কোথা হে দয়াল কাণ্ডারী
এ ভব-তরঙ্গে আমার এসে
কিনারায় লাগাও তরী।
তুমি হে করুণাসিন্ধু
অধম জনের বন্ধু
দেও হে আমায় পদারবিন্দু।
যাতে তুফানে তরী তরিতে পারি।
সকলেই নিলে পারে।
আমা তো চেলে না ফিরে
লালন বলে, ইহাই ছিল।
দয়াল, আমি কি তোর এতই ভারি।।
————
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, পল্লী সঙ্গীতে ফকির লালন সা’, প্রবাসী, চৈত্র ১৩৩১
এতে একটি স্তবক নেই। মনসুরউদ্দীন সম্পাদিত ‘হারামণি’ ৭ ম খণ্ডে গানটি এভাবে সংকলিত হয়েছে:
এসো রে পাগল কাণ্ডারী
যাতে তুফান তরিতে পারি।
তুমি তো দয়াল বন্ধু
দেও হে তোমার চরণ-সিন্ধু
ও বেয়ে কিনারায় লাগাই তরী।
পাপী যদি না তরাবে
অধম তারণ নাম কে লবে
পাপীর দয়া এই ভবে।
নামের ভ্রম যাবে তোমারি।
ডুবাও ভাসাও হাতটি তোমার
এ ভবেতে কেউ নাই আমার
লালন বলে, দোহাই তোমার
একবার চরণে ঠাই দেও হরি৷– পৃ. ৩৯২
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ রচিত এবং লালন স্বারকগ্রন্থে প্রকাশিত ‘লালন শাহের কাব্যে আত্মনিবেদনের সুর’ শীর্ষক প্রবন্ধে গানটি এভাবে আছে :
কোথায় হে দয়াল কাণ্ডারী।
এ ভব-তরঙ্গে আমার দয়াল
দাও দাও তোমার চরণ-তরী।
যত করি অপরাধ
তত ক্ষমা দাও হে নাথ
পতিতপাবন নাম ধরেছে
এসে কিনারে লাগাও তরী।
তুমি হে করুণাসিন্ধু
অধম জনার বন্ধু
দাও হে তোমার পদারবিন্দু
যাতে তুফান তরিতে পার।
পাপী যদি না তরাবে
পতিতপাবন নাম কে লবে
জীবের ভাগ্যে আর কি হবে
যাবে নামের মরম তোমারি।
ডুবাও ভাসাও হাত তোমার
এ জগতে কেউ নাই আমার
ফকীর লালন বলে, দোহাই তোমার
এসে চরণে স্থান দাও হে হরি৷– পৃ. ৫৯-৬০
এখানে “কোথা রইলে হে ও দয়াল কাণ্ডারী” গানের একটি স্তবক যুক্ত হয়েছে, যা প্রক্ষিপ্ত। “কোথা রইলে হে ও দয়াল কাণ্ডারী” ও “কোথা হে দয়াল কাণ্ডারী” গান দুটির ভাব, ভাষা ও ছন্দের মিল থাকায় এরূপ মিশ্রণ ঘটেছে।
Leave a Reply