্য’ স্থলে ‘অনিত্য’ এবং আভোগের শেষ চরণে ‘হুবড়ি’ স্থলে ‘হুমড়ি’ কথান্তর আছে।– পৃ. ৮৮। পাঠটি অধিক সংগত মনে হয়।
এই গানে স্তবক-বিন্যাসে নতুনত্ব আছে। ছয় পঙক্তির স্তবকের ছন্দ-রীতি হল : খ গগগ ক। ভনিতার রীতিটি হল : ক খখখ ক। এরূপ ছন্দে ও সুর-লয়ে লালনের দ্বিতীয় গান নেই।
১. রণ-খোলা– রণক্ষেত্র।
Leave a Reply