কেনে কাজের মানুষ ডাকছ সোর করে।
ক্ষ্যাপা তুই যেখানে সেও সেখানে,
খুঁজে বেড়াও কারে রে।
বিজলি চটকের প্রায়
থেকে থেকে ঝলক দেয়
রঙ-মহল ঘরে।
তার পাশাপাশি অহর্নিশি থেকে
দিশা হয় না রে।
হাতের কাছে যারে পাও
ঢাকা দিল্লী ভূঁড়িতে যাও
কোন অনুসারে।
এমন কি বুদ্ধিমান তুই
এ সংসারে রে।
আছে ঘরের মাঝে ঘরখানা
ঢোঁড় রে আগে সেইখানা
কে বিরাজ করে।
সিরাজ সাঁই কয়, দেখরে লালন
সে কি রূপ, তুই কি রূপ রে।।
————
সরলাদেবী, ‘লালন ফকির ও গগন’, ভারতী, ভাদ্র ১৩০২
‘লালন-গীতিকা’য় শব্দগত এরূপ কথান্তর আছে :
ধুয়ার ১ম চরণ সোর স্থলে জোর
২য় চরণ ক্ষ্যাপা স্থলে আছিস
অন্তরার ১ম চরণ প্রায় স্থলে ন্যায়
৪র্থ চরণ পাশাপাশি অহর্নিশি স্থলে অহর্নিশি পাশাপাশি
হয় নারে স্থলে হয় মোরে
সঞ্চারীর ৪র্থ চরণ বুদ্ধিমান স্থলে বুদ্ধিহানি হলি
এ ছাড়াও আভোগ স্তবকটি এভাবে সংকলিত হয়েছে :
ঘরের মাঝে ঘরখানা
খুঁজে দেখ এইখানে
কে বিরাজ করে।
সিরাজ সাঁই কয়, দেখ রে লালন
তুই কি রূপ, সে কি রূপ রে।।– পৃ. ৫-৬
‘হারামণি’ ৫ম ও ৭ম খণ্ডে পাঠভেদসহ গানটি সংকলিত হয়েছে। কোন কোন পংক্তি বিকৃত আকারে সংগৃহীত হয়েছে। গানটি এখানে তুলে দেওয়া হল :
কেন কাছের মানুষ ডাকছ সসার করে।
তুই যেখানে সেও সেখানে,
তালাস করিব কারে রে।
হাতের কাছে যারে পাও
ঢাকা দিল্লী খুঁজে লও
কোন অনুসারে।
তার অহর্নিশি কাছাকাছি
দিশে কি তোর হয় নারে।
বিজলি চটকের ন্যায়
থেকে থেকে ঝলক দেয়
সেই রঙ-মহল ঘরে।
তুই কি বুদ্ধিহত, মন
তোমার সাথে রে।
ঘরের মধ্যে ঘরখানা
খুঁজে দেখ মন এইখানা
ঘরে কে বিরাজ করে।
সিরাজ সাঁই কয়, শোন রে লালন
তুই কি রে, সে কি রূপ রে।– ৫ম খণ্ড, পৃ. ২৭-২৮
Leave a Reply