শ্ৰীশচন্দ্ৰ ঘোষ (১৮৮৭ — ২-৫-১৯৪১) সুবলদহ-রায়না, বর্ধমান। বিরাজকৃষ্ণ। চন্দননগরে পিতৃব্য বামাচরণের কাছে প্রতিপালিত হন। ড়ুপ্লে স্কুলে পড়ার সময় অধ্যক্ষ চারুচন্দ্র রায়ের সান্নিধ্যে গভীরভাবে স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে ও পরে বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অংশ গ্ৰহণ করেন। ১৯০৫ খ্রী. এন্ট্রান্স পাশ করে অর্থাভাবে কলেজের পড়া ছেড়ে ‘হিতবাদী’ পত্রিকায় সাময়িকভাবে কাজ নেন। সেখানে সখারাম গণেশ দেউস্করের স্নেহলাভ করেন। বিপ্লবী রাসবিহারী বসু তাঁর আত্মীয়, প্রতিবেশী ও অভিন্ন হৃদয় বন্ধু ছিলেন। অগ্নিযুগে বহু দুঃসাহসিক কর্ম সম্পাদন করেছেন। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য-আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে কানাইলাল দত্তকে রিভলবার পৌঁছে দেওয়া (নরেন গোস্বামীকে হত্যার জন্য), রাসবিহারী বসু, মতিলাল রায়, অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও অন্যান্য বিপ্লবীদের মধ্যে সর্বভারতীয় কর্মসংহতি ও যোগসূত্র স্থাপন করা, ডেনহাম হত্যা প্রচেষ্টা, রডা কোম্পানীর লুষ্ঠিত মশার পিস্তল ও কার্তুজ রক্ষণাবেক্ষণ ও বিপ্লবকেন্দ্রে তা ছড়িয়ে দেওয়া, ১৯১০ খ্রী. থেকে অরবিন্দ ঘোষ থেকে শুরু করে ১৯৩৩ খ্রী. দীনেশ মজুমদার পর্যন্ত বহু বহিরাগত বিপ্লবীর চন্দননগরে আত্মগোপনের ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন বৈপ্লবিক দলের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সংগ্ৰাম তীক্ষ্ণ করে তোলার সাধনা ইত্যাদি। রাসবিহারী বসু জাপানে গিয়েও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। ১৯১৫ খ্রী. প্রকাশ্যে পারিবারিক কাজে চন্দননগরের বাইরে যাবার সময়ে ‘ইনগ্রেস টু ইন্ডিয়া অ্যাক্ট’-এ ইংরেজ পুলিসের হাতে বন্দী হয়ে পাঁচ বছর আটক থাকেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ‘রয়্যাল ক্লিমেন্সি’ ঘোষিত হলে তিনি কারামুক্ত হন এবং মতিলাল রায় প্রতিষ্ঠিত ‘প্রবর্তক’ আশ্রমে গঠনমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। মতিলাল রায় বিপ্লবপস্থা পরিহার করে পূর্বসংগৃহীত অস্ত্ৰাদি নষ্ট করায় তিনি ‘প্রবর্তক’ আশ্রম ত্যাগ করে ফটকগোড়ায় বেনোয়ারীলাল সাহার বাড়িতে একটি কর্মকেন্দ্ৰ স্থাপন করেন। নানা মানসিক আঘাতে ও অর্থাভাবে বিপর্যন্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত আফিং খেয়ে আত্মহত্যা করেন। রচিত পুস্তিকা : ‘শিক্ষাগুরু প্রসঙ্গে’।
পূর্ববর্তী:
« শ্ৰীশচন্দ্র সর্বাধিকারী, রায়বাহাদুর
« শ্ৰীশচন্দ্র সর্বাধিকারী, রায়বাহাদুর
পরবর্তী:
শ্ৰীশচন্দ্ৰ চৌধুরী »
শ্ৰীশচন্দ্ৰ চৌধুরী »
Leave a Reply