দেখ এ সংসার
ভোজবাজির প্রকার,
দেখতে দেখতে অমনি কেবা কোথা যায়।
মিছে এ ঘর-বাড়ি
মিছে দৌড়াদৌড়ি করি
কার মায়ায়।
কৃতিকর্মার কৃতি কে বুঝতে পারে
সে বা জীবকে লয় কোথা ধরে।
সে কথা আর শুধাব কারে
ও তার নিগূঢ় তত্ত্ব, অর্থ কে বলবে আমায়।
যে করে এই লীলে তারে চিনলাম না
আমি আমি বলি আমি কোন জনা।
মরি রে কি আজব কারখানা
এবার শুনে পড়ে কিছুই ঠাওর নাহি হয়।
ভয় ঘোচে না আমার দিবস-রজনী
কার সাথে কোন দেশে যাব না জানি।
সিরাজ সাই কয়, বিষম কার গণি
এবার পাগল হয় রে লালন, যে তাই জানতে চায়।।
————
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১৫১-৫২; লালন-গীতিকা, পৃ. ২৬৭-৬৮
কথান্তরঃ
দেখলাম এ সংসার
ভোজের বাজি প্রায়
দেখতে দেখতে তেমনি কেবা কোথায় যায়।
মিছে এ ঘর-বাড়ি,
মিছে টাকা-কড়ি
দৌড়াদৌড়ি করি কার মায়ায়।
কৃতি কর্মার কীর্তি কে বুঝতে পারে
সেবা কোথায় জীব, কে লয় কোথায় ধরে।
সে কথা আর আমি শুধাব কারে
ও তার নিগূঢ় তত্ত্বে মত্ত কে বলবে আমায়।
যে করে এই লীলা তারে তো দেখলাম না
আমি আমি বলি আমি আর কোন জনা।
মরি মরি কি এই আজব কারখানা
এবার গোলে পড়ে কিছুই ঠাওর নাহি হয়।
ভয় ঘোচে না আমার দিবস রজনী
কার সাথে কোন দোষে যাব রে না জানি।
সিরাজ সাঁই কয়, আজ বিষম ফেরে গনি।
পাগল হয়রে লালন, যতন জানতে চায়।।– মহাত্মা লালন ফকির, পৃ. ১০১-০২
কিছু বাড়তি শব্দ ও কথান্তর আছে, তবে সুর-কাঠামো ও ছন্দ-রীতি অভিন্ন। এ পাঠে মাত্রা ও লয়ে সমতা অধিক পরিলক্ষিত হয়। পাঠটি অধিক সংগত।
Leave a Reply