এলাহি আলামিন আল্লা বাদশাহ আলমপানা তুমি।
ডোবায়ে ভাসাতে পারো
ভাসায়ে কিনারে দাও কারো
যা কর সে ইহাও তোমারো
তাইতে তোমায় ডাকি আমি৷
নুহু নামে সে এক নবীরে
ভাসালে বিষম পাথারে।
আবার তারে মেহের করে
আপনি লাগালে কিনারে।
জাহের আছে ত্রি-সংসারে
আমায় দয়া কর স্বামী।
নিজাম নামে বাটপার সে তো
পাপেতে ডুবিয়ে রইতো।
তার মনে সুমতি দিলে
কুমতি তার গেল চলে
আউলে নাম খাতায় লেখিলে
জানা গেল এর হমি।
নবী না মানিল যারা
মুর্তাহেদ১ কাফের তারা।
সেই মুর্তাহেদ দায়মাল২ হবে
বিনা হিসাবে দোজখে যাবে
আবার তারে খালাস দিবে
লালন কয়, মোর কি হয় জানি৷।
————
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১৩২-৩৩; লালন-গীতিকা, পৃ. ২৭৭
কথান্তর : আভোগ– নবী নাম মানিল যারা
নেহায়েৎ কাফের তারা
সেই কাফের দায়মাল হবে
বিনা হিসাবে দোজাকে যাবে
আবার তারে খালাস দেবে
জানা গেল এর হমি।।
ভনিতা– ফকির লালন কয়, মোর কি হয়
জানো তুমি।।– বাংলার বাউল ও বাউল গান, পৃ. ১৯
১. মুর্তাহেদ– ধর্মদ্রোহী। উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সংগ্রহে ‘নেহায়েৎ’ শব্দ আছে। এটি সঠিক নয়। ২. দায়মাল-স্থায়ী।
গানটিতে সুফি ভাবধারার কথা আছে। এ কারণে আরবি-ফারসি শব্দের আধিক্য ঘটেছে। অন্তরা, সঞ্চারী ও আভোগে অতিরিক্ত চরণ দ্বারা আবেগের বিস্তার ঘটানো হয়েছে। লালনের গানে এরূপ প্রলম্বিত স্তবক খুব কমই আছে।
Leave a Reply