আমার এ ঘরখানায় কে বিরাজ
করে।
আমি জনম-ভরে একদিনও দেখলাম না তারে।
নড়েচড়ে ঈশাণ কোণে
দেখতে পাইনে দু-নয়নে;
হাটের কাছে ঘর১
ভবের হাট-বাজার
আমায় কেউ দিল না একটা নির্ণয় করে।
সবে বলে প্রাণ-পাখি২
শুনে চুপে চুপে থাকি
(ও সে) জল কি হুতাসন
ক্ষিতি কি পবন
আমি ধরতে গেলে পাইনে তারে।
আপন ঘরের
খবর হয় না।
বাঞ্ছা কর মন পরকে চেনা
ফকির লালন বলে, পর
বলতে পরমেশ্বর৩
(ও সে) কেমন রূপ আমি কোন রূপে
রে।।৪
————
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, ‘পল্লীসঙ্গীতে ভক্ত কবি ফকির লালন সা’, প্রবাসী, চৈত্র ১৩৩১; লালন গীতিকা, পৃ. ৫৪
কথান্তর : ১. হাতের কাছে ঘর
২. সবে কয় সে প্রাণ-পাখি
৩. পর কি পরমেশ্বর
৪. সে কেমন রূপ, আমি কি রূপ ওরে।
বাংলার বাউল ও বাউল গান, পৃ. ৩৯
‘হারামণি’ ১ম, ২য় ও ৪র্থ খণ্ডে গানটি সংকলিত হয়েছে। সর্বত্রই পাঠভেদ আছে। ২য় খণ্ডের পাঠটি বিকৃত। পাঠকের অবগতির জন্য তা তুলে দেওয়া হল :
আমার এই ঘরখানায় কে বিরাজ
করে।
আমি দুই নয়নে একদিন তারে
দেখলাম নারে৷
নড়েচড়ে
ঈশাণ কোণে।
আমি তারে দেখতে পাই না
দু নয়নে
ঐ দেখ ঘরের পূর্ব কোণে কে রয়েছে৷
ছয় লতিফা বল যারে
ঐ দেখ শ্রীমণ্ডলাতে ঘুড়ি ঘুরে
ঐ ঘরের ছয়ে দিয়ে ভাগ,
দশ করা তার সার
ঐ দেখ সাড়ে চব্বিশ বন্ধে ঐ ঘর ঠিক রয়েছে।
আপনার
ঘরের খবর হয় না।
বাঞ্ছা করি পরকে চেনা
ও সে পর কি পরমেশ্বর
কথা বলতে
হয় তোমার
আমায় কেউ বলে না একদিন নির্ণয় করে।।– পৃ. ৬১
এতে একটি অতিরিক্ত স্তবক আছে। স্তবকটি প্রক্ষিপ্ত। অন্য স্তবকের চরণ-বিন্যাস ও ছন্দরীতিতে মিল নেই। এরূপ পাঠ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
Leave a Reply